তৈরি পোশাক খাতের পর এবার চট্টগ্রাম বন্দরে আটকে থাকা সব আমদানি চালানের জন্য সাত দিন বন্দরভাড়ায় ছাড় দিয়েছে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়। ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন বাংলাদেশ শিল্প ও বণিক সমিতি ফেডারেশনের (এফবিসিসিআই) আবেদনের পর আজ বুধবার মন্ত্রণালয় প্রজ্ঞাপন জারি করে এই ছাড় প্রদানের ঘোষণা দেয়।
কোটা সংস্কার আন্দোলনের প্রভাবে গত ১৮ জুলাই রাত থেকে সারা দেশে ইন্টারনেট-সেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়। আজকাল আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রমগুলো যেহেতু অনলাইনে সম্পন্ন করা হয়, সেহেতু ইন্টারনেট সংযোগ বন্ধ করার কারণে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রমও স্থবির হয়ে যায়। ফলে চট্টগ্রাম বন্দরে প্রচুর আমদানি চালান আটকা পড়ে। আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম স্বাভাবিক হতে সময় লাগে অন্তত এক সপ্তাহ।
এ পরিস্থিতিতে গতকাল মঙ্গলবার শুধু তৈরি পোশাক খাতের আমদানি চালানে এক সপ্তাহ ছাড় ঘোষণা করা হয়। একদিনের মাথায় আজ বুধবার অন্য সব খাতের আমদানি চালানেও একইভাবে ছাড় দেওয়া হলো। তবে সরকারি মাশুলে ছাড় দেওয়া হলেও বেসরকারি খাতে কনটেইনার পরিবহনকারী মালিকপক্ষ যে ভাড়া আদায় করে, তাতে কিন্তু ছাড় দেওয়া হয়নি।
জানতে চাইলে এফবিসিসিআই সভাপতি মাহবুবুল আলম প্রথম আলোকে বলেন, ‘উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সব আমদানিকারক সময়মতো পণ্য খালাস করতে পারেননি। সরকারের কাছে বিষয়টি তুলে ধরার পর বন্দরে কনটেইনার রাখার ভাড়ায় ছাড় দেওয়া হয়েছে। বেসরকারি খাতের শিপিং কোম্পানিগুলোও যাতে কনটেইনার রাখার ভাড়ায় ব্যবসায়ীদের ছাড় দেয়, সে জন্য তাঁদের প্রতি আমরা আহ্বান জানিয়েছি। তারা বিষয়টি নিয়ে কাজ করছে বলে আমাদের জানিয়েছে।’
আজ বুধবার নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, গত ১৬ জুলাই থেকে আগামী ৫ আগস্ট পর্যন্ত যেসব আমদানি চালান চট্টগ্রাম বন্দরে জাহাজ থেকে নামানো হবে, সেসব পণ্যেই কেবল এই ছাড় পাওয়া যাবে। তবে ছাড় পাওয়ার জন্য ১৪ আগস্টের মধ্যে পণ্যের চালান বন্দর থেকে খালাস করে নিতে হবে।
সাধারণত জাহাজ থেকে পণ্য নামানোর চার দিন পর্যন্ত বিনা ভাড়ায় বন্দরে পণ্য রাখা যায়। নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের চিঠি অনুযায়ী এখন সর্বোচ্চ সাত দিনের জন্য ছাড় পাওয়া যাবে। অর্থাৎ সব মিলিয়ে ১১ দিনের জন্য ছাড় পাচ্ছেন আমদানিকারকেরা।
বন্দরের ট্যারিফ অনুযায়ী, চার দিন পর বন্দরভাড়া শুরু হয়। প্রতিটি ২০ ফুট লম্বা কনটেইনারের ক্ষেত্রে প্রথম সাত দিনের জন্য প্রতিদিন ৬ ডলার, এরপর ১১ দিনের জন্য প্রতিদিন ১২ ডলার এবং পরবর্তী সময়ের জন্য প্রতিদিন ২৪ ডলার করে ভাড়া গুনতে হয়।
চট্টগ্রাম বন্দরের কর্মকর্তারা প্রথম আলোকে জানান, এই বন্দরে কনটেইনারভাড়া বাবদ প্রতিদিন গড়ে দুই কোটি টাকা আয় হয়। ছাড় দেওয়ার কারণে এখন ব্যবসায়ীরা অন্তত ১০-১৪ কোটি টাকার সুবিধা পাবেন।