ছয় বছর আগের কথা। স্প্যানিশ কিংবদন্তি ইকার ক্যাসিয়াস তখন খেলেন পর্তুগিজ ক্লাব এফসি পোর্তোর হয়ে।১৮ বছরের এক তরুণ গোলরক্ষককে দেখে চোখ আটকে তার। এতোটাই মুগ্ধ হন যে, সবখানে বলে বেড়াতে থাকেন, ‘তোমরা একজন স্টার পাচ্ছ। ‘
সেদিন তার কথায় যারা পাত্তা দেননি, তারাও হয়তো এখন নিজেদের ভুল শুধরে নিয়েছে। গতকালের ম্যাচের পর দিয়োগো কস্তার প্রতিভা নিয়ে সন্দেহ করা যায় না। যার জাদুকরী হাতের ছোঁয়ায় স্লোভেনিয়াকে টাইব্রেকারে ৩-০ গোলে হারিয়ে ইউরোর কোয়ার্টার ফাইনালে নাম লেখায় পর্তুগাল।
ইউরোর ইতিহাসে কোনো গোলকিপারই টাইব্রেকারে তিনটি শট ঠেকাতে পারেননি। কস্তা তা করে দেখিয়েছেন। এর আগে ম্যাচের অতিরিক্ত সময়ে পর্তুগালকে বাঁচিয়েছেন ‘নিশ্চিত’ গোলের হাত থেকে। তাই ম্যাচসেরা পুরস্কারটা তার হাতেই ওঠে।
ম্যাচ শেষে তিনি বলেন, ‘সম্ভবত আমার জীবনের সেরা ম্যাচ এটি। এমন এক ম্যাচ যেখানে সম্ভবত দলের সবচেয়ে বেশি কাজে লেগেছে। ‘
গোলশূন্য ড্রয়ের পর টাইব্রেকারে প্রথমে ইয়োসেপ আইলিসিচের শট বাঁ দিকে ঝাঁপিয়ে পড়ে ঠেকান কস্তা। পরে ইউর বাল্কোভেচ ও বেনজামিন ভারবিচের শট ঠেকাতে ডান দিকে ঝাঁপ দেন তিনি। পেনাল্টি ঠেকাতে জুড়ি নেই তার। এখন পর্যন্ত ৪২ পেনাল্টির ১৩টিই ফিরিয়ে দিয়েছেন এই গোলরক্ষক। দুই বছর আগে টাইব্রেকার ছাড়াই টান তিন ম্যাচে পেনাল্টি ঠেকিয়ে গড়েন অনন্য নজির।
টাইব্রেকারে অসাধারণ দৃঢ়তা দেখানো নিয়ে কস্তা বলেন, ‘অবশ্যই শুটারদের নিয়ে কাটাছেঁড়া করি, কিন্তু খেলোয়াড়রা তাদের মন বদলায় এবং শুট করার দিক বদলায়। আমি কেবল নিজের সাহস নিয়ে ঝাঁপ দিয়েছি। আমাকে সেটাই করতে হতো বলে আমি মনে করেছি। দলকে সাহায্য করতে পেরে আমি খুবই খুশি এবং রোমাঞ্চিত। ‘
ম্যাচের একদম শেষ সময়ে গোল প্রায় পেয়েই গিয়েছিল স্লোভেনিয়া। পাল্টা আক্রমণে গিয়ে ফাঁকায় বল পেয়ে যান দলটির ফরোয়ার্ড বেঞ্জামিন সেস্কো। কিন্তু সামনে শুধু কস্তার অসাধারণ সেভের কারণে হতাশই হতে হয় তাকে।
ওয়ান-অন-ওয়ান সেভটি নিয়ে কস্তা বলেন, ‘ভেবেছিলাম আমাকে তা ঠেকাতে হবে। এর জন্য নিজের সেরাটা দিয়ে চেষ্টা করব। আমি তার (সেস্কো) বডি ল্যাঙ্গুয়েজ পড়ার চেষ্টা করেছি। সৌভাগ্যক্রমে দলকে আমি সহায়তা করতে পেরেছি। যা গুরুত্বপূর্ণ ছিল। ‘