উচ্চবংশীয় গরু-ছাগলের সঙ্গে উচ্চবংশীয় লুটপাটকারীদের দেশবাসী দেখতে পাচ্ছেন বলে মন্তব্য করেছে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি)।
বুধবার (২৬ জুন) বিকেলে পুরানা পল্টন মোড়ে আয়োজিত সমাবেশে সিপিবি’র ‘দুর্নীতি হটাও, দেশ বাঁচাও’ এ স্লোগান শীর্ষক বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে এ কথা বলা হয়।
কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে বিকেলে ঢাকার পুরানা পল্টন মোড়ে আয়োজিত সমাবেশে সিপিবির সাধারণ সম্পাদক ও বাম গণতান্ত্রিক জোটের অন্যতম নেতা রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেছেন, দেশের অবস্থা এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, উচ্চবংশীয় গরু-ছাগলের সঙ্গে উচ্চবংশীয় লুটপাটকারীদের দেখা পাচ্ছেন দেশবাসী।
তিনি আরও বলেন, সমাজের “উচ্চ বংশীয়দের” সঙ্গে যোগাযোগের মধ্যদিয়ে এবং তাদের ছত্রছায়াতেই এ অবাধ লুটপাটের ক্ষেত্র তৈরি হয়েছে, অবাধ লুটপাট চলছে। দুর্বৃত্তায়িত অর্থনীতি ও রাজনীতি না ভাঙতে পারলে দুর্নীতির এ ধারা অব্যাহত থাকবে। মাঝেমধ্যে টোটকা ওষুধ দিয়ে এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে বলে দেখানো হবে। কিন্তু লুটপাটের পথ বন্ধ না করতে পারলে লুটপাটকারী ও লুটপাটের ধারা বন্ধ করা যাবে না। তিনি লুটপাটকারী ও টাকা পাচারকারীদের বিশেষ ট্রাইব্যুনালে বিচারের দাবি করেন।
সিপিবি সাধারণ সম্পাদক বলেন, মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে অর্জিত স্বাধীন বাংলাদেশে অতীত ও বর্তমানে যারা রাষ্ট্র ক্ষমতায় ছিল ও আছে তারা এ লুটপাটের ধারা তৈরি করেছে। এ অবস্থা থেকে মুক্তি পেতে বামপন্থি পথের বিকল্প নেই। যারা প্রচলিত ব্যবস্থা ও ধারাকে পাল্টে দিয়ে সাধারণ মানুষের স্বপক্ষে নবতর ধারার সূচনা করবে। মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে যে ধারা আমরা সূচনা করতে চেয়েছিলাম, সে ধারাকে অগ্রসর করে নেবে।
‘দেশবাসীকে এ ধারাকে অগ্রসর করতে বামপন্থার পথ ধরতে হবে। প্রচলিত ব্যবস্থায় প্রচার মাধ্যম, সামাজিক মাধ্যম- প্রচলিত ব্যবস্থার মধ্যেই সমাধান খোঁজার কথা বলতে চায়। এই সাময়িক টোটকা ওষুধ দিয়ে এ অবস্থার পরিবর্তন করা যাবে না। তাই দেশবাসীকে চলমান-দুঃশাসনের অবসান, গণতন্ত্র ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠা ও ব্যবস্থা বদলের সংগ্রামকে অগ্রসর করতে হবে’।
সিপিবির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শাহীন রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ডা. সাজেদুল হক রুবেল, জলি তালুকদার, কাজী রুহুল আমিন, কেন্দ্রীয় নেতা সাজ্জাদ জহির চন্দন, ডা. ফজলুর রহমান, অনিরুদ্ধ দাশ অঞ্জন, লুনা নূর, সাদেকুর রহমান শামীম, নিমাই গাঙ্গুলী, আবিদ হোসেন, রাগিব আহসান মুন্না, মানবেন্দ্র দেব, লাকী আক্তার ও জাহিদ হোসেন খান।
সমাবেশ থেকে আগামী ৬ জুলাই দেশের সব উপজেলা থানায় দুর্নীতি বিরোধী সমাবেশ-বিক্ষোভের কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। আগামী ২ জুলাই বাম গণতান্ত্রিক জোট আহুত স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সামনের বিক্ষোভের ঘোষণা দেওয়া হয়।
সমাবেশ শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল পুরানা পল্টন, মুক্তাঙ্গন, জিরো পয়েন্ট, জিপিও, বায়তুল মোকাররম হয়ে মুক্তিভবনে এসে শেষ হয়।