অতিরিক্ত ঘাম হতে পারে যেসব মারাত্মক রোগের লক্ষণ

অতিরিক্ত ঘাম হতে পারে যেসব মারাত্মক রোগের লক্ষণ

গরমের এ সময়টাতে ঘামের পরিমাণ অনেকটাই বেড়ে যাবে এটাই স্বাভাবিক। তাই অনেকেই অতিরিক্ত ঘাম হওয়াটাকে তেমন গুরুত্ব সহকারে দেখেন না। কিন্তু এই অতিরিক্ত ঘামের প্রকৃত কারণ খুঁজে বের না করলে আপনি পড়তে পারেন মারাত্মক বিপদের মুখে। কেননা অতিরিক্ত ঘাম হওয়ার সঙ্গে সম্পর্ক রয়েছে জটিল কিছু রোগের।

ভারতের অ্যাপোলো মাল্টিস্পেশ্যালিটি হাসপাতালের সিনিয়র ইন্টারভেনশন্যাল কার্ডিওলজিস্ট ডা. বিকাশ মজুমদার মনে করেন, বেশকিছু বড় অসুখের পূর্বলক্ষণ হলো অতিরিক্ত ঘাম।

আমেরিকার ননপ্রফিট হেলথ কেয়ার ও গবেষণা একাডেমি মেডিকেল সেন্টার ‘মেও ক্লিনিক’-ও জানিয়েছে অতিরিক্ত ঘামের কারণ হতে পারে বেশ কিছু মারাত্মক রোগের ইঙ্গিত।

তাই অতিরিক্ত ঘামের লক্ষণটিকে গুরুত্ব না দিলে পরিবারের কোনো সদস্যের অনাকাঙ্ক্ষিত আকস্মিক দুঃসংবাদ পেতে পারেন আপনি।নিজেও পড়তে পারেন বিপাকে। তাই আসুন জেনে নিই অতিরিক্ত ঘামের সঙ্গে কোন কোন জটিল রোগগুলো সম্পর্কিত রয়েছে।

১। হৃদরোগ: হার্টের কোনো সমস্যা হলে আপনার অবশ্যই অতিরিক্ত ঘামের সমস্যা দেখা দেবে। ঘামের সঙ্গে উপসর্গ হিসেবে থাকতে পারে বুক ধড়ফড়, বুকে ব্যথা, কিছুক্ষণের জন্য অজ্ঞান হয়ে যাওয়া এবং বুকে চাপ অনুভব ও শ্বাসকষ্ট ইত্যাদি। হার্টের গতি কম বা বেশি হলে কিংবা হার্টে ব্লক থাকলে আপনার শরীরে মাত্রাতিরিক্ত ঘাম হবে।

২। ডায়াবেটিস: অতিরিক্ত ঘামের সঙ্গে ডায়াবেটিস রোগটিরও সম্পর্ক আছে। ডায়াবেটিস রোগীদের হঠাৎ ব্লাডসুগার কমে গেলে শরীরে অস্বস্তির সঙ্গে প্রচুর ঘামের সৃষ্টি হয়।

৩। থাইরয়েড: থাইরয়েডের ভারসাম্যহীনতার কারণে বেশি ঘাম হওয়ার প্রবণতা দেখা যায়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, হাইপার থাইরয়েডের জন্য মানুষের শরীরে থাইরয়েড হরমোনের ক্ষরণ বেশি হয়, ফলে রোগীর খিদে বেড়ে যায়। কিন্তু ওজন কমতে থাকে। সেইসঙ্গে বেড়ে যায় মাত্রারিক্ত ঘামের প্রবণতাও।

৪। ব্রেন স্ট্রোক: হঠাৎ মাথার যন্ত্রণা, শরীরে প্যারালাইসিসের মতো অনুভূতি কিংবা স্ট্রোকের পূর্বে বেশ কয়েকদিন আপনার প্রচুর ঘাম হতে পারে।

৫। নিউরোলজিক্যাল সমস্যা: মাথায় টিউমার, খিচুঁনির মতো যেকোনো নিউরোলজিক্যাল সমস্যার প্রাথমিক উপসর্গ হিসেবে অতিরিক্ত ঘাম হতে পারে আপনার। তাই সঠিক সময়ে অতিরিক্ত ঘামের কারণ খুঁজে বের করতে পারলে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা গ্রহণের মাধ্যমে গুরুতর শারীরিক ক্ষতির থেকে রেহাই পাওয়া সম্ভব বলে মনে করেন চিকিৎসকরা।

৬। টেনশন ও ভয়: শরীরে কোনও স্ট্রেস, টেনশন বা ভয়ের কারণ হলে অ্যান্ড্রিনালিন ও নন্-অ্যান্ড্রিনালিন হরমোনের ক্ষরণ বেড়ে গিয়ে অটোনোমিক নার্ভাস সিস্টেম সক্রিয় হয়ে যায় এবং ঘামের সৃষ্টি করে।

৭। রক্তে ইনফেকশন: যদি আপনার রক্তে ইনফেকশনের সমস্যা থাকে, তবে তা আপনার শরীরকে প্রায়ই উত্তপ্ত করে তুলবে। এ সমস্যায় আপনার ব্লাড প্রেশার অনেকটাই কমে যাবে। এ সমস্যায় হার্ট চাহিদা অনুযায়ী পরিমিত রক্ত পাম্প করে শরীরকে প্রদান করতে ব্যর্থ হয়। এক্ষেত্রে রোগীর দেহ ঠান্ডা হয়ে প্রচণ্ডমাত্রায় ঘাম বা শীতল ঘাম নির্গত হয়, যা অত্যন্ত বিপজ্জনক হতে পারে।

এছাড়া অ্যাড্রিনাল গ্রন্থি টিউমার, মেনোপজ নারী, ম্যালেরিয়া, হাইপারহাইড্রোসিস ( প্রাইমারি ও সেকেন্ডারি স্টেজে) রোগীর ক্ষেত্রেও অতিরিক্ত ঘামের সমস্যা দেখা যায়। 

Please Share This Post in Your Social Media

© All rights reserved © 2023 EU BANGLA NEWS