বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু বলেছেন, কৃষকরা তাদের উৎপাদিত পণ্যের দাম পাচ্ছেন না, অপরদিকে ভোক্তারা বেশি দামে পণ্য ক্রয় করছেন, মধ্যস্বত্বভোগীরা মুনাফা করছেন, তাদের দৌরাত্ম্য কমাতে হবে। দেশের কোনো জায়গায় তুলনামূলক কম মূল্যে পণ্য পাওয়া যাচ্ছে, এধ রনের তথ্য প্রাপ্তির একটি প্ল্যাটফর্ম প্রণয়নের জন্য তথ্য-প্রযুক্তিবিদদেরি ভূমিকা রাখতে হবে।
বৃহস্পতিবার (৩০ মে) রাজধানীর মতিঝিলে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) আয়োজিত ‘স্মার্ট এগ্রিকালচার; ভ্যালু চেইন উন্নয়নে চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনা’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, কৃষকদের ব্যবহার উপযোগী তথ্য কাঠামো প্রণয়নের জরুরী। এছাড়াও কৃষি পণ্যের স্ট্যান্ডাডাইজেশন ও সার্টিফিকেশনের উপর তিনি গুরুত্বপূর্ণ। তিনি বলেন, নতুন প্রণীত ‘লজিস্টিক পলিসি ২০২৪’- তে ভ্যালু চেইন সহ অন্যান্য ব্যবসা-বাণিজ্যের অন্যান্য বিষয়গুলোর সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে এবং এ বিষয় অবগত হওয়ার জন্য বাণিজ্যমন্ত্রী উদ্যোক্তাদের আহ্বান জানান। সে সঙ্গে উদ্ভাবনী কার্যক্রম বাড়ানোর ওপর তিনি জোরারোপ করেন।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমদানি-রপ্তানিকারকদের সুবিধার্থে খুব শিগগিরই ঢাকা চেম্বারের একটি পুর্ণাঙ্গ হেল্পডেস্ক স্থাপন করা হবে, যেখান থেকে ‘আইআরসি’ এবং ‘ইআরসি’ সার্টিফিকেট প্রাপ্তির সব সুবিধা প্রদান করা হবে। দালালদের দৌরাত্ম্য কমবে।
তিনি বলেন, এ বছরের শেষ নাগাদ ‘যৌথমূলধন কোম্পানি ও ফার্মগুলোর পরিদপ্তর (আরজেএসসি)’-এর সেবার সব কার্যক্রম পেপারলেস করা হবে, ফলে ব্যবসায়ীদের ভোগান্তি হ্রাস পাবে।
অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি আইসিটি সচিব মো. সামসুল আরেফিন বলেন, তরুণ সমাজ সম্প্রতি কৃষিখাতের প্রতি আগ্রহ দেখাচ্ছে, যেটা অনেক উৎসাহব্যঞ্জক একটি বিষয়। কৃষির উৎপাদিত পণ্য পুনরায় ব্যবহারের ওপর মনোযোগী হওয়ার উপর তিনি জোরারোপ করেন। এছাড়াও কৃষি ক্ষেত্রে উদ্ভাবনী কার্যক্রম বাড়ানোর জন্য তিনি সবার প্রতি আহ্বান জানান।
তিনি দেশের কৃষকদের ব্যবহার উপযোগী করে এ খাতের তথ্য-প্রযুক্তি তৈরি করা ও ব্যবহার নিশ্চিত করার তাগিদ দেন।
সভাপতির বক্তব্যে ডিসিসিআইয়ের সভাপতি আশরাফ আহমেদ বলেন, কৃষি খাতে স্মার্ট প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে পণ্যের উৎপাদনশীলতা ২০-৩০ শতাংশ বৃদ্ধি করা যায়, সে সঙ্গে এখাতে ব্যয় ২০ শতাংশ হ্রাস ও কৃষকের আয় ৩০-৪০শতাংশ বাড়ানো সম্ভব।
তিনি বলেন, বর্তমানে এ খাতে সাপ্লাইচেইনের অপর্যাপ্ততা, বাজারে পণ্য প্রবেশাধিকারের সুযোগ না থাকা এবং উৎপাদিত পণ্যের মূল্য সংযোজন প্রভৃতি সমস্যার মুখোমুখী হতে হচ্ছে। বিদ্যমান অবস্থা থেকে উত্তরণে কৃষি যন্ত্রপাতির আধুনিকায়ন ও কৃষকদের নতুন প্রযুক্তি ব্যবহারের সক্ষমতা বাড়ানো, কৃষি গবেষণা খাতে বিনিয়োগ বাড়ানো, প্রয়োজনীয় সহায়ক নীতিমালা প্রণয়ন এবং কার্যকর ভ্যালু চেইন ব্যবস্থার প্রবর্তন ও বাস্তবায়নের ওপর জোরারোপ করেন ডিসিসিআই সভাপতি।
সেমিনার আরও বক্তব্য রাখেন, বাংলাদেশস্থ ফুড অ্যান্ড এগ্রিকালচার অর্গানাইজেশনের ঊর্ধ্বতন কৃষিবিদ ড. মো. আব্দুল কাদের, কৃষি মন্ত্রণালয়ের সাবেক সচিব আনোয়ার ফারুক, বাংলাদেশ ব্যাংক অতিরিক্ত পরিচালক (এগ্রিকালচার ক্রেডিট ডিপার্টমেন্ট) ড. মো. আবু বাকের সিদ্দিকী, এ্যাকুয়ালিঙ্ক বাংলাদেশ লিমিটেড’র সিইও সৈয়দ রিজবান হোসেন, উইন ইনকর্পোরেট-এর সিইও এবং প্রতিষ্ঠাতা ড. কাশফিয়া আহমেদ, ড. ক্যাশআই ইনকর্পোরেশন-এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মেদিনা আলী এবং ক্রান্তি অ্যাসোসিয়েটস লিমিটেড’র পরিচালক ও সিইও ড. মোহাম্মদ রিশালাত সিদ্দিকী।