শিশুকে ধর্ষণের পর লাশ গুম করে নিখোঁজের মাইকিং করা আসামির মৃত্যুদণ্ড

শিশুকে ধর্ষণের পর লাশ গুম করে নিখোঁজের মাইকিং করা আসামির মৃত্যুদণ্ড

কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলায় তৃতীয় শ্রেণির এক ছাত্রীকে ধর্ষণের পর হত্যা করে লাশ কাঁথায় মুড়িয়ে ডাকাতিয়া নদীতে ফেলার দায়ে মোহাম্মদ আলী ওরফে বাপ্পী (২৬) নামের এক যুবককে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। আজ মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে কুমিল্লার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১–এর বিচারক (জেলা ও দায়রা জজ) মোহাম্মদ আবদুল্লাহ আল মামুন এ রায় দেন। রায় ঘোষণার সময় আদালতের কাঠগড়ায় ছিলেন মোহাম্মদ আলী।

মামলার বিবরণে জানা গেছে, ২০১৯ সালের ১৫ মার্চ বেলা সাড়ে তিনটার দিকে বিদ্যালয়পড়ুয়া ওই শিশুকে তেঁতুল খাওয়ানোর কথা বলে মোহাম্মদ আলী একটি চৌচালা টিনের ঘরে নিয়ে যান। এরপর তিনি শিশুটিকে ধর্ষণ করে হত্যার পর লাশ কাঁথা দিয়ে মুড়িয়ে ডাকাতিয়া নদীতে ফেলে দেন। এ ঘটনার পর তিনি নিজে থেকে অটোরিকশা ভাড়া করে এনে শিশুটির নিখোঁজের সংবাদ মাইকিং করেন। একপর্যায়ে এলাকাবাসীর সন্দেহ হয়। পরে পিটুনি দিলে তিনি শিশুটিকে ধর্ষণের পর হত্যা করে লাশ গুমের কথা স্বীকার করেন। এ ঘটনায় শিশুটির বাবা পরদিন চৌদ্দগ্রাম থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে মামলা করেন। মামলায় মোহাম্মদ আলীকে একমাত্র আসামি করা হয়।

২০১৯ সালের ২ জুন মোহাম্মদ আলী ও একই গ্রামের মো. মিজানের (২২) নামে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা চৌদ্দগ্রাম থানার উপপরিদর্শক ইকবাল মনির। ২০২০ সালের ৮ মার্চ এই মামলায় অভিযোগ গঠন করা হয়। এরপর মামলায় ১০ জনের সাক্ষ্য নেওয়া হয়। আজ আদালত মোহাম্মদ আলীকে মৃত্যুদণ্ড এবং ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড দেন। অপর আসামি মো. মিজানকে বেকসুর খালাস দেন বিচারক।

রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করে শিশুটির বাবা বলেন, ‘এ রায়ে আমি খুশি। দ্রুত ফাঁসির আদেশ কার্যকর দেখতে চাই। আমার অবুঝ শিশুর মুখে ও গলায় ওড়না পেঁচিয়ে ধর্ষণ করা হয়। এরপর মৃত্যু নিশ্চিত করার জন্য ঘাড় মটকিয়ে দেওয়া হয়। পরে কাঁথা মুড়িয়ে লাশ বাড়ির পাশের ডাকাতিয়া নদীতে ভাসিয়ে দেয় মোহাম্মদ আলী। একসঙ্গে এতগুলো অপরাধ করা ব্যক্তির ফাঁসি দ্রুত হলে আমি শান্তি পাব।’

কুমিল্লা আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের বিশেষ কৌঁসুলি প্রদীপ কুমার দত্ত বলেন, রায়ের দ্রুত কার্যকর চান তাঁরা। অবুঝ শিশুর ওপর নির্মম নির্যাতন করেছেন মোহাম্মদ আলী। এই রায় ন্যায়বিচারের দৃষ্টান্ত। অন্যদিকে আসামিপক্ষের আইনজীবী মো. আতিকুল ইসলাম বলেন, রায়ে বিবাদী পক্ষ খুবই অসন্তুষ্ট। রায়ের কপি পাওয়ার পর আপিল করবেন তাঁরা।

Please Share This Post in Your Social Media

© All rights reserved © 2023 EU BANGLA NEWS