যশোরে বিএনপি নেতার চালের আড়ত থেকে বায়জিদ হাসান (৩০) নামে এক যুবকের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। তার শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।ধারণা করা হচ্ছে, তাকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে।
সোমবার (২৫ মার্চ) ভোর ৩টার দিকে কোতোয়ালি থানার অদূরে যশোর নগর বিএনপির সভাপতি রফিকুল ইসলাম চৌধুরী মুল্লুক চাঁদের চালের আড়তে ওই মরদেহ পাওয়া যায়।
বায়জিদ হাসান খুলনা সিটি করপোরেশনের বানরগাটি এলাকার নজরুল ইসলামের ছেলে। তিনি পেশায় একজন ইঞ্জিনিয়ার এবং বিএনপি নেতা মল্লুক চাঁদের ঢাকা অফিসের কর্মী ছিলেন।
পুলিশ জানায়, নৈশপ্রহরীদের কাছ থেকে তথ্য পেয়ে রাত ৩টার দিকে বিএনপি নেতা মল্লুক চাঁদের বাড়ি সংলগ্ন চালের আড়তে যায় পুলিশ। সেখান থেকে ওই যুবকের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
পুলিশ বলছে, বায়জিদের কাছে পাঁচ লাখ ৫৪ হাজার টাকা পেত তার প্রতিষ্ঠান। ওই টাকার জন্য রোববার তাকে খুলনা থেকে ডেকে আনা হয়। এরপর টাকা আদায়ের জন্য তাকে মারপিট করা হয়। চিকিৎসা না দিয়ে তাকে চালের আড়তে ফেলে রাখা হয়েছিল। তার শরীরে একাধিক আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তার মরদেহ উদ্ধার করে যশোর জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
আড়তের নৈশপ্রহরী মো. মোজহার হোসেন পুলিশকে জানান, তিনি রাত ১০টার দিকে আড়তে আসেন। এ সময় ওই যুবককে আড়তের মেঝেতে পড়ে থাকতে দেখেন। লেবারদের কাছে জানতে চাইলে তারা জানান, তাকে মারপিট করা হয়েছে। অসুস্থ হয়ে পড়েছেন, ঠিক হলে চলে যাবেন। এরপর লেবাররা যে যার মত বাড়ি চলে যান। পরে মোজহার বিষয়টি ম্যানেজারকে জানালে তিনিও একই কথা বলেন। এরপর তিনি আড়তে তালা দিয়ে বাইরে এসে অবস্থান নেন। পরে পুলিশ এলে তিনি দরজা খুলে দেন। এ সময় তারা ওই যুবককে মৃত অবস্থায় উদ্ধার করে এবং মর্গে পাঠায়।
মোজহার হোসেন আরও জানান, লেবারদের মধ্যে কানাঘুষা হচ্ছিল, ওই ছেলেকে আড়তের মালিকই মারধর করেছেন। এর বেশি তিনি কিছু জানেন না।
এদিকে, ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জুয়েল ইমরান। তিনি বলেন, ‘পাওনা টাকা নিয়ে একটি বিরোধের তথ্য পেয়েছি। তবে কী কারণে এবং কে বা কারা এ হত্যায় জড়িত তা শনাক্তে তদন্ত চলছে। দ্রুততম সময়ের মধ্যেই হত্যার সঙ্গে জড়িতদের শনাক্ত ও আটক করা সম্ভব হবে। ’
যশোর নগর বিএনপির সভাপতি রফিকুল ইসলাম চৌধুরী মুল্লুক চাঁদ পুলিশের কাছে দাবি করেছেন, ওই যুবক তার ঢাকা অফিসে ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে কাজ করতেন। সাব-কন্ট্রাকটারের মালামাল কেনার পাঁচ লাখ ৫৪ হাজার টাকা আত্মসাৎ করে পালিয়ে যান। ওই টাকার জন্য খুলনা সিটি করপোরশেনের একজন কাউন্সিলরের মাধ্যমে দেন-দরবার চলছিল। তাকে কে ডেকে এনেছে বা কে মারপিট করেছে তিনি কিছু বলতে পারছেন না। তার কর্মীদের সবার ফোন বন্ধ। তিনি বিষয়টি জানার চেষ্টা করছেন।