নগরের কাঁচাবাজারে ৪০ টাকার নিচে পাওয়া যাচ্ছে না অধিকাংশ সবজি। দাম বেড়েছে মাছ-মাংসেরও।রোজার মধ্যে বাড়তি দাম নিয়ন্ত্রণে সরকার বেশকিছু নিত্যপণ্যের মূল্য নির্ধারণ করে দিলেও তা মানার ব্যাপারে অনীহা খুচরা বিক্রেতাদের।
কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, আলু ২৮ টাকা, কাঁচামরিচ ৬০ টাকা, বাঁধাকপি ২৮ টাকা, ফুলকপি ২৯ টাকা, বেগুন ৪৯.৭৫ টাকা, শিম ৪৮ টাকা, টমেটো ৪০ টাকা, মিষ্টিকুমড়া ২৩ টাকায় বিক্রি হওয়ার কথা।তবে চকবাজার, বহদ্দারহাট, কাজীর দেউড়ি, রিয়াজউদ্দিন বাজার ও কর্ণফুলী কমপ্লেক্স সহ বিভিন্ন কাঁচাবাজারে শুক্রবার (২২ মার্চ) আলু ৪৫ টাকা, বাঁধাকপি ৩০ টাকা, ফুলকপি ৫০ টাকা, কাঁচামরিচ ৬০-৭০ টাকা, বেগুন ৫০ টাকা, শিম ৫০-৫৫ টাকা, টমেটো ৪০-৫০ টাকা, মিষ্টিকুমড়া ৩০-৩৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে।
এছাড়া গাজর ও শসা ৪০ টাকা, পেঁপে ও ধনেপাতা ৫০ টাকা, ধুন্দল, খিরা ও চিচিঙ্গা ৬০ টাকা, ঢেঁড়স, বরবটি ও তিতকরলা ৮০ টাকা, লাউ ৪০ টাকা, সবুজ কেপসিকাম ১০০ টাকা, শিমের বিচি ৭০ টাকা, লেটুস পাতা ১০০ টাকা, এক ডজন লেবু ১২০-১৪০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। শাক নেই ২০ টাকার নিচে।
অধিদপ্তরের তালিকায় খুচরা মূল্য হিসেবে গরুর মাংস ৬৬৫ টাকা, ব্রয়লার মুরগি ১৭৫ টাকা, সোনালী মুরগি ২৬২ টাকা, ছাগলের মাংস ১ হাজার ৩ টাকা নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। এছাড়া ডিম ১০ টাকা ৪৯ পয়সা, কাতাল মাছ ৩৫৩ টাকা, পাংগাস মাছ ১৮০ টাকা নেওয়ার কথা।
অথচ গরুর মাংস ৭০০-৯০০ টাকা, ছাগলের মাংস ১১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্রতিকেজি ব্রয়লার মুরগি ২১০-২২০ টাকা, সোনালি মুরগি ৩৩০-৩৫০ টাকা, দেশি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৬২০ টাকা কেজি দরে। কাতাল ৩৬০ টাকা, পাঙ্গাস ২০০ টাকা, তেলাপিয়া ২০০-২৩০ টাকা, রুই ২৫০-৩৩০ টাকা, পাবদা ৪০০ টাকা, সুরমা ৩২০-৬৫০ টাকা, বাগদা চিংড়ি ৮০০ টাকা, রূপচাঁদা আকারভেদে ৬০০-৭৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ফার্মের মুরগির ডিম প্রতি ডজনের দাম পড়ছে ১১৫ থেকে ১২০ টাকা।
তবে ভারত থেকে আমদানির খবরে কমেছে পেঁয়াজের দাম। বাজারে দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৫৫ থেকে ৭০ টাকা। আদা ও রসুনের কেজি ১৭০ থেকে ২০০ টাকা। ছোলা ৯৫-১০৫ টাকা, খেসারি ডাল ১২০-১২৫ টাকা, চিনি ১৩৫ টাকা, লবণ ৪০ টাকা, বোতলজাত সয়াবিন তেল প্রতি লিটার ১৬৫-১৭০ টাকা, প্যাকেটজাত আটা ৬০ থেকে ৬৭ টাকা, সাধারণ মানের খেজুর ৩০০-৩৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
সপ্তাহের ব্যবধানে চালের দামও বেড়েছে কেজিপ্রতি ৩ থেকে ৪ টাকা। নাজিরশাইল ও সরু চাল ৬২ থেকে ৭৫ টাকা, পাইজাম ৫২ থেকে ৫৬ টাকা, স্বর্ণা ও ইরি বিক্রি হচ্ছে ৪৮ থেকে ৫২ টাকা দরে।
রমজানে চট্টগ্রামে সব পণ্যের অবাধ সরবরাহ নিশ্চিত করার পাশাপাশি মূল্য সহনীয় পর্যায়ে রাখতে ৪০টি বাজার, মার্কেট ও শপিংমলগুলোতে জেলা প্রশাসনের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। এছাড়া, সিন্ডিকেট ও কালোবাজারি রোধে বাজার মনিটরিং জোরদার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম জেলার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মো. আবদুল মালেক।
তিনি বলেন, কিছু অসাধু ব্যবসায়ী নিত্যপণ্য মজুদ রেখে বাজারে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে এবং প্রতি বছর পবিত্র রমজান মাসে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যসহ কাপড় ও অন্যান্য পণ্যের মূল্য অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি করার মাধ্যমে বাজারকে অস্থিতিশীল করে রাখে। এজন্য সকল এজেন্সি ও সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান সমন্বিতভাবে কাজ করছে। প্রত্যেক পাইকারি ও খুচরা দোকানে পণ্যের ক্রয়-বিক্রয়ের তালিকা টাঙিয়ে রাখার নির্দেশ রয়েছে। কোন পণ্যের মূল্য যাতে বৃদ্ধি না পায় সে ব্যাপারে জেলা প্রশাসন কঠোর অবস্থানে রয়েছে। ভোক্তারা যাতে সহনীয় মূল্যে প্রয়োজনীয় পণ্য ক্রয় করতে পারে সে বিষয়েও নজরদারি বৃদ্ধি করা হচ্ছে।