জেলা সদর হাসপাতালে তিন মাস বয়সী শিশু মুসাফিরের মৃত্যুর ঘটনা তদন্তে চিকিৎসক শরীফ-উর রহমানের অবহেলার বিষয়টি উঠে এসেছে। কিন্তু তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি, বরং বদলি করেছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
বৃহস্পতিবার (২১ মার্চ) দুপুরে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. হাবিবুর রহমান এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।
ডা. হাবিব বলেন, শিশু মুসাফিরের মৃত্যুর ঘটনার পর তদন্ত হয়। এতে চিকিৎসক শরীফ-উর রহমানের অবহেলার বিষয়টি উঠে আসে। তাকে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে কুড়িগ্রাম জেলার রৌমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বদলি করা হয়েছে। আমরা আজ বদলির আদেশ হাতে পেয়েছি। দুয়েকদিনের মধ্যে তাকে ছাড়পত্র দেওয়া হবে।
গত ১৩ মার্চ রাতে মুসাফিরের মৃত্যু হয়। ঠাণ্ডাজনিত সমস্যার কারণে তাকে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ভর্তির পর তার শারীরিক অবস্থা খারাপ হতে শুরু করে। এ সময় ডিউটিতে ছিলেন চিকিৎসক শরীফ-উর রহমান। তাকে বার বার ডেকেও পরিবার, নার্সরা মুসাফিরের চিকিৎসার জন্য নিতে পারেনি। পরে শরীফ-উর রহমানের বিরুদ্ধে দায়িত্ব অবহেলার অভিযোগ তোলে ভুক্তভোগীর পরিবার। বিষয়টি নিয়ে সংবাদ প্রকাশ হলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের নজরে আসে।
গত ১৪ মার্চ গাইনি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক হোসনে আরাকে প্রধান করে সিনিয়র কনসালটেন্ট (অর্থোপেডিক্স) আতিকুর রহমান ও আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) মিতু আক্তারকে সদস্য করে তদন্ত কমিটি গঠন করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। তদন্ত কমিটি তদন্ত শেষে গত সোমবার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে প্রতিবেদন দাখিল করে গতকাল বুধবার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে চিকিৎসক শরীফ-উর রহমানকে শরীয়তপুর সদর হাসপাতাল থেকে সরিয়ে কুড়িগ্রাম জেলার রৌমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বদলির আদেশ দেওয়া হয়।
এ ব্যাপারে শরীয়তপুর সিভিল সার্জন ডা. আবুল হাদি মোহাম্মদ শাহ পরান বলেন, শিশু মৃত্যুর ঘটনায় চিকিৎসক শরীফ-উর রহমানের শাস্তির দাবি ও ক্ষতিপূরণ চেয়ে ভুক্তভোগী পরিবারের পক্ষ থেকে একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। এ ব্যাপারে আমরা লিখিতভাবে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। সেখান থেকে নির্দেশনা আসার পর পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
শিশু মুসাফির শরীয়তপুর পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের চরপালং এলাকার রাজিব শেখ ও রুবিনা দম্পতির সন্তান ছিল।