নিয়োগ পরীক্ষায় ডিজিটাল ডিভাইসের সন্ধান দেবে ‘সুরক্ষা’

নিয়োগ পরীক্ষায় ডিজিটাল ডিভাইসের সন্ধান দেবে ‘সুরক্ষা’

প্রাথমিকে সহকারী শিক্ষক নিয়োগে জালিয়াতির উদ্দেশে কানের ভেতরে ডিজিটাল ডিভাইস রাখলে তার সন্ধান দেবে ‘সুরক্ষা’ নামে একটি ডিভাইস।

বৃহস্পতিবার (২১ মার্চ) সচিবালয়ে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান সচিব ফরিদ আহাম্মদ।

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অর্থায়নে বুয়েটের ইনস্টিটিউট অব ইনফরমেশন অ্যান্ড কমিউনিকেশন টেকনোলজি (আইআইটি) এ যন্ত্র অবিষ্কার করেছে বলে জানান তিনি।

সচিব বলেন, আগামী ২৯ মার্চ তৃতীয় ধাপে সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় এ যন্ত্রটি ব্যবহার করা হবে। জালিয়াতির ডিভাইস কোনো পরীক্ষার্থীর কোনো ঢোকানো হলে অথবা কোনো পরীক্ষার্থী ওই ধরনের ডিভাইস কানে রেখে থাকলে বুয়েট কর্তৃক উদ্ভাবিত যন্ত্রে একটি লাইট জ্বলে উঠবে এবং শব্দ সংকেত বেজে উঠবে।

তিনি আরও বলেন, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নিয়োগ পরীক্ষায় জালিয়াতির ডিজিটাল ডিভাইস ব্যবহার প্রতিরোধে যন্ত্র উদ্ভাবনের জন্য বুয়েটের আইআইটিসিকে ইনোভেশন ফান্ডের আওতায় ৫ লাখ টাকা দেওয়া হয়। এ যন্ত্র তৈরিতে প্রাথমিকভাবে ৮ হাজার ৫০০ টাকা খরচ হবে। পরে বেশি পরিমাণে উৎপাদন করা হলে দাম পড়বে ৫ হাজার ৫০০ টাকা।

ফরিদ আহাম্মদ বলেন, আগামী ২৯ মার্চ তৃতীয় ধাপের নিয়োগ পরীক্ষা থেকেই এ যন্ত্র ব্যবহার করা হবে। এ নিয়োগ পরীক্ষায় ২৫টি যন্ত্র দিয়ে ৫টি টিম করে পরীক্ষাকেন্দ্রে এ যন্ত্রের পাইলটিং করা হবে। পরীক্ষার্থী বেশি এমন ৫টি জেলা নির্ধারণ করা হয়েছে। ঢাকা, চট্টগ্রাম, কুমিল্লা, টাঙ্গাইল ও কিশোরগঞ্জ এ জেলাগুলোতে আমরা পাইলটিং করবো।

তিনি আরও বলেন, শুধু প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় নয়, সব মন্ত্রণালয়, বিভাগ, অধিদপ্তরের পাবলিক পরীক্ষা যারা নেয় তারা এটি ব্যবহার করতে পারবেন।

সহকারী শিক্ষক পদে তৃতীয় ধাপে ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগে লিখিত পরীক্ষা ২৯ মার্চ অনুষ্ঠিত হবে। ৬ হাজার ২০১টি পদের বিপরীতে মোট পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ৩ লাখ ৪৯ হাজার ২৯৩ জন। মৌখিক পরীক্ষা সম্ভাব্য তারিখ ৫ থেকে ২০ মে। আর চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশ করা হবে ১০ জুন।

ওইদিন সকাল ১০টা থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগের (পার্বত্য জেলা বাদে) ২১ জেলায় পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। এ পরীক্ষা মোট কেন্দ্রের সংখ্যা ৪১৪টি।

সচিব বলেন, ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগ দুটিতে অন্যান্য বিভাগের চেয়ে পরীক্ষার্থী বেশি। তাই পরীক্ষা সুষ্ঠু করতে একটু বেশি সাবধানতা অবলম্বন করা হয়েছে। পরীক্ষার দিন প্রতিটি কেন্দ্র একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট থাকবে।

তিনি আরও বলেন, প্রশ্নপত্র ও অন্যান্য কাগজপত্র সম্বলিত ট্রাংক ঢাকা থেকে গ্রহণ, জেলার ট্রেজাররিতে সংরক্ষণ এবং উত্তরপত্র ঢাকায় পাঠানোর ক্ষেত্রে জেলা প্রশাসকরা প্রয়োজনীয় সংখ্যক নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগের ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।

পরীক্ষাকেন্দ্রে কোনো বই, উত্তরপত্র, নোট বা অন্য কোনো কাগজপত্র, ক্যালকুলেটর, মোবাইল ফোন, ভ্যানিটি ব্যাগ, হাতঘড়ি বা ঘড়ি জাতীয় বস্তু, ইলেকট্রনিক হাতঘড়ি বা যেকোনো ধরনের ইলেকট্রনিক ডিভাইস, কমিউনিকেটিভ ডিভাইস, জাতীয় পরিচয়পত্র (স্মার্ট কার্ড) ছাড়া কোনো প্রকার ডেবিট কার্ড, ক্রেডিট কার্ড অথবা অন্য কোনো কার্ড বা এ জাতীয় বস্তু সঙ্গে নিয়ে প্রবেশ করা বা সঙ্গে রাখা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। যদি কোনো পরীক্ষার্থী এসব দ্রব্য সঙ্গে নিয়ে পরীক্ষা কেন্দ্রে প্রবেশ করেন, তাকে তাৎক্ষণিক বহিষ্কারসহ সংশ্লিষ্ট পরীক্ষার্থীর বিরুদ্ধে প্রচলিত আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

জুলাইয়ের মধ্যে নিয়োগ
সচিব বলেন, মৌখিক পরীক্ষা সম্ভাব্য তারিখ ৫ থেকে ২০ মে এবং চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশ করা হবে ১০ জুন। আর জুলাইয়ের মধ্যে শিক্ষক নিয়োগ সম্পন্ন করা হবে। এর মাধ্যমে শিক্ষক-শিক্ষার্থীর অনুপাত হবে ১:৩০।

তিনি আরও বলেন, পরীক্ষার দিন প্রতিটি পরীক্ষাকেন্দ্রে প্রয়োজনীয় সংখ্যক পুলিশ ফোর্স (মহিলা পুলিশসহ) নিয়োগের জন্য জননিরাপত্তা বিভাগ ও পুলিশ অধিদপ্তর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে। পরীক্ষার দিন কেন্দ্রসমূহে টহল দেবে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)।

সচিব বলেন, পরীক্ষার্থীরা যাতে কোনো প্রকার ইলেকট্রনিক্স কমিউনিকেটিভ ও ডিভাইস নিয়ে পরীক্ষা কেন্দ্রে প্রবেশ করতে না পারে সে লক্ষ্যে প্রতিটি পরীক্ষা কেন্দ্রে মেটাল ডিটেক্টর সরবরাহ ও স্থাপন করবে পুলিশ। পরীক্ষার্থীদের শরীর তল্লাশি করার জন্য মহিলা কেন্দ্রে মহিলা পুলিশ ও পুরুষ কেন্দ্রে পুরুষ পুলিশ ফোর্স নিয়োজিত থাকবে।

ফরিদ আহাম্মদ বলেন, পরীক্ষার সময় প্রশ্নফাঁসের গুজব ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম মনিটরিং করতে গোয়েন্দা সংস্থাগুলো তৎপর থাকবে এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনী গোয়েন্দা সংস্থার তথ্য নিয়ে মাঠে তৎপর থাকবে।

Please Share This Post in Your Social Media

© All rights reserved © 2023 EU BANGLA NEWS