মূল্যবৃদ্ধি হলেই যে বাজার ব্যবস্থাপনায় ত্রুটি রয়েছে বা বাজারে সিন্ডিকেটে রয়েছে সে ধারণা যথাযথ নয় বলে জানিয়েছেন দ্রব্যমূল্য, বাজার ব্যবস্থাপনা ও প্রতিযোগিতা শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকের আলোচকরা।
শনিবার (৯ মার্চ) দুপুরে রাজধানীর কারওয়ানবাজারের ডেইলি স্টার ভবনে এ গোলটেবিল বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশ ইন্টেলেকচুয়াল প্রোপার্টি ফোরাম’ (আইপি) এই গোলটেবিল বৈঠকের আয়োজন করে।
এ বৈঠক সঞ্চালনা করেন সাবেক অতিরিক্ত সচিব বাংলাদেশ আইপি ফোরাম প্রধান নির্বাহী মনজুরুর রহমান।
গোলটেবিল বৈঠকে সূচনা বক্তব্য উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ও সেন্টার অন ইন্টিগ্রেটেড রুরাল ডেভেলপমেন্ট ফর এশিয়া অ্যান্ড দ্য প্যাসিফিকের (সিআইআরডিএপি) পরিচালক (গবেষণা) ড. মো. হেলালউদ্দিন।
তিনি তার বক্তব্যে বলেন, যেকোনো দেশেই মূল্যবৃদ্ধি হার ওপরের দিকে যাচ্ছে। মূল্যবৃদ্ধির এই দায় কাকে দেবেন। আমাদের দেশে যেভাবে মূল্যের স্তর বাড়ছে তার দায় পলিসির। অর্থনীতির ভাষায় আজকের বিদ্যমান দামে ব্যবসায়ীরা যেটুকু পণ্য বিক্রি করতে চায়, সেটাই হচ্ছে সাপ্লাই। কোনো একটি দেশ যদি বলে তারা কোনো একটি পণ্য রপ্তানি করবে না, তখন আমাদের দেশের ব্যবসায়ী যদি মনে করে সেই পণ্য সে বিক্রি করবে না, সব ব্যবসায়ী যদি বিক্রি বন্ধ করে দেয় বা কম করে তাহলে বাজারে সাপ্লাই কমে যাবে। বাইরে থেকে পণ্য আমদানির পর দাম কমবে, সেটার জন্য অপেক্ষার প্রয়োজন নেই, জোগান কম হওয়ার কারণে দাম বেড়ে যাবে।
তিনি বলেন, দাম নির্ভর করে উৎপাদন খরচ, আমদানি-রপ্তানির ওপর। দাম বাড়ে উৎপাদন খরচসহ অন্যান্য খরচ বেড়ে গেলে। মূল্যবৃদ্ধি কোনো সমস্যা নয়, সমস্যা সেই অনুযায়ী মানুষের আয় বৃদ্ধি না হলে।
তিনি আরও বলেন, মজুদদারকে খুব খারাপ বলা হয়ে থাকে। কিন্তু বাজার অর্থনীতির ভাষায় পণ্য মজুদ প্রতিযোগিতার বাজারে একটু ভালো উদাহরণ। তাহলে আমরা কেন পণ্য মজুদকে এত খারাপ বলছি। সেজন্য দেখতে হবে কেউ যোগসাজশ করে মূল্য নির্ধারণে কোন পলিসি করছে কি না।
বাংলাদেশ আইপি ফোরামের প্রতিষ্ঠাতা ও বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের অ্যাডভোকেট ব্যারিস্টার হামিদুল মিসবাহ্ বলেন, দ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধি মানেই সিন্ডিকেট, এই সিন্ডিকেট শব্দটির আসলেই কি আইনে কোন স্থান আছে। বাংলাদেশ এবং পৃথিবীর কোনো আইনেই সিন্ডিকেট কথাটির কোন অস্তিত্ব নেই। দ্রব্যমূল্য বেড়ে গেলেই আমরা বলি সিন্ডিকেট, সব জায়গায় কি সিন্ডিকেট থাকতে পারে, এটা কি সম্ভব?