নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে মো. পারভেজ হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের ফাঁসির দাবিতে মানববন্ধন করেছেন এলাকার সর্বস্তরের জনগণ।
শনিবার (২ মার্চ) উপজেলার পিরোজপুর ইউনিয়নের পশ্চিম কান্দারগাঁও এলাকায় প্রায় শতাধিক নারী ও পুরুষের অংশগ্রহণে এ মানববন্ধন হয়।
জানা গেছে, গত ১৬ ফেব্রুয়ারি দুপুরে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে জাকির হোসেন ও জসিমের লোকজনের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে উভয় পক্ষের লোকজন দেশীয় অস্ত্র টেঁটা, রামদা ও লাঠিসোঠা নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এ সময় উভয় পক্ষের ১১ জন আহত হয়। আহতদের মধ্যে আব্দুল মোতালেবের ছেলে পারভেজ হোসেনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে মারা যায়। এ ঘটনায় গত ২০ ফেব্রুয়ারি নিহতের ছোট ভাই হৃদয় মিয়া বাদী হয়ে জসীমকে প্রধান আসামি করে ৪৯ জনের নাম উল্লেখসহ ৬১ জনের নামে হত্যা মামলা করেন। ঘটনার পর থেকে আসামিরা পলাতক ছিল।
গত ২৮ ফেব্রুয়ারি ভোরে ব্রাহ্মণবাড়ীয়া সদর মডেল থানার বিশ্বরোড এলাকায় র্যাব-১১ ও র্যাব -৯ যৌথ অভিযান চালিয়ে হত্যা মামলার এজহারভুক্ত প্রধান আসামি জসিম ও তার ছেলে ফাহাদকে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তারদের একই দিন সন্ধ্যায় সোনারগাঁ থানায় হস্তান্তর করা হয়।
মানববন্ধনে আওয়ামী নেতা জাকির হোসেন বলেন, গ্রেপ্তার আসামিদের সর্বোচ্চ সাজা দেওয়ার দাবিতে এলাকার সব জনগণ মিলে আমরা একত্র হয়েছি। এছাড়া ফজলুর ছেলে মাসুম, মোশাররফ, শামীম, সবুজ, শাহ জালালসহ অন্যান্য যেসব আসামিরা ধরা পড়েনি তাদের অনেকেই এলাকায় বুক ফুলিয়ে ঘোরাফেরা করছে। তাদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় এনে সর্বোচ্চ শাস্তি প্রদানের দাবি জানাচ্ছি।
মৃত পারভেজের মা ও স্ত্রী বক্তব্যে বলেন, পারভেজ অত্যন্ত নিরীহ ও সাধারণ মানুষ হিসেবে জীবিকা উপার্জন করত। সে কোনো রাজনীতি, টেন্ডারবাজি বা চাঁদাবাজিতে জড়িত ছিল না। তবুও সন্ত্রাসীরা তাকে নৃশংসভাবে হত্যা করেছে। এ ঘটনায় পারভেজের দুটি নাবালক সন্তান এতিম হয়েছে। পারভেজের স্ত্রী-সন্তানদের ভরণ-পোষণ ও দেখভালের জন্য আর কেউ নেই। তার পরিবার নিতান্তই অসহায় হয়ে পড়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও মহামান্য আদালতের প্রতি তারা দাবি জানান, এ সন্ত্রাসীমূলক কর্মকাণ্ডের শাস্তি হিসেবে সর্বোচ্চ সাজা মৃত্যুদণ্ড দেওয়ার জন্য। এখনো যেসব আসামিরা অধরা রয়েছে তাদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে একই সাজায় অন্তর্ভুক্ত করার জোর দাবি জানান।
মানববন্ধনে স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন ফজলুল হক, শিউলি বেগম, শামসুদ্দিন, তৈয়ব আলী, সিরাজুল ইসলাম, জুলহাস মিয়াসহ এলাকার প্রায় শতাধিক নারী ও পুরুষ।
মানববন্ধন শেষে এলাকাবাসী পশ্চিম কান্দরগাঁওয়ের মহল্লার রাস্তায় বিক্ষোভ মিছিলের মাধ্যমে কর্মসূচি সমাপ্ত হয়।