ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির ও চরমোনাই পীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম বলেন, সরকার দেশে বাকশাল কায়েমের চক্রান্ত করছে। সরকার দেশে একদলীয় বাকশাল কায়েমের জন্যই খোড়া অজুহাতে বায়তুল মোকাররম এলাকায় মিছিল-মিটিং নিষিদ্ধের পাঁয়তারা করছে।
তিনি আরও বলেন, বায়তুল মোকাররম মসজিদ গেটে যেসব ইসলামী দল মিছিল মিটিং করে, তারা মূলত মসজিদের সম্মান রক্ষা করে এবং মুসল্লিদের যেন কোনো সমস্যা না হওয়া সেদিকে সুদৃষ্টি রেখেই মিছিল মিটিং করে থাকে। কাজেই নামাজে আসা মুসল্লিরা আতঙ্কিত হওয়ার অজুহাতে জাতীয় মসজিদ এলাকায় মিছিল মিটিং নিষিদ্ধের পাঁয়তারা করলে তা সরকারের জন্য সুখকর হবে না।
বৃহষ্পতিবার (২৯ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১০টায় চরমোনাইর বার্ষিক মাহফিল স্টেজে আয়োজিত ওলামা ও সুধী সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন চরমোনাই পীর।
এ সময় তিনি আরও বলেন, প্রহসনের নির্বাচনী বৈতরণী পার হওয়ার পর সরকার বিরোধী দলের রাজনীতি নিয়ন্ত্রণের ব্যর্থ চেষ্টা করছে। সরকার জনরোষের ভয়ে আতঙ্কিত হয়ে বিরোধী দলসহ ইসলামী দলগুলোকে নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছে।
ওলামা সম্মেলনে আরও বক্তব্য রাখেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এর প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যক্ষ সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানী, আল্লামা নূরুল হুদা ফয়েজী, নায়েবে আমীর আল্লামা আব্দুল হক আজাদ, মহাসচিব অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা ইউনুস আহমাদ, যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান, কেন্দ্রীয় উপদেষ্টা ও বসুন্ধরা শায়খ জাকারিয়া ইসলামী রিসার্চ সেন্টারের মহাপরিচালক মুফতী মিজানুর রহমান সাঈদ, যাত্রাবাড়ী বড় মাদরাসার নাজেমে তালিমাত হাফেজ মোফাজ্জল হোসাইন, বাংলাদেশ মাদরাসা শিক্ষাবোর্ডের সাবেক সভাপতি প্রফেসর ড. একে এম ইয়াকুব হোসাইন, প্রফেসর নজরুল ইসলাম বলেন ও ঢাকা দারুল উলুম রিসার্চ সেন্টারের মুহতামিম মাওলানা আজিজুল হক।
উপস্থিত নেতারা বলেন, বাংলাদেশের বিরুদ্ধে গভীর ষড়যন্ত্র চলছে। এমতাবস্থায় দেশ ও ইসলাম রক্ষায় বৃহত্তর ঐক্যের বিকল্প নেই। সুতরাং পীর সাহেব চরমোনাইর নেতৃত্বে এদেশে একটি কার্যকর ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের ডাক দিতে হবে।
পাঠ্যপুস্তকে ট্রান্সজেন্ডার প্রমোটের প্রতিবাদ জানিয়ে বক্তারা বলেন, এটা সুদীর্ঘ মাস্টারপ্ল্যানের অংশ। একটি কুচক্রী মহল এদেশের মানুষের ঈমান-আকিদা ধ্বংসের গভীর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। এদেরকে এখনই প্রতিহত করতে না পারলে দেশের জন্য আরও ভয়ংকর সময় অপেক্ষা করছে।
বক্তারা বলেন, সৈয়দ রেজাউল করীম একজন আধ্যাত্মিক এবং দূরদর্শী রাজনৈতিক নেতা। সুতরাং এদেশের আপামর জনসাধারণকে সঙ্গে নিয়ে বৃহত্তর পরিবর্তন তথা গণবিপ্লব তার দ্বারাই সম্ভব।
আগামী ২ মার্চ শনিবার সকাল সাড়ে ৮ টায় পীর সাহেব চরমোনাই’র আখেরি বয়ানের মধ্য দিয়ে তিন দিনব্যাপী বিশাল এ মাহফিলের কার্যক্রম সমাপ্ত হবে।
মাহফিলে আসা মুসল্লিদের মধ্যে গতকাল দুইজন বার্ধক্যজনিত কারণে মৃত্যুবরণ করেন। তন্মধ্যে মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখান নিবাসী মো. আজমত শেখ এবং পাবনা নিবাসী মো. নওসের। উভয়ের জানাযা শেষে মাহফিল হাসপাতালের নিজস্ব অ্যাম্বুলেন্সে স্বজনদের কাছে মরদেহ হস্তান্তর করা হয় বলে জানিয়েছেন চরমোনাই মাহফিল মিডিয়া উপ-কমিটির সদস্য কে এম শরীয়াতুল্লাহ।