করোনা মহামারির খারাপ সময় কাটিয়ে স্বাভাবিক ব্যবসায় ফিরে এসেছে এয়ারলাইন কোম্পানিগুলো। তারপরও যেন কমছেই না বিমানের ভাড়া। বর্তমানে বিমান টিকিটের এত চাহিদা সত্ত্বেও এর মূল্য কমে যাওয়ারও কোন সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না।
তবে বিমান টিকিটের এমন আকাশছোঁয়া মূল্যের পেছনে রয়েছে বেশ কিছু কারণ।
কর্মীর অভাব
কোভিডের কারণে এয়ারলাইন প্রতিষ্ঠানগুলো প্রায় ২০০ বিলিয়ন ডলার ক্ষতির সম্মুখীন হয় এবং কর্মী ছাঁটাই করে। এই ঘটনায় প্রভাবিত হয়ে অনেক সু-প্রশিক্ষিত প্রাক্তণ কর্মী আরও স্থিতিশীল চাকরির জন্য সম্পূর্ণরূপে ক্যারিয়ার পরিবর্তন করার সিদ্ধান্ত নিচ্ছে। বিমান প্রতিষ্ঠানে নতুন করে কাজের আগ্রহও কমে গেছে কর্মীদের।
তেলের বাড়তি দাম
২০১৯ সালের তুলনায় বিমানের জ্বালানি তেলের মূল্য ৫০ শতাংশ বেড়েছে, যা এয়ারলাইনগুলির জন্য সমস্যা তৈরি করেছে। কারণ এই জ্বালানিই তাদের প্রধান খরচ। ইন্টারন্যাশনাল এয়ার ট্রান্সপোর্ট অ্যাসোসিয়েশনের তথ্য অনুসারে, ২০৫০ সালের মধ্যে জ্বালানির দিক থেকে কার্বন নিরপেক্ষ হতে শিল্পটিকে প্রায় ২ ট্রিলিয়ন ডলার খরচ করতে হবে। নিজ নিজ প্রতিষ্ঠান সামলাতে কোম্পানিগুলোকে টিকিটের দাম বাড়াতে হবে, যা বিমান যাত্রাকে আরও ব্যয়বহুল করে তুলবে।
বিমানের ঘাটতি
সারা বিশ্বের বাণিজ্যিক বহরের প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ বিমান মহামারীর কারণে উচ্চতায় অলস পড়ে ছিল। এগুলিকে আবার ব্যাবহার উপযোগী করে তোলা একটি বিশাল কাজ। বিমানগুলো যাত্রী বহনের জন্য নিরাপদ কিনা তা নিশ্চিত করার জন্য প্রতিটি অংশ পরীক্ষা করা প্রয়োজন৷ এর মধ্যে অনেক বিমানই পুরোপুরি ব্যাবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।
চীনের ধীর প্রত্যাবর্তন
চীন প্রায় ২৮০ বিলিয়ন ডলারের বার্ষিক পর্যটন ব্যয়ের উৎস। দেশটি এখনও মহামারী সংকট থেকে পুরোপুরি বের হয়ে আসতে পারেনি। দেশটির সরকার ভাইরাস প্রতিরোধের ব্যবস্থার কারণে শহরব্যাপী লকডাউন অন্য যে কোনও জায়গার চেয়ে বেশি সময় ধরে বহাল রেখেছে। গতকাল বুধবার প্রকাশিত একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে ৩০ শতাংশ এর বেশি চীনা ভ্রমণকারী ২০২৩ সালে বিদেশ ভ্রমণ বাতিল করেছে। ফলে আন্তর্জাতিক রুটে আসন চাহিদা কমে যায় এবং বিমান ভাড়া বেড়ে যায়।
এই ধরণের নানা কারণে বিমান টিকিটের মূল্য বাড়লেও এই মূল্য কমে আসার সম্ভাবনা বেশ কম।