তানজিদ হাসান তামিম সেঞ্চুরি হাঁকিয়েই উদযাপন করলেন ড্রেসিংরুমের দিকে ফিরে। সেখানে নিশ্চয়ই তখন স্বস্তির ছোঁয়া।আগের ম্যাচেও দলকে জেতানো ইনিংস খেলেছিলেন। কিন্তু তার এবারের সেঞ্চুরির ম্যাচটি তাদের জন্য ছিল বাঁচা-মরার লড়াই। তার সেঞ্চুরিতে বড় সংগ্রহ পাওয়ার পর ব্যাটিংয়ে সেভাবে লড়াই করতে পারেনি খুলনা টাইগার্স।
মঙ্গলবার বিপিএলের ম্যাচে জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে খুলনা টাইগার্সকে ৬৫ রানে হারিয়েছে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স। শুরুতে ব্যাট করে ৪ উইকেট হারিয়ে ১৯২ রান করে চট্টগ্রাম। ওই রান তাড়া করতে নেমে ১২৭ রানে অলআউট হয়ে যায় খুলনা।
লিগ পর্বে নিজেদের শেষ ম্যাচ জিতে প্লে-অফ নিশ্চিত করেছে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স। কোনো রকমে টিকে আছে খুলনার ভাগ্য। নিজেদের শেষ ম্যাচে সিলেট স্ট্রাইকার্সের বিপক্ষে কেবল জিতলেই হবে না, প্রার্থনায় থাকতে হবে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের বিপক্ষে ফরচুন বরিশালের বড় হারের।
এদিন শুরুতে ব্যাট করতে নেমে বেশ বিপদেই ছিল চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স। দুই ওভার শেষে তাদের ছিল চার রান, ততক্ষণে ৭ বলে ১ রান করে আউট হয়ে গেছেন মোহাম্মদ ওয়াসিম। পরের ওভারে দুটি চার হাঁকান তানজিদ হাসান। নাসুম আহমেদের করা চতুর্থ ওভারে নেন ১৬ রান।
পাওয়ার প্লের ছয় ওভারে ৪৯ রান করে চট্টগ্রাম। আরেকদিকে অবশ্য উইকেট ঠিকই হারায় তারা। জেসন হোল্ডারের বলে মাহমুদুল হাসান জয়ের হাতে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফেরেন সৈকত আলি। ১৭ বলে ১৮ রান করেন এই ব্যাটার। তাতেও অবশ্য দমানো যায়নি তানজিদ হাসান তামিমকে।
৬১ বলে টম ব্রুসের সঙ্গে তামিমের জুটি ছিল ১১০ রানের। এই জুটি ভাঙার আগেই সেঞ্চুরি তুলে নেন তানজিদ তামিম। ৩২ বলে প্রথম হাফ সেঞ্চুরি করা এই ব্যাটার পরের পঞ্চাশ রান করেন ২৬ বলে। সেঞ্চুরি করে বুনো উদযাপনে মাতেন তানজিদ।
এবারের বিপিএলের এটি তৃতীয় শতক। আগের দুটি করেছিলেন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের তাওহীদ হৃদয় ও উইল জ্যাকস। এই টুর্নামেন্টের সব আসর মিলিয়ে এটি ৩২তম সেঞ্চুরি। এতদিন তানজিদের ক্যারিয়ারসেরা ছিল ২০২১ সালে টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে অনুষ্ঠিত ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের ম্যাচে শাইনপুকুরের হয়ে ওল্ড ডিওএইচএসের বিপক্ষে ৭৯ রানের ইনিংস। এবার সেটিকে ছাড়িয়ে গেছেন তিনি।
১৯তম ওভারের প্রথম বলে তানজিদ তামিমকে বোল্ড করেন ওয়েন পারনেল। ততক্ষণে ৮ চার ও সমান ছক্কায় ৬৫ বলে ১১৬ রান করে ফেলেছেন তিনি। ২ চার ও সমান ছক্কায় ২৩ বলে ৩৬ রান করে অপরাজিত থাকেন ব্রুস। ৩ বলে ৭ রানে অপরাজিত থাকেন শুভাগত হোম। খুলনার হয়ে ৪ ওভারে ২৭ রান দেয়ে ১ উইকেট নেন পারনেল।
রান তাড়ায় নেমে প্রথম দুই ওভারে ১২ রান করে খুলনা। তৃতীয় ওভারে গিয়ে তারা হারায় প্রথম উইকেট। ৮ বলে ৬ রান করে বিলাল খানের শিকার হন ৮ বলে ৬ রান করা পারভেজ হোসেন ইমন। এরপর শাই হোপের সঙ্গে জুটি গড়েন অধিনায়ক এনামুল হক বিজয়।
৩৫ বলে ৫৪ রানের ওই জুটি ভাঙার পর আর কেউ দলের হাল ধরতে পারেননি। ২৪ বলে ৩৫ রান করার পর শহিদুলের বলে রোমারিও শেফার্ড দুর্দান্ত ক্যাচ ধরে বিজয়কে ফেরান। ওই ওভারেই ভুল বোঝাবুঝিতে রান আউট হয়ে যান ৩ বলে ৬ রান করা লুইস।
পরের ওভারেই শুভাগত নিজের বলে নিজেই ক্যাচ নেন শাই হোপের। আগের বলে তাকে ছক্কা হাঁকিয়েছিলেন হোপ। এরপর তাকে ফিরতে হয় ২১ বলে ৩১ রান করে। তার বিদায়ের পর ভেঙে পড়ে খুলনার ব্যাটিং লাইন-আপ।