দাদার মৃত্যু সইতে না পেরে ফাঁস দিল নাতি

দাদার মৃত্যু সইতে না পেরে ফাঁস দিল নাতি

দাদার মৃত্যুর শোক সইতে না পেরে রাজধানীর লালবাগে উম্মে হাবিবা সুমা (১৫) নামে এক কিশোরী ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। সে হাজারীবাগ গার্লস স্কুলের নবম শ্রেণির ছাত্রী ছিল।

বুধবার (১৬ ফেরুয়ারি) এ তথ্য নিশ্চিত করেছে সংশ্লিষ্ট থানা পুলিশ।

বৃহস্পতিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) দিবাগত রাত ১১টার দিকে সুমার দাদা আব্দুল খালেকের (৭২) মৃত্যু হলে এর ঘণ্টাখানেক পর নিজের রুমের দরজা বন্ধ করে ফাঁস দেয় হাবিবা। স্বজনরা দেখতে পেয়ে দরজা ভেঙে তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসলে চিকিৎসক রাত ২টার দিকে তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

বরিশাল মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার হাসানপুর গ্রামের সুমন মিয়ার মেয়ে সুমা। পরিবারের সঙ্গে লালবাগ থানাধীন নবাবগঞ্জ ডুরি আঙ্গুল লেন বড় মসজিদের পেছনের একটি বাড়ির দ্বিতীয় তলায় ভাড়া থাকতো।

তার চাচা মো. রুমন জানান, তার বাবা অর্থাৎ সুমার দাদা আব্দুল খালেক দীর্ঘদিন ধরে শ্বাসকষ্টের রোগী ছিলেন। ঢাকা মেডিকেলেও দীর্ঘ ১৫ দিন ভর্তি থেকে চিকিৎসা নিয়েছেন। এরপর গত সপ্তাহে তাকে হাসপাতাল থেকে বাসায় নিয়ে যাওয়া হয়। সুমাকে খুবই ভালোবাসতেন তার দাদা। এজন্য সুমাও তার দাদাকে অনেক যত্ন করতো। সুমা নিজেই সময় মতো দাদাকে ওষুধ সেবন করাতো, খাবার খাইয়ে দিত, গোসল করিয়ে দিত। সব সময় দাদার আশপাশে থাকতো।

বৃহস্পতিবার রাত ১১টার দিকে বাসায় মারা যান দাদা আব্দুল খালেক। এরপরেই কান্নায় ভেঙে পড়ে সুমা। দাদার লাশের পাশে বসে কোরআন তেলাওয়াত করে। ঘণ্টাখানিক পর সে সেখান থেকে তার রুমে চলে যায়। পরবর্তীতে পরিবারের লোকজন কোনো কাজের জন্য তার রুমে ঢুকতে গেলে দরজা ভেতর থেকে বন্ধ দেখতে পায়। তখন তাকে ডাকাডাকি করেও কোন সারাশব্দ মেলে না। এতেই সন্দেহ হয় তাদের। সঙ্গে সঙ্গে দরজায় ভেঙে ভিতরে ঢুকে দেখেন ফ্যানের সাথে ওড়না পেঁচিয়ে ফাঁস লাগিয়ে ঝুলছে সুমা। দ্রুত তাকে সেখান থেকে নামিয়ে ঢাকা মেডিকেলের জরুরি বিভাগে নিয়ে যান। তবে চিকিৎসক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

চিকিৎসকের বরাত দিয়ে তার মৃত্যু বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ মো. বাচ্চু মিয়া। তিনি জানান, সুমার মরদেহ হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে। 

Please Share This Post in Your Social Media

© All rights reserved © 2023 EU BANGLA NEWS