ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম বলেছেন রানা প্লাজা দুর্ঘটনার পরে পোশাক শিল্পের প্রতিষ্ঠানিক কাঠামো আরও বেশি শক্তিশালী হয়েছে।
তিনি জানান, সেই সময়টা আমরা সবাই সম্মিলতভাবে এক হয়ে কাজ করেছি। রাজনীতিবিদ, সরকার, উদ্যোক্তা, শ্রমিক, গণমাধ্যম, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী থেকে শুরু করে সমাজের সর্বস্তরের সবাই এক হয়ে রানা প্লাজার মতো দুর্ঘটনার সময় আমরা কাজ করেছি।
সম্প্রতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় প্রশাসন ইন্সটিটিউটের (আইবিএ) প্রফেসর এম শফিউল্লাহ অডিটোরিয়ামে “দ্য রানা প্লাজা এক্সপেরিয়েন্স: ইনসুরিং ওয়েলবিয়িং অ্যান্ড ট্রান্সফর্মিং দ্য আরএমজি ইন্ডাস্ট্রি” বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন: সেই দুর্ঘটনার কারণে আমাদের সামনে অনেক চ্যালেঞ্জ তৈরি হয়, আমি সেই চ্যালেঞ্জ জয় করার মাধ্যমে এখন বিশ্বের শীর্ষ পোশাক রপ্তানিকারক দেশের মধ্যে অন্যতম। আমাদের সামগ্রিক অগ্রগতি হচ্ছে, আমরা সেই অগ্রগতিকে আরও গবেষণার মাধ্যমে সামনে এগিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করছি।
বইটি সম্পাদনা করেছেন ব্যবসায় প্রশাসন ইন্সটিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক মোহাম্মদ এ মোমেন ও অধ্যাপক ড. সৈয়দ ফারহাত আনোয়ার। বইয়ের গবেষণা কার্যক্রমের সমন্বয় করেন আইবিএর সহযোগী অধ্যাপক খালেদ মাহমুদ ও প্রভাষক ফাতেমাতুজ যাহরা সাকি। রানা প্লাজা দুর্ঘটনার সময় যারা নিহত হয়েছেন এবং যারা আহত হয়েছেন তাদের জন্য এই বইটি উৎসর্গ করা হয়েছে।
বইটিতে তৈরি পোষাক শিল্পের ইতিহাস, রানা প্লাজা দুর্ঘটনার সময় অস্থিরতা, পুনরুদ্ধার প্রক্রিয়া এবং পরবর্তীতে নানান কাজের বিস্তারিত তুলে ধরা হয়েছে। এই গবেষণার জন্য ২৭টি সাক্ষাৎকার গ্রহণ করা হয়। বইটিতে ক্রেতা, বিদেশী ব্র্যান্ড, সাংবাদিক, শ্রমিক সংগঠন, পোশাক কর্মী, সরকারী সংস্থা, গণমাধ্যম, প্রত্যক্ষদর্শী, ফটোসাংবাদিক এবং ভুক্তভোগীসহ বিভিন্ন স্টেকহোল্ডারদের প্রতিক্রিয়া বিশ্লেষণ করা হয়েছে। ৩৬ জন আহতের সাক্ষাৎকার নেয়া হয়েছে।
আইবিএর গবেষকেরা ১০০টি কারখানা থেকে বিভিন্ন স্তরের ৫০০ জন কর্মীর উপরে জরিপ করে। জরিপ থেকে জানা যায়, ৯৩% শ্রমিক কমপক্ষে ৫ বছর শিল্পে কাজ করতে আগ্রহী। ৯১.২% কর্মী উল্লেখ করেন যে তারা সময়মত বোনাস পান। ৯৪.৪% কর্মী তাদের কাজ নিয়ে সন্তুষ্ট। অংশগ্রহণকারী ৮০% শ্রমিক তাদের বেতন নিয়ে সন্তুষ্ট। টয়লেট স্যানিটেশন, লাঞ্চ আওয়ার এবং ক্যান্টিন, বিশুদ্ধ পানীয় জল, পরিবহন সুবিধার মতো কর্মক্ষেত্রের সুবিধাগুলির বিষয়ে প্রায় ৯৫% কর্মীদের নিরপেক্ষ থেকে উচ্চ সন্তুষ্টি সম্পর্কে জানিয়েছেন। ৪% কর্মী কর্মক্ষেত্রে কোনো আঘাতের সম্মুখীন হননি। ৮৪.২% শ্রমিক তাদের কর্মক্ষেত্রে নিরাপদ বোধ করেন। গড়ে ৭৫% কর্মী বেতন নিয়ে মাতৃত্ব এবং অসুস্থতার ছুটি পান। ৬৯.৪% তাদের কর্মস্থল থেকে ফায়ার ড্রিল প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছেন।