৫ শতাংশ হারে প্রবৃদ্ধি হলেও ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশ ট্রিলিয়ন ডলারের অর্থনীতি হবে। করোনা মহামারি বা যুদ্ধ পরিস্থিতির মতো সংকটময় পরিস্থিতি উদ্ভুত না হয় এবং সম্ভাবনাকে সঠিকভাবে কাজে লাগানো যায় তাহলে আগামী ২০৩০ সালের মধ্যেই বাংলাদেশের অর্থনীতি ট্রিলিয়ন ডলারকে স্পর্শ করবে বলে মনে করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. আতিউর রহমান।
বুধবার (২৪ জানুয়ারি) রাজধানীর একটি হোটেলে ট্রিলিয়ন ডলারের বাংলাদেশের অর্থনীতি, সম্ভাবনা ও চ্যালেঞ্জ শীর্ষক বক্তৃকা অনুষ্ঠানে মূল বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ফরেন ইনভেস্টমেন্ট চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এফআইসিসিআই) সভাপতি জাভেদ আক্তার।
আতিউর রহমান বলেন, বাংলাদেশে গত ৫০ বছরে বিস্ময় অগ্রগতি হয়েছে। কিন্তু সামনে অনেক দূর যেতে হবে। এটা সম্ভব হবে যদি আমাদের অর্থনীতিকে আরও সবুজ করি, আরও অন্তর্ভুক্তিমূলক করি এবং আমাদের মুদ্রানীতি ও রাজস্ব নীতির মধ্যে সমন্বয় করি, যদি ভরসার পরিবেশ তৈরি করতে পারি।
তিনি বলেন, এ মূহূর্তে সামষ্টিক অর্থনীতিতে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনা সব চেয়ে জরুরি কাজ। এ জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো বৈদেশিক বিনিয়োগ।
বাংলাদেশের পরিশ্রমী মানুষ, তরুণ উদ্যোক্তা অনেক আশায় বুক বেঁধে বসে আছে। তারা নতুন সময়ে নতুন বাংলাদেশ গড়ে তুলবে। এ ভরসা যদি আমরা দিতে পারি তাহলে নিশ্চয়ই বাংলাদেশ জোর কদমে এগিয়ে যাবে। ২০৪০ সালে বাংলাদেশের অর্থনীতি ট্রিলিয়ন ডলারের অর্থনীতিতে পরিণত হবে।
তিনি বলেন, টেকসই উন্নয়নের পেছনে কাজ করে বহুমাত্রিক অর্থনৈতিক-সামাজিক রীতি পদ্ধতি। আগামীতে উৎপাদনের ওপর জোর দিতে হবে। আমাদের অর্থনীতির তিন ভিত্তির অন্যতম রপ্তানিকে তৈরি পোশাকের অবস্থান ধরে রেখে রপ্তানি বহুমুখি করতে হবে। এ ক্ষেত্রে অদক্ষ শ্রমিক নির্ভরতা কাটিয়ে দক্ষ শ্রমিক বিদেশে পাঠানো, কৃষিকে যন্ত্রায়নের চলমান ধারাকে অব্যাহত রাখার পাশাপাশি আরও গতিশীল করতে হবে। একই সময়ে অন্তর্ভুক্তিমূলক অর্থায়ন, নারীর ক্ষমতায়ন ও শতভাগ বিদ্যুতায়নের আওতা নিশ্চিত করতে হবে।
বিনিয়োগের পরিবেশ উন্নত করতে তাগিদ দিয়ে আতিউর রহমান বলেন, চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের জন্য মানব সম্পদের উন্নতি করতে হবে। এ জন্য বিনিযোগ বাড়াতে হবে। উদ্ভাবন এবং প্রযুক্তির প্রতি প্রতিশ্রুতি এবং জলবায়ু-বান্ধব বিনিয়োগে মনোযোগ দিতে হবে।
জাভেদ আখতার বলেন, বাংলাদেশ বড় ধরনের অর্থনৈতিক মন্দার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু আমরা মন্দার কাছে দমে যাইনি, উদ্বিগ্নও নই। মন্দাকে মোকাবিলা করেই আমরা আমাদের সুযোগগুলোকে কাজ লাগাতে চাই। অর্থনৈতিক এবং ব্যবসায়ীক সুযোগগুলো কাজে লাগানোর মধ্যেই আমাদের পথ নকশা তৈরি করে এগোতে হবে। আমরা সেভাবেই এগোচ্ছি। আগামীতে এ যাত্রা আর গতিময় হবে। যা দেশকে সঠিক অর্থনৈতিক গতিপথে ফিরিয়ে আনতে আমাদের সেরা পদক্ষেপটি রচিত হবে।
অনুষ্ঠানে দেশে বিনিয়োগকারীর বিভিন্ন দেশের উদ্যোক্তারা ছিলেন। এছাড়া উপস্থিত ছিলেন আন্তর্জাতিক বিভিন্ন অর্থলগ্নিকারীর প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা।