মৃত্যুর পর যথাযথ ধর্মীয় অনুশাসন মেনেই দাফন করা হয়েছিল রাজশাহীর বাঘা উপজেলার অধিবাসী সুকোদা বেওয়ার লাশ। কিন্তু দাফনের পরদিনই ওই বৃদ্ধার লাশ আর কবরে পাওয়া যায়নি!
অনেক খোঁজাখুঁজির পর ওই বৃদ্ধার লাশ পাওয়া যায় কবরস্থানের পাশে থাকা একটি বাঁশঝাড়ের ভেতর।পরে সেখান থেকে তুলে নিয়ে এসে নতুন করে আবারও কাফন পড়িয়ে তার লাশ দাফন করা হয়।
ধারণা করা হচ্ছে- কুসংস্কারের শিকার কোনো ব্যক্তি জাদুটোনা করার অসৎ উদ্দেশে দাফনের এক দিন পর ওই বৃদ্ধার লাশ কবর থেকে ওঠায়। পরে কাফনের কিছু অংশ চুরি করে লাশ ওভাবেই ফেলে পালিয়ে যায়।
শনিবার (২০ জানুয়ারি) রাজশাহীর বাঘা উপজেলার আড়ানী পৌরসভার চকরপাড়া কবরস্থানে চাঞ্চল্যকর এ ঘটনা ঘটে। মৃত সুকোদা বেওয়া ওই উপজেলার আড়ানী চকরপাড়া গ্রামের মৃত ছলেমান হোসেনের স্ত্রী।
এর আগে সুকোদা বেওয়া (৯০) বৃহস্পতিবার (১৯ জানুয়ারি) দুপুরে বার্ধক্যজনিত কারণে মারা যান। বাদ আসর জানাজা শেষে তার লাশ পারিবারিকভাবে চকরপাড়া কবরস্থানে দাফন করা হয়।
শনিবার (২০ জানুয়ারি) ফজরের নামাজ পড়ে তার মেজ ছেলে জমির উদ্দিন মায়ের কবরের কাছে যান। এ সময় কবরে দেওয়া বাঁশ উল্টানো ও মাটি খোঁড়া দেখতে পেয়ে তিনি বিচলিত হয়ে পড়েন। তিনি বিষয়টি তখনই স্থানীয়দের জানালে এ নিয়ে গ্রামে হইচই পড়ে যায়।
পরে কবর থেকে প্রায় ৩০০ মিটার উত্তর দিকে থাকা একটি বাঁশঝাড়ের মধ্যে তার মায়ের লাশ পড়ে থাকতে দেখেন। তবে যে কাফন দিয়ে তাকে দাফন করা হয়েছিল, কবরের মধ্যে বা লাশের শরীরে সেই কাফন ছিল না।
মোট পাঁচ টুকরো কাফনের মধ্যে বড় দুই টুকরা কাফনই কেউ চুরি করে নিয়ে গেছে বলে দাবি করছেন তার ছেলেরা। পরে বাজার থেকে আবারও কাফন কিনে শনিবার দুপুরে ওই কবরেই তাকে ফের দাফন করা হয়।
বাঘার আড়ানী পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর চকরপাড়া গ্রামের লিটন হোসেন বলেন, বৃদ্ধার মৃত্যুর তিন বছর আগে তার স্বামী মারা গেছেন। সুকোদা বেওয়া মারা যাওয়ার পর তারা সবাই মিলেই গ্রামের কবরস্থানে ওই বৃদ্ধার লাশ দাফন করেন। কিন্তু আজ শনিবার সকালে গিয়ে দেখেন- ওই কবরে তার লাশ নেই। আশপাশ খুঁজে পরে বাঁশঝাড়ের ভেতরে তার লাশ খুঁজে পাওয়া যায়। কিন্তু লাশের সঙ্গে জড়ানো আগের সেই কাফন আর পাওয়া যায়নি। বাজার থেকে নতুন কাফনের কাপড় এনে পড়িয়ে সুকোদা বেওয়ার লাশ আবারও দাফন করা হয়।