যশোরের বেনাপোলে থেকে কমলাপুর রেলস্টেশনে ফেরার সময় দুষ্কৃতকারীদের শিকার বেনাপোল এক্সপ্রেসে ট্রেনটির চ-বগিতে আগুনের সূত্রপাত হয়েছিল বলে ধারণা করা হচ্ছে কেননা, ওই বগিতেই প্রথম ধোঁয়া দেখা যায়। আগুন নির্বাপণ করতে ট্রেনটি থামাতে চেন টেনে ধরেছিলেন পুলিশের এক সদস্য।কমলাপুর ঢোকার আগে রাজধানীর গোপীবাগ এলাকায় ট্রেনটি থামে ঠিকই। কিন্তু পুড়ে যায় চ-বগিসহ পুড়ে গেছে আরও তিনটি।
শনিবার (৬ জানুয়ারি) বিকেলে বাংলানিউজকে এসব কথা বলেন ঢাকা রেলওয়ে জেলার পুলিশ সুপার (এসপি) আনোয়ার হোসেন। তিনি বলেন, বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনের চ-বগির মাঝামাঝি স্থানে বসার আসনের বাঁ পাশে প্রথমে আগুনের ধোঁয়া দেখতে পান যাত্রীরা। সঙ্গে সঙ্গে ওই ট্রেনে দায়িত্বে থাকা এক পুলিশ সদস্য চিৎকার করে আগুনের সংবাদ দিতে থাকেন এবং চলন্ত ট্রেনটি থামার জন্য চেন টান দেন। আর তিন চার মিনিট সময় হলে ট্রেনটি কমলাপুর রেলস্টেশনে প্রবেশ করে যেত।
ট্রেনের চেন টানা ও চিৎকার করে যাত্রীদের আগুনের ঘটনা জানিয়ে সতর্ক করা পুলিশ সদস্যের নাম মোহাম্মদ আলী। তিনি ও ট্রেনে থাকা অনেক যাত্রীর সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য নিশ্চিত হয়েছেন এসপি আনোয়ার। তিনি বলেন, পুলিশ কনস্টেবল মোহাম্মদ আলী যাত্রীদের রক্ষা করতে ‘আগুন আগুন’ বলে সতর্ক করেন। তিনি যাত্রীদের ট্রেন থেকে বের করে দিতে চেষ্টা করেন। ধীরগতির বেনাপোল এক্সপ্রেসকে থামাতে তিনি চেনও টান দেন। আগুনে আলী আহত হয়েছেন। তার পায়ে থাকা বুট জুতা জোড়াও গলে গেছে।
ঢাকা রেলওয়ে জেলার পুলিশ সুপার বলেন, বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনের নিরাপত্তায় সাতজন কাজ করছিলেন। তাদের মধ্যে পাঁচ পুলিশ সদস্য ছিলেন, বাকিরা আনসার সদস্য। আগুনের ঘটনায় মামলা প্রক্রিয়াধীন বলেও তিনি জানান।
শুক্রবার রাতে ট্রেন থেকে যে চারজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে তাদের সনাক্ত করা সম্ভব হচ্ছে না। ঢাকা রেলওয়ে থানার (কমলাপুর) ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফেরদাউস আহমেদ বিশ্বাস বলেন, নিহতদের মরদেহ একদম পোড়া। সরাসরি সনাক্তের অবস্থায় নেয়। ডিএনএর নমুনা ক্রস ম্যাচ করেই স্বজনদের কাছে মরদেহ হস্তান্তর করা হবে।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সূত্রে জানা গেছে, বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনে লাগা আগুনের ঘটনায় নিহতদের ময়নাতদন্ত চলছে।
উল্লেখ্য, শুক্রবার রাত নয়টার দিকে চলন্ত ট্রেনটিতে দুর্বৃত্তরা আগুন দেয় বলে ধারণা করা হচ্ছে। সায়দাবাদ এলাকা অতিক্রম করার সময় আগুনের ঘটনাটি ঘটনায় দুর্বৃত্তরা। আগুনে দুই নারী, এক শিশুসহ অন্তত চারজনের মৃত্যু হয়েছে। ট্রেনটির চারটি বগিতে আগুন লাগে, তবে একদম পুড়ে গেছে তিনটি।