বগুড়া শহীদ চান্দু ক্রিকেট স্টেডিয়াম ভেন্যু ফিরিয়ে দেওয়ার দাবিতে কাফনের কাপড় ও শিকল পরে দুই দফা আমরণ অনশন করে আলোড়ন সৃষ্টিকারী ফেসবুক কনটেন্ট ক্রিয়েটর হুমায়ুন আহমেদ রুমেল মারা গেছেন। বৃহস্পতিবার সকালে শহরের নাটাইপাড়ার বাড়িতে তিনি স্ট্রোক করে মারা যান।
ঈদের পর বগুড়া বিমানবন্দর চালুর দাবিতে অনশন কর্মসূচি শুরুর সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন।
জানা গেছে, ফেসবুক কনটেন্ট ক্রিয়েটর হুমায়ুন আহমেদ রুমেল বগুড়া শহরের নাটাইপাড়ার বীর মুক্তিযোদ্ধা মৃত জালাল উদ্দিনের ছেলে। চাকরির কারণে তিন ভাই বগুড়ার বাইরে থাকেন। রুমেল নাটাইপাড়ায় তার মায়ের সঙ্গে থাকতেন।
তিনি বুধবার রাত ১১টা ৪২ মিনিটে ‘চ্যানেল বগুড়া’ নামে ফেসবুক আইডিতে লেখেন- ‘জীবনের প্রথম স্মৃতি ও জীবনের শেষ স্মৃতি প্রতিটি মানুষের জন্য গুরুত্বপূর্ণ’!!!।
মঙ্গলবার রাত সোয়া ১২টার দিকে একই আইডিতে লেখেন- ‘বগুড়ার বিমানবন্দর চালু করার দাবিতে সিসি ক্যামেরার সামনে আমরণ অনশন করার প্রস্তুতি নিচ্ছি। ঈদ পার হলেই শুরু হবে আন্দোলন।’
জেলা ক্রীড়া সংস্থার অসহযোগিতাসহ নানা অভিযোগে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) কর্তৃপক্ষ গত ১ মার্চ বগুড়া শহীদ চান্দু স্টেডিয়াম থেকে লোকবল প্রত্যাহার ও ভেন্যু বাতিল করে। হুমায়ুন আহমেদ রুমেল লোকবল প্রত্যাহার ও ভেন্যু বাতিলের প্রতিবাদ এবং বগুড়া জেলার উন্নয়নের দাবিতে কাফন ও শিকল পড়ে শহরের সাতমাথায় অনশন শুরু করেন।
৮ মার্চ পর্যন্ত প্রায় ৮০ ঘণ্টা অনশন করেন। বগুড়া জেলা ক্রীড়া সংস্থার আশ্বাসে তিনি ১৮ মার্চ পর্যন্ত কর্মসূচি স্থগিত করেন। বিষয়টি জানাজানি হলে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হয়। দাবি পূরণ না হওয়ায় রুমেল ১৮ মার্চ সকালে একই দাবিতে আবারো অনশন কর্মসূচি শুরু করেন। ওই দিন বিকালে বগুড়ায় সফররত সাংস্কৃতিক প্রতিমন্ত্রী কেএম খালিদের গাড়িবহরের সামনে দাঁড়িয়ে দাবি জানান। তখন প্রতিমন্ত্রী এ ব্যাপারে আশ্বাস ও পানি খাইয়ে তার অনশন ভঙ্গ করান।
স্বজন ও প্রতিবেশীরা জানান, রুমেল অ্যাজমা রোগে ভুগছিলেন। প্রচণ্ড গরমের কারণে বৃহস্পতিবার ভোর থেকে তিনি অসুস্থবোধ করছিলেন। সকালে তার শারীরিক অবস্থার আরও অবনতি ঘটে।
রুমেলের খালাতো বোন রুমি বেগম জানান, হাসপাতালে নেওয়ার প্রস্তুতিকালে তিনি মারা যান। তার ধারণা গরম সহ্য করতে না পেরে রুমেল হিটস্ট্রোকে মারা গেছেন। বাদ জোহর জানাজা শেষে তার মরদেহ স্থানীয় কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে।