দক্ষিণ এশীয় দেশগুলোকে একযোগে কাজ করার আহ্বান পরিবেশ উপদেষ্টার

দক্ষিণ এশীয় দেশগুলোকে একযোগে কাজ করার আহ্বান পরিবেশ উপদেষ্টার

বিশ্বব্যাপী অস্থিতিশীলতা যখন নতুন বাস্তবতা হয়ে দাঁড়িয়েছে, ঠিক সেই সময়ে দক্ষিণ এশীয় দেশগুলোর প্রতি আস্থা পুনর্গঠন, আঞ্চলিক সংযোগ জোরদার এবং যৌথ উদ্যোগ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।

মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) পাকিস্তানের ইসলামাবাদে সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট পলিসি ইনস্টিটিউটের (এসডিপিআই) বার্ষিক সম্মেলনের উদ্বোধনী অধিবেশনের ‘উদীয়মান বিশ্বে টেকসই উন্নয়ন’ অতিথি হিসেবে বক্তব্যে তিনি এ আহ্বান জানান।

পরিবেশ উপদেষ্টা বলেন, বায়ুদূষণ, প্লাস্টিক দূষণ, পানি নিরাপত্তা ও জলবায়ু বিপর্যয়ের মতো যৌথ সংকট মোকাবেলায় দক্ষিণ এশিয়াকে এখনই সম্মিলিতভাবে এগিয়ে আসতে হবে। পরিবেশ সুরক্ষা ও উন্নয়ন-দুটি একে অপরের বিকল্প নয়। ভবিষ্যৎ উন্নয়নের কেন্দ্রে থাকতে হবে টেকসই উন্নয়নকে। নদী শাসন, ন্যায্য পানি বণ্টন এবং প্লাস্টিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় আঞ্চলিক সহায়তা জোরদারের ওপরও তিনি গুরুত্বারোপ করেন।

তিনি বলেন, দক্ষিণ এশিয়া ইতোমধ্যে ঘনঘন বন্যা, ঘূর্ণিঝড়, তাপপ্রবাহসহ আকস্মিক দুর্যোগের পাশাপাশি লবণাক্ততা বৃদ্ধি, মাটির উর্বরতা হ্রাস ও কৃষি উৎপাদন কমে যাওয়ার মতো ধীরগতির জলবায়ু বিপর্যয়ের মুখোমুখি। বাংলাদেশ একাই তার জাতীয় অভিযোজন পরিকল্পনা বাস্তবায়নে প্রয়োজন ২৩০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার-যা বৈশ্বিক জলবায়ু অর্থায়নের ঘাটতি স্পষ্ট করে। 
‘যদি অর্থ না-ও আসে, আমরা অপেক্ষা করে থাকব না। আমাদের জাতীয় ও আঞ্চলিকভাবে প্রস্তুত থাকতে হবে,’ বলেন তিনি।

সম্মেলনের বিষয়বস্তুকে সময়োপযোগী ও গভীরতাসম্পন্ন উল্লেখ করে উপদেষ্টা বলেন, শাসনব্যবস্থার নিয়মভিত্তিক আন্তর্জাতিক কাঠামো আজ সংকটে; বহুপাক্ষিকতা দুর্বল হচ্ছে; বৈষম্য, ভূ-রাজনৈতিক প্রতিযোগিতা ও জলবায়ু পরিবর্তন বিশ্বব্যবস্থাকে নতুনভাবে গঠন করছে।

তিনি বলেন, শ্রীলঙ্কা থেকে নেপাল পর্যন্ত জনগণের বিক্ষোভ প্রমাণ করে বর্তমান শাসন মডেল জনআকাঙ্ক্ষা পূরণে ব্যর্থ। তবে তিনি নতুন প্রজন্মের প্রতি আস্থা রেখে বলেন, তারা যুক্ত, সচেতন এবং সহজে প্রভাবিত হয় না-তাদের হাতেই তৈরি হচ্ছে নতুন বিশ্বব্যবস্থা।

সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন পাকিস্তান সরকারের পরিকল্পনামন্ত্রী প্রফেসর আহসান ইকবাল, জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়ক মোহাম্মদ ইয়াহিয়া, জাপানের আইজিইএস প্রেসিডেন্ট প্রফেসর কাজুহিকো তাকেওচি, পাকিস্তানে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার মো. ইকবাল হোসেন খান, এনডিসি, এসডিপিআই চেয়ারম্যান অ্যাম্বাসাডর শফকত কাকাখেল, এসডিপিআই নির্বাহী পরিচালক ড. আবিদ কাইয়ুম সুলেরি এবং এআইওইউ-এর ড. ইরশাদ আহমদ আরশাদ।

Please Share This Post in Your Social Media

© All rights reserved © 2023 EU BANGLA NEWS