পাপ এবং প্রতিশোধের এক ভয়ংকর গল্প আসছে স্টার সিনেপ্লেক্সের পর্দায়

পাপ এবং প্রতিশোধের এক ভয়ংকর গল্প আসছে স্টার সিনেপ্লেক্সের পর্দায়

ইন্দোনেশিয়ার একটি অতিপ্রাকৃত ভৌতিক সিনেমা ‘কিতাব সিজ্জিন দান ইল্লিয়িন’। গত জুলাইয়ে ইন্দোনেশিয়ায় মুক্তির পর বেশ আলোচনা তৈরি করে সিনেমাটি। এরপর আন্তর্জাতিকভাবে মুক্তি পায় ২৫ সেপ্টেম্বর। দর্শক-সমালোচকদের কাছ থেকে ভালো সাড়া পাওয়া ছবিটি এবার আসছে বাংলাদেশের পর্দায়। ৩১ অক্টোবর স্টার সিনেপ্লেক্সে মুক্তি পাবে এটি। ইন্দোনেশিয়ান নির্মাতা হাদ্রা দায়েং রাতু পরিচালিত এ ছবিতে অভিনয় করেছেন ইউনিতা সিরেগার, দিন্দা কান্যদেবী প্রমুখ।

ধর্মীয় বিশ্বাস, মানব-পাপ এবং প্রতিশোধকে ঘিরে নির্মিত এক ভয়ংকর আধ্যাত্মিক গল্পের সিনেমা ‘কিতাব সিজ্জিন দান ইল্লিয়িন’। এটি এমন এক নারীর গল্প যে বছরের পর বছর অপমান সহ্য করার পর তার পরিবারের ওপর প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য কালো জাদু ব্যবহার করে। অভিশাপের ফলে পরিবারটি ভয়াবহ পরিস্থিতির সম্মুখীন হওয়ার চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। ‘সিজ্জিন’ হলো পাপীদের জন্য একটি কারাগার এবং ‘ইল্লিয়িন’ ধার্মিকদের জন্য একটি স্থানের ইসলামী ধারণাগুলোকে নির্দেশ করে, যা চলচ্চিত্রের ধর্মীয় এবং অন্ধকার জাদুর বিষয়বস্তুর দিকে ইঙ্গিত করে।

গল্পের কেন্দ্রীয় চরিত্র ইউলি নামের এক যুবতী, যার জীবন শুরু থেকেই বেদনা ও অন্যায়ের সঙ্গে জড়িত। ছোটবেলায় তার মা রহস্যজনকভাবে মারা যান, আর তার বাবা তাকে ছেড়ে যায়। একসময় সে এক ধনী পরিবারের বাসায় গৃহপরিচারিকা হিসেবে কাজ নেয় কিন্তু সেই বাড়িতেই তার শৈশবের ভয়ংকর স্মৃতির ছায়া আছে। ইউলি কাজ শুরু করার পর থেকেই বাড়িতে অদ্ভুত সব ঘটনা ঘটতে থাকে। যেমন-অদ্ভুত শব্দ, মাঝরাতে ছায়ামূর্তি দেখা, পরিবারের সদস্যদের ওপর অজানা অসুস্থতা বা পাগলামির লক্ষণ। 

প্রথমে সবাইভাবে, ইউলি হয়তো অভিশপ্ত বা মিথ্যা কথা বলছে। কিন্তু ধীরে ধীরে বোঝা যায় বাড়িটির ইতিহাসে এক ভয়ানক অতীত আছে, যা এক কালা জাদুর সঙ্গে জড়িত। পরিবারটি দীর্ঘদিন আগে ইউলির মাকে অপমান ও কষ্ট দিয়েছিল। ইউলি নিজের চোখে তার মায়ের প্রতি হওয়া অন্যায় দেখেছিল। বড় হয়ে সেই ক্ষতই তাকে প্রতিশোধপরায়ণ করে তোলে। এক রহস্যময় জাদুকরের কাছ থেকে সে শিখে নেয় অভিশাপ প্রয়োগের রীতি, যা মানুষের আত্মাকে সিজ্জিন নামের বইতে বন্দি করে ফেলে। অর্থাৎ, যার আত্মা সেখানে যায়, সে আর মুক্তি পায় না। 

অন্যদিকে ইল্লিয়িন হলো তার বিপরীত সৎ ও আলোকিত আত্মাদের জন্য স্বর্গীয় রেকর্ড। এ দুই বই আসলে ইসলামী বিশ্বাসের ধারণা থেকে নেওয়া, যেখানে মানুষের কর্মফল লিখিত থাকে। ইউলি যখন অভিশাপ প্রয়োগ করে, পরিবারের সদস্যরা একে একে ভয়ংকর মৃত্যুর সম্মুখীন হতে থাকে। বাড়িটি এক অদৃশ্য অন্ধকার শক্তির কবলে পড়ে। আকাশে ছায়া ঘোরে, দেয়ালে রক্তের দাগ, আয়নায় মুখবিহীন প্রতিচ্ছবি দেখা যায়, আর রাতে কারো কান্নার শব্দ শোনা যায়। ইউলির মনেও তখন দ্বন্দ্ব শুরু হয়, সে কি সত্যিই প্রতিশোধ নিচ্ছে নাকি নিজেই শয়তানের খেলায় বন্দি হয়ে পড়েছে?

শেষদিকে দেখা যায়, ইউলির আত্মা আসলে সিজ্জিন-এর বইয়ে আটকে যাচ্ছে। অর্থাৎ সে যে শক্তি ব্যবহার করেছিল, সেটিই তাকে গ্রাস করছে। ছবিটি ইন্দোনেশিয়ার হরর-শৈলীর মধ্যে ধর্মীয় ও মিথিক্যাল উপাদান যুক্ত করার প্রচেষ্টা করেছে। কানাডার ফ্যান্টাসিয়া উৎসবে পরিচালক হাদ্রা দায়েং রাতু এ ছবির জন্য শ্রেষ্ঠ পরিচালকের পুরস্কার পেয়েছেন।

Please Share This Post in Your Social Media

© All rights reserved © 2023 EU BANGLA NEWS