মালয়েশিয়ায় জনশক্তি রপ্তানির সিন্ডিকেটের অন্যতম সদস্য নাফিসা কামালের অরবিটালস ইন্টারন্যাশনালসহ আট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মানিলন্ডারিং (অর্থপাচার) প্রতিরোধ আইনে মামলা করেছে সিআইডি। প্রতারণাপূর্বক প্রায় ৩৩ কোটি ৪৪ লাখ টাকা মানিলন্ডারিংয়ের অভিযোগে গুলশান (ডিএমপি) থানায় এই মামলা হয়েছে।
সোমবার (২৭ অক্টোবর) সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দীন খান এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
অনুসন্ধানে জানা যায়, নাফিসা কামাল ও তার জনশক্তি রপ্তানি প্রতিষ্ঠান অরবিটালস ইন্টারন্যাশনাল ও কতিপয় সহযোগী সিন্ডিকেট সদস্য ইরভিং এন্টারপ্রাইজের স্বত্ত্বাধিকারী হাফিযুল বারী মোহাম্মদ লুৎফর রহমান, আমান এন্টারপ্রাইজের স্বত্ত্বাধিকারী রফিকুল ইসলাম পাটোয়ারী, আহাদ ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেডের স্বত্ত্বাধিকারী জসিম উদ্দিন আহমেদ, আক্তার রিক্রুটমেন্ট এজেন্সির স্বত্ত্বাধিকারী মো. আকতার হোসাইন, মালয়েশিয়া বাংলাদেশ হোল্ডিংস (প্রা.) লিমিটেডের স্বত্ত্বাধিকারী শিউলী বেগম, মৃধা ইন্টারন্যাশনাল কর্পোরেশনের স্বত্ত্বাধিকারী কাউসার মৃধা এবং রাব্বি ইন্টারন্যাশনালের স্বত্ত্বাধিকারী মোহাম্মদ বশির সংঘবদ্ধভাবে সরকার নির্ধারিত ফির বাইরে মোট ৩৩ কোটি ৪৪ লাখ ৬৩ হাজার ৬১০ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার প্রাথমিক তথ্য প্রমাণ পাওয়া যায়।
অনুসন্ধানে আরও জানা যায়, অভিযুক্তরা পরস্পর যোগসাজশে প্রতারণার মাধ্যমে বিগত ২০২২ হতে ২০২৪ সাল সময় পর্যন্ত মোট তিন হাজার ১১১ জন কর্মী মালয়েশিয়ায় পাঠান। এক্ষেত্রে সরকার নির্ধারিত জনপ্রতি ফি ৭৮ হাজার ৯৯০ টাকার বিপরীতে অবৈধভাবে জনপ্রতি এক লাখ ৫০ হাজার টাকা নেন তারা। এছাড়া সরকারিভাবে পাসপোর্ট খরচ, কোভিড-১৯ পরীক্ষাবাবদ, মেডিকেল ফি ও পোশাক সংক্রান্ত ফির বাইরে প্রতি কর্মীর কাছ থেকে ৩৬ হাজার ৫০০ টাকা অতিরিক্ত গ্রহণ করার তথ্য পাওয়া যায়।
সিন্ডিকেটের অন্যতম সদস্য নাফিসা কামাল ও তার জনশক্তি রপ্তানি প্রতিষ্ঠান অরবিটালস ইন্টারন্যাশনালসহ অপরাপর অভিযুক্তরা পরস্পর সংঘবদ্ধভাবে সরকার নির্ধারিত ফির বাইরে জনপ্রতি অতিরিক্ত ১ লাখ ৭ হাজার ৫১০ টাকা এবং মোট ৩৩ কোটি ৪৪ লাখ ৬৩ হাজার ৬১০ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার প্রাথমিক তথ্য প্রমাণ পাওয়া যাওয়ায় মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে মামলা দায়ের করে সিআইডি।
সিআইডি জানায়, বর্তমানে মামলাটির তদন্ত কার্যক্রম ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইম ইউনিট পরিচালনা করছে। মামলাটির তদন্ত পরিক্রমায় অভিযোগ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের নামে দেশের বিভিন্ন স্থানে স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তির সন্ধান করা হচ্ছে। অপরাধের পূর্ণাঙ্গ তথ্য উদঘাটন, অপরাপর সদস্যদের শনাক্ত ও গ্রেফতার করার স্বার্থে সিআইডির নিবিড় তদন্ত ও সাঁড়াশি অভিযান অব্যাহত থাকবে।