ধর্ষণের ভিডিও মুঠোফোনে ধারণ, নোবেলের বিরুদ্ধে আরও যেসব অভিযোগ

ধর্ষণের ভিডিও মুঠোফোনে ধারণ, নোবেলের বিরুদ্ধে আরও যেসব অভিযোগ

গায়ক মাঈনুল আহসান নোবেলকে সোমবার দিবাগত রাতে গ্রেপ্তার করেছে ডেমরা থানা-পুলিশ। তাঁর বিরুদ্ধে এক নারীকে সাত মাস ধরে একটি বাসায় আটকে রেখে ধর্ষণ ও নির্যাতনের অভিযোগ আনা হয়। আজ বিকেলে তাঁকে আদালতে হাজির করা হয়। আদালত তাঁকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

ডেমরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহমুদুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, নোবেল এক নারীকে সাত মাস ধরে একটি বাসায় আটকে রেখে ধর্ষণ ও নির্যাতন করছিলেন। জাতীয় জরুরি সেবা ‘৯৯৯’ নম্বরে কল পেয়ে বাসাটি থেকে নারীকে উদ্ধার করা হয়। রাতেই ওই নারী মামলা করলে অভিযান চালিয়ে নোবেলকে গ্রেপ্তার করা হয়।
ওসি মাহমুদুর রহমান আরও বলেন, প্রাথমিকভাবে তাঁরা জানতে পেরেছেন, গত নভেম্বরে ইডেন কলেজের এক ছাত্রীকে গুলশানে দেখা করার কথা বলে ডেকে নেন নোবেল। তাঁকে বিয়ের প্রলোভন দেখান। পরে সাত মাস ডেমরার একটি বাসায় তাঁকে আটকে রাখেন তিনি। এই সময়ে তিনি ছাত্রীকে নির্যাতন ও ধর্ষণ করেন। এসব ঘটনা নিজের মুঠোফোনে ধারণ করেন। এই ভিডিও দিয়ে ছাত্রীকে তিনি ‘ব্ল্যাকমেল’ করছিলেন।

এজাহারে বাদী উল্লেখ করেছেন, ২০১৮ সালে নোবেলের সঙ্গে পরিচয় হয় বাদীর, এরপর মুঠোফোনে প্রায় সময় কথাবার্তা হতো। গত বছরের ১২ নভেম্বর মোহাম্মদপুরে দুজনের দেখা হয়, এ সময় স্টুডিও দেখানোর কথা বলে তাঁকে ডেমরায় বাসায় নিয়ে আসেন নোবেল। সেখান থেকে বাদী চলে যেতে চাইলে নোবেল ও তাঁর সহযোগী অজ্ঞাতনামা আরও দু–তিনজন একটি কক্ষে তাঁকে আটক করে মুঠোফোন নিয়ে নেন। পরিবারের সঙ্গে কথা বলার জন্য মুঠোফোন চাইলে তা ভেঙে ফেলা হয়, যাতে বাদীর আনুমানিক ২৬ হাজার টাকার ক্ষতিসাধন হয়।

ধর্ষণ ও মারধরের অভিযোগ এনে বাদী এজাহারে আরও উল্লেখ করেন, নোবেল তাঁকে আটক রেখে ধর্ষণ এবং ধর্ষণের ভিডিও মুঠোফোনে ধারণ করে রাখেন। কথামতো বাসায় না থাকলে ধারণকৃত ধর্ষণের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকিও দেওয়া হয়। বাদী ভয়ে কাউকে কোনো কিছু বলার সাহস পাননি। এ ছাড়া নেশাগ্রস্ত অবস্থায় বিভিন্ন সময়ে বাদীকে মারপিট করতেন নোবেল। এমনকি নোবেল ও তাঁর সহযোগীদের বিরুদ্ধে বাদীকে সিঁড়ি দিয়ে চুলের মুটি ধরে টানাহেঁচড়া করে, অপর একটি কক্ষে আটক করে রাখার অভিযোগ করা হয়েছে।
সম্প্রতি এক নারীকে সিঁড়ি দিয়ে টেনে নামানোর ভিডিও ভাইরাল হয়। এ ভিডিও সূত্রেই বাদীর মা–বাবা তাঁকে চিনতে পারেন। এজাহারে বিষয়টি নিয়ে লেখা হয়, এরপর অনেক খোঁজাখুঁজি করে জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯–এ কল দিলে গতকাল (১৯ মে) রাত সাড়ে ৯টার দিকে ডেমরা থানা-পুলিশের সহায়তায় নোবেলের বাসা থেকে বাদীকে উদ্ধার করা হয়।

Please Share This Post in Your Social Media

© All rights reserved © 2023 EU BANGLA NEWS