ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে আকস্মিক অভিযান চালিয়ে অবৈধ ২১টি হুইলচেয়ার জব্দ করেছে কর্তৃপক্ষ। দীর্ঘদিন ধরে জরুরি বিভাগ চত্বরসহ হাসপাতালের চারদিকে নারীসহ কিছু বহিরাগত এসব অবৈধ হুইলচেয়ারে রোগীদের বহনের নামে অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছিল।অনেকে হুইলচেয়ারে বসিয়ে অন্য হাসপাতালে ভাগিয়ে নিচ্ছিল রোগীকে।
মঙ্গলবার (৭ মে) দুপুরের দিকে ঢামেক হাসপাতালের উপপরিচালক ডা. মো. আশরাফুল আলমের নেতৃত্বে এ অভিযান চলে। অবশ্য হুইলচেয়ারগুলো জব্দ হলেও এসবের চালকরা পালিয়ে যান।
উপ-পরিচালক আশরাফুল আলম বলেন, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল একটি জাতীয় প্রতিষ্ঠান। ঢাকাসহ সারা দেশ থেকে এখানে রোগীরা এসে চিকিৎসা নিয়ে থাকেন। অনেক লোকের সমাগম হয় এখানে। এই সুযোগে দালালরা মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে। আজকে ২১টি হুইলচেয়ার জব্দ করা হয়েছে, এর একটিও হাসপাতালের নয়। এই অভিযান চলমান থাকবে, কোনো দালালকে প্রশ্রয় দেওয়া হবে না।
অভিযানের মুহূর্তে দেখা যায়, হুইলচেয়ার নিয়ে কিছু বহিরাগত নারী জরুরি চত্বরে অবস্থান করছিলেন। কর্তৃপক্ষ তখন তাদের হুইলচেয়ারগুলো জব্দ করে। এছাড়া হাসপাতাল চত্বরের বিভিন্ন জায়গায় তালা দিয়ে রাখা হইলচেয়ারগুলোও তালা ভেঙে জব্দ করা হয়।
হাসপাতালের একটি সূত্র জানায়, এই হুইলচেয়ারের চালকরা বড়ই বেপরোয়া। দীর্ঘদিন ধরে তারা সবার সামনে দিয়েই হাসপাতালে রোগী বহনের নামে স্বজনদের জিম্মি করে মোটা অংকের অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছিল। হুইলচেয়ার চালকদের প্রধান লক্ষ্য হচ্ছে, রোগী ও তাদের স্বজনদের ফুসলিয়ে হুইলচেয়ারে নেওয়া, এরপর বাইরের কোনো হাসপাতালে নিয়ে অর্থের বিনিময় ভর্তি করা। এদের নিয়ে গণমাধ্যমে অনেক লেখালেখি হওয়ার কারণে দুই-একদিন বন্ধ থাকলেও তারপর আবার তারা বীরদর্পে হাসপাতালে রোগী বহনের অবৈধ কাজে ফিরে আসে।
সংশ্লিষ্টদের ধারণা, যারা হাসপাতালে হুইলচেয়ার বহন করে রোগী ভাগিয়ে নিয়ে যায়, তারা হাসপাতালের কিছু কর্মচারীকে অর্থ দিয়ে থাকে। অর্থাৎ ঢামেকেরই কতিপয় কর্মচারীর যোগসাজশে এই অপকর্ম হয়ে থাকে।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান জানান, আজকে হাসপাতালের জরুরি বিভাগ চত্বরসহ অন্যান্য জায়গায় অভিযান চালিয়ে মোট ২১টি হুইলচেয়ার জব্দ করা হয়েছে। হুইলচেয়ার বহনকারী কাউকে পাওয়া যায়নি। এই হুইলচেয়ারগুলো হাসপাতালের নয়।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আবারও যদি তারা কিছুদিনের মধ্যে ফিরে আসে, হাসপাতালে তাদের আর ঢুকতে দেওয়া হবে না, অভিযান চলমান থাকবে।