মাল্টি লেভেল মার্কেটিং (এমএলএম) ব্যবসার নামে লোকজনের কাছ থেকে সাড়ে ১৪ কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে পুলিশের এক নায়েকের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। তাঁর নাম টারজান খীসা। বর্তমানে তিনি বরখাস্ত হয়ে আছেন।
আজ বুধবার বিকেলে দুদক চট্টগ্রামের সহকারী পরিচালক নুরুল ইসলাম বাদী হয়ে নিজ কার্যালয়ে মামলাটি করেন।
মামলা করার বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেন দুদক চট্টগ্রামের সহকারী পরিচালক নুরুল ইসলাম। তিনি বলেন, সরকারি কর্মচারী হয়ে অসৎ উদ্দেশ্যে পরিচয় গোপন রেখে নিজেকে ব্যবসায়ী বলে পরিচয় দেন। এরপর প্রতারণা ও জালিয়াতির মাধ্যমে এমএলএম ব্যবসার নামে লোকজনের ১৪ কোটি ৬৪ লাখ ৪২ হাজার টাকা হাতিয়ে নেওয়ায় মামলা হয়েছে। লোকজনের কাছ থেকে পাঁচ মাসে দ্বিগুণ লাভের প্রতিশ্রুতি দিয়ে কোটি কোটি টাকা নেন টারজান খীসা। কিন্তু কোনো টাকাই ফেরত দেওয়া হয়নি। ওই সব টাকা ২৩টি ব্যাংক হিসাবে লেনদেনের তথ্য পাওয়া যায়।
দুদক কর্মকর্তা নুরুল ইসলাম আরও বলেন, ১৯৯৯ সাল থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত পুলিশে নায়েক পদে কর্মরত ছিলেন টারজান খীসা। বর্তমানে তিনি বরখাস্ত আছেন। লোকজনের কাছ থেকে ২০ হাজার টাকা থেকে সর্বোচ্চ ২০ লাখ টাকা পর্যন্ত নেন তিনি। মেসার্স রিবেং এন্টারপ্রাইজ নামের একটি প্রতিষ্ঠান খুলে লোকজনের কাছ থেকে নেওয়া সাড়ে ১৪ কোটি টাকা সেখানে বিনিয়োগ করেন টারজান খীসা।
প্রতি মাসে ৬ লাখ ৪ হাজার টাকা লাভ
এর আগে গতকাল মঙ্গলবার নগরের খুলশী থানায় এমএলএম ব্যবসার নামে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে আরেক পুলিশ কনস্টেবল (বরখাস্ত) মনোতোষ চন্দ্র দাসের বিরুদ্ধে মামলা করেন উজ্জ্বল দাশ গুপ্ত নামের এক ভুক্তভোগী।
মামলায় বলা হয়, নগরের পাহাড়তলী পুলিশ ফাঁড়িতে কর্মরত থাকাকালে মনোতোষ অনলাইনভিত্তিক এমএলএম ব্যবসার ফাঁদে ইতিমধ্যে কয়েক কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। পিএলসিইউএক্স ডটকম নামে তাঁর একটি অনলাইন এমএলএম ব্যবসা রয়েছে। তিনি (উজ্জ্বল) পারপেল ডায়মন্ড গ্রাহক হিসেবে যুক্ত আছেন। পিএলসিইউএক্সে কেউ ২৯ লাখ ৫০ হাজার টাকা বিনিয়োগ করলে প্রতি মাসে ৬ লাখ ৪ হাজার টাকা লাভ পাবে। চলতি বছরের ২৪ জানুয়ারি থেকে ২৭ ফেব্রুয়ারির মধ্যে তিন দফায় মনোতোষের হাতে উক্ত টাকা দেন। কিন্তু কোনো লভ্যাংশ পাননি। গত ৩০ এপ্রিল মনোতোষের কাছে টাকা ফেরত চাইলে তিনি ২৯ লাখ ৫০ হাজার টাকা নেওয়ার বিষয়টি পুরোপুরি অস্বীকার করেন। উজ্জ্বল পরে খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন কনস্টেবল মনোতোষ এমএলএম ব্যবসার নামে একটি চক্র গড়ে তুলেছেন। তারা ইতিমধ্যে কয়েক কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছে। মামলা হওয়ার পর মনোতোষ গ্রেপ্তার হয়ে বর্তমানে কারাগারে আছেন বলে জানান খুলশী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সন্তোষ কুমার চাকমা।