ইফতারে খেজুর খেলে মিলবে যে উপকার

ইফতারে খেজুর খেলে মিলবে যে উপকার

চলছে পবিত্র রমজান মাস। রোজা রেখে খেজুর খেয়ে ইফতার শুরু করা সুন্নত।তাই রমজানে খেজুরের কদর বেড়ে যায়। খেজুর না থাকলে আমাদের ইফতার যেন পরিপূর্ণ হয় না। কিন্তু কী আছে এই খেজুরে, আমরা কেন এত গুরুত্বের সঙ্গে খেজুর খাই? আমরা হয়তো অনেকেই জানি মিষ্টি মধুর ছোট এই ফলটির গুণের কথা। আর যারা না জেনেই খেজুর খাই, তারা আজ জেনে নিন।

ইফতারের সময় খেজুর খাওয়ার উপকারিতা প্রসঙ্গে কলকাতার পিয়ারলেস হাসপাতালের মুখ্য নিউট্রিশনিস্ট (পুষ্টিবিদ) সুদেষ্ণা মৈত্র নাগ জানান, খেজুরকে বলা হয় সুপারফুড। খেজুর সারাবছর খাওয়া উচিত। রমজান মাসে একজন রোজাদার মানুষ ভোর থেকে উপবাস থাকার পর সন্ধ্যায় রোজা ভঙ্গ করেন। তাদের ইফতারের সময় খেজুর খাওয়া ভীষণ প্রয়োজন। কারণ সারাদিনের উপবাসের পর খেজুর খেলে ক্যালোরি, এনার্জি এবং খনিজ গুন পাওয়া যায় খুব দ্রুত। খেজুরে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন, মিনারেল, প্রাকৃতিক গ্লুকোজ, ফ্রুক্টোজ থাকায় শরীরে দ্রুত শক্তি পান রোজাদার মানুষ।

পুষ্টিবিদ সুদেষ্ণা মৈত্র নাগ বলেন, খেজুরে পর্যাপ্ত পরিমাণ পটাশিয়াম থাকে। দেহের রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে হৃদরোগের ঝুঁকি কমায় এবং অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট থাকার ফলে রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা কমানোর ক্ষেত্রে খেজুর ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ।  

সারাদিন রোজা রাখার পর ইফতারে খেজুর খেলে গ্যাস-অম্বল থেকে মানবদেহকে সুস্থ এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে খেজুর খুব উপকারি বলেও জানান পুষ্টিবিদ সুদেষ্ণা মৈত্র নাগ।

বলা হয়ে থাকে বছরে যতগুলো দিন আছে, খেজুরে তার চেয়েও বেশি গুণ রয়েছে। খেজুর যেমনি সুস্বাদু তেমনি পুষ্টিকর ফল।

অ্যামিনো অ্যাসিড, প্রচুর শক্তি, শর্করা ভিটামিন, মিনারেল সমৃদ্ধ খেজুর খেলে:

* খাদ্যশক্তি থাকায় দুর্বলতা দূর হয়
* খেজুর স্নায়ুবিক শক্তি বৃদ্ধি করে
*   রোজায় অনেকক্ষণ খালি পেটে থাকা হয় বলে দেহের প্রচুর গ্লুকোজের দরকার হয়
*   খেজুরে অনেক গ্লুকোজ থাকায় এ ঘাটতি পূরণ হয়
*   হৃদরোগীদের জন্যও খেজুর বেশ উপকারি
*   খেজুরের প্রচুর খাদ্য উপাদান রয়েছে
*  খেজুর রক্ত উৎপাদনকারী
*   হজমশক্তি বর্ধক, যকৃৎ ও পাকস্থলীর শক্তিবর্ধক
*   রুচি বাড়ায়
* ত্বক ভালো রাখে
*   দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধি করে
*   রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়
*    খেজুরের আঁশ কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে
*   পক্ষঘাত এবং সব ধরনের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ অবশকারী রোগের জন্য উপকারী
*  ফুসফুসের সুরক্ষার পাশাপাশি মুখগহ্বরের ক্যান্সার রোধ করে
*   অন্তঃসত্ত্বা নারীর সন্তান জন্মের সময় খেজুর খেলে জরায়ুর মাংসপেশির দ্রুত সংকোচন-প্রসারণ ঘটিয়ে, প্রসব হতে সাহায্য করে। এছাড়াও এ ফল প্রসব-পরবর্তী কোষ্ঠকাঠিন্য ও রক্তক্ষরণ কমিয়ে দেয়।

খেজুরের উপকারিতায় হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর অনেক বাণী এসেছে। ইরশাদ হয়েছে, ‘যে ব্যক্তি প্রত্যেহ সকালে সাতটি আজওয়া খেজুর খাবে, সেদিন তাকে কোনো বিষ ও যাদু ক্ষতি করতে পারবে না। আজওয়া খেজুর হলো মদিনার উৎকৃষ্ট মানের খেজুর। ’ -সহিহ বোখারি ও মুসলিম 

Please Share This Post in Your Social Media

© All rights reserved © 2023 EU BANGLA NEWS