News Headline :
বিসিএসে ‘ক্যাডার’ বাদ দিয়ে আলাদা নাম, নিয়োগ-পদোন্নতির জন্য তিন পিএসসি

বিসিএসে ‘ক্যাডার’ বাদ দিয়ে আলাদা নাম, নিয়োগ-পদোন্নতির জন্য তিন পিএসসি

বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসের (বিসিএস) আওতায় বিদ্যমান একীভূত ‘ক্যাডার সার্ভিস’ বাতিল করে সার্ভিসের ধরন অনুযায়ী আলাদা আলাদা নামকরণের সুপারিশ করেছে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন। এ ক্ষেত্রে বিদ্যমান ২৬টি ক্যাডারকে কমিয়ে ১৩টি প্রধান সার্ভিসে বিভক্ত করার সুপারিশ করা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে বিদ্যমান বিভিন্ন ক্যাডার কর্মকর্তাদের এসব সার্ভিসে একীভূত করার সুপারিশ করা হয়েছে।

এ ছাড়া নিয়োগ ও পদোন্নতির ক্ষেত্রে তিনটি পাবলিক সার্ভিস কমিশন (পিএসসি) করার সুপারিশ করা হয়েছে। এর মধ্যে শিক্ষা ও স্বাস্থ্য সার্ভিস ছাড়া বাকি সার্ভিসের নিয়োগ ও পদোন্নতির পরীক্ষার জন্য একটি পিএসসি হবে। এর নাম হবে পিএসসি (সাধারণ)। আর শিক্ষা ও স্বাস্থ্য সার্ভিসের নিয়োগ ও পদোন্নতির জন্য পৃথক দুটি পিএসসি করার সুপারিশ করা হয়েছে। বর্তমান বিসিএস ক্যাডার ও নন ক্যাডার নিয়োগে একটি পিএসসি কাজ করছে।

আজ বুধবার দুপুরে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন তুলে দেন জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রধান আবদুল মুয়ীদ চৌধুরী। পরে প্রতিবেদনের সারসংক্ষেপ সাংবাদিকদের দেওয়া হয়।

বর্তমানে পিএসসির অধীন তিন ধাপের নিয়োগ পরীক্ষার মাধ্যমে বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসের ২৬টি ক্যাডারে নিয়োগ হয়। চাকরিপ্রার্থীদের পছন্দক্রম ও পরীক্ষায় প্রাপ্ত ফলাফলের ভিত্তিতে ক্যাডার নির্ধারণ করা হয়। ক্যাডারগুলো হলো প্রশাসন, পুলিশ, পররাষ্ট্র, কর, কৃষি, আনসার, নিরীক্ষা ও হিসাব, সমবায়, শুল্ক ও আবগারি, পরিবার পরিকল্পনা, মৎস্য, খাদ্য, বন, সাধারণ শিক্ষা, কারিগরি শিক্ষা, স্বাস্থ্য, তথ্য, পশুসম্পদ, ডাক, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল, গণপূর্ত, রেলওয়ে প্রকৌশল, রেলওয়ে পরিবহন ও বাণিজ্যিক, সড়ক ও জনপথ, পরিসংখ্যান ও বাণিজ্য ক্যাডার। একেকটি চাকরির কাজের ধরন একেক রকম। পদ-পদোন্নতি ও সুযোগ-সুবিধায় ভিন্নতা আছে। এসব নিয়ে ক্যাডারগুলোর মধ্যে দ্বন্দ্বও আছে।

এখন জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন, এসব ক্যাডারকে ১৩টি সার্ভিসে বিভক্ত করার সুপারিশ করেছে। এগুলো হলো; প্রশাসনিক সার্ভিস, বিচারিক সার্ভিস, জননিরাপত্তা সার্ভিস, পররাষ্ট্র সার্ভিস, হিসাব সার্ভিস, নিরীক্ষা সার্ভিস, রাজস্ব সার্ভিস, প্রকৌশল সার্ভিস, শিক্ষা সার্ভিস, স্বাস্থ্য সার্ভিস, কৃষি সার্ভিস, তথ্য সার্ভিস এবং তথ্য যোগাযোগ প্রযুক্তি সার্ভিস।

এ ক্ষেত্রে বিদ্যমান কিছু ক্যাডার এসব কিছু কিছু সার্ভিসে একীভূত করার সুপারিশ করা হয়েছে। যেমন বিসিএস খাদ্য ও সমবায়কে প্রস্তাবিত বাংলাদেশ প্রশাসনিক সার্ভিসের (বর্তমানের প্রশাসন ক্যাডার) সঙ্গে একীভূত করার সুপারিশ করা হয়েছে। তবে ভবিষ্যতে এই দুটি সার্ভিসে নতুন নিয়োগ করা যাবে না।

বিসিএস (হিসাব ও নিরীক্ষা) সার্ভিসকে দুটো সার্ভিসে বিভক্ত করার সুপারিশ করা হয়েছে। একটি হবে ‘বাংলাদেশ হিসাব সার্ভিস’ এবং আরেকটি হবে ‘বাংলাদেশ নিরীক্ষা সার্ভিস’।

কমিশন সুপারিশ করেছে এলজিইডি এবং জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরে কর্মরত প্রকৌশলীদের ‘প্রকৌশল সার্ভিস’ হিসেবে একীভূত করা হবে। এ ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের যোগদানের তারিখ থেকে পারস্পরিক জ্যেষ্ঠতা নির্ধারণ করা হবে।

বর্তমানে বিসিএস (সাধারণ তথ্য) ক্যাডারের অধীনে তিনটি সাব ক্যাডার আছে। যাঁদের মধ্যে পদোন্নতির সুযোগ-সুবিধার বৈষম্য রয়েছে। এসব বৈষম্য দূর করার জন্য তিনটি সাব ক্যাডারকে বিলুপ্ত করে সহকারী পরিচালক, তথ্য কর্মকর্তা, গবেষণা কর্মকর্তা ও সহকারী অনুষ্ঠান পরিচালক এবং সহকারী বার্তা নিয়ন্ত্রক পদগুলো নিয়ে একটি একীভূত সার্ভিস গঠন করার সুপারিশ করা হয়েছে। সম্মিলিত মেধা তালিকার ভিত্তিতে তাদের জ্যেষ্ঠতা, পদোন্নতি ও পদায়নের সুপারিশ করেছে কমিশন।

সরকারি দপ্তরের আইসিটি কর্মকর্তাদের ‘তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি সার্ভিসে’ অন্তর্ভুক্ত করার সুপারিশ করা হয়েছে। একই সঙ্গে বিসিএসকে (তথ্য প্রকৌশল)এই সার্ভিসে অন্তর্ভুক্ত করার সুপারিশ করা হয়েছে।

বিসিএস (বন) এর কর্মকর্তাদের সঙ্গে পরিবেশ সার্ভিসের কর্মকর্তাদের একীভূত করে বাংলাদেশ কৃষি সার্ভিসের উপসার্ভিস হিসেবে ‘বন ও পরিবেশ সার্ভিস’ করারও সুপারিশ করেছে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন।

এ রকমভাবে আরও কিছু ক্যাডারকে বিভিন্ন ক্যাডারে একীভূত করার কথা বলেছে কমিশন।

Please Share This Post in Your Social Media

© All rights reserved © 2023 EU BANGLA NEWS