এখন গ্রীষ্মকাল। উত্তাপের সময়। পথে-ঘাটে কাঠফাটা রোদ আর ঘরের ভেতর অসহ্য গুমট ভাবের মুখোমুখি হতে হচ্ছে নগরবাসীকে। গরমে অস্থির সবাই। এ সময় সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়তে হয় শিশুদের নিয়ে। প্রচণ্ড গরমে অসুস্থ হয়ে পড়ে তারা। আর তাদের জন্য প্রয়োজন সঠিক পরিচর্যা। আর এজন্য শিশুদের খাবারের বিষয়টি প্রথমে নজরে আনতে হবে। শিশুদের খাবারের ভেতর রাখা যেতে পারে মৌসুমি ফল। লিখেছেন আবরার জাহিন।
গরমে শিশুকে বেশি করে মৌসুমি ফল খাওয়ানো উচিত। শিশুর খাদ্য তালিকায়, হালকা, টাটকা এবং সহজপ্রাপ্য খাবার রাখুন। সেটা হতে পারে নরম খিচুরি বা সবজির সুপ, আর সেই সাথে ফলমূল।
শিশুর খাবার ঘরেই তৈরি করুন। বাইরের কেনা খাবার দেবেন না। এ সময় ডায়রিয়ার প্রকোপ বেশি দেখা দেয়। ঘরে তৈরি টাটকা খাবার শিশুকে এ ধরনের ঝুঁকির হাত থেকে রক্ষা করবে। যেমন, ফলের জুস বাইরে থেকে না কিনে বাসায় বানিয়ে খাওয়ানো ভালো।
শিশুকে যথেষ্ট পরিমাণ পানি পান করান এবং পানি যেন অবশ্যই বিশুদ্ধ হয় সে দিকে লক্ষ রাখুন। খুব ঠাণ্ডা বা গরম পানি দুটোই শিশুর জন্য ক্ষতিকর। সেক্ষেত্রে পরিমিত ঠাণ্ডা পানি পান করান।
শিশুকে মৌসুমি ফল বেশি খাওয়ান। বিভিন্ন ধরনের ফলের রসও দিতে পারেন, তবে তা নিজেই বাসায় তৈরি করুন। বাজারের প্যাকেটজাত ফলের রস শিশুর দাঁতের ক্ষতি করে। এ ছাড়া এগুলোতে দেওয়া প্রিজারভেটিভ শিশুর স্বাস্থ্যের জন্য খুবই ক্ষতিকর। তাই বাইরের খাবার, কোমল পানীয় এমনকি ফলের রস ইত্যাদি থেকে আপনার শিশুকে দূরে রাখাই শ্রেয়।
আগে থেকে বানিয়ে রাখা খাবার শিশুর জন্য ভালো নয়। কেনা খাবার এড়াতে বাইরে যাওয়ার সময় শিশুর খাবার তৈরি করে নিয়ে যান। সেক্ষেত্রে খাবার এবং পানি বহন করার জন্য ভালো মানের ফুড গ্রেড প্লাস্টিকের পাত্র ব্যবহার করুন, যাতে করে খাবারের মান অক্ষুণ্ণ থাকে।
প্রচণ্ড গরমে ফল নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা এ সময় খুব বেশি থাকে। তাই শিশুকে দেওয়ার আগে ভালোভাবে দেখে নিন ফল আদৌ ঠিক আছে কি-না।
গ্রীষ্মের ক্লান্তি দূর করতে, আর গরমে স্বস্তি দিতে রয়েছে রসালো ও সুস্বাদু ফল। বৈচিত্র্যময় ও রসে টইটম্বুর এসব মৌসুমি ফলে গ্রীষ্মের ফলের বাজার থাকে সয়লাব। প্রাণ ওষ্ঠাগত করে তোলা গরমে তরমুজ, বাঙ্গি ও বেলের শরবত খুব উপকারী শিশুদের জন্য। পারলে প্রতিদিনই শিশুকে খাওয়ান।
শুরু থেকেই বাজারে তরমুজ, বাঙ্গি, বেল, সফেদাসহ নানা ফল উঠতে শুরু করে। দেশি কাঁচা আম, কাঁঠাল, আনারস, কলা ও ভারতীয় হলুদ রঙা পাকা আমও শিশুদের জন্য অনেক উপকারী। এখন সব বাজারেই এসব ফলের মজুত রয়েছে।
গ্রীষ্মের এই দিনগুলোতে আপনার শিশুর সুস্থতা আপনি নিজেই নিশ্চিত করতে পারেন এভাবে। তাই শিশুর যথাযথ যত্ন নিয়ে নিশ্চিত করুন তার সুস্বাস্থ্য এবং একটি সুন্দর ভবিষ্যত্।