রঙে রঙে সাজবে ঘর

রঙে রঙে সাজবে ঘর

ঘরের ভেতর প্রতিদিন যে জীবন সেই জীবনে রং এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। ঘর সাজাতে রঙের ব্যবহার বিশ্বজুড়ে। তবে ঋতু বৈচিত্র্যের এ দেশে আমরা গ্রীষ্মপ্রধান বলে বেশিরভাগ সময় শীতল বা ঠান্ডা রং পছন্দ করি। এখন তো লাল, কমলা, নীল, সবুজ ইত্যাদি নানা উজ্জ্বল রং স্থান করে নিয়েছে। শুধু দেয়ালের রঙে নয় বরং নতুন নতুন ফ্যাব্রিক বাজারে আসছে চোখ ধাঁধানো রঙের বাহার নিয়ে। ইন্টেরিয়রে কোন রং ব্যবহার করবেন এবং কেন করবেন তা নিয়ে আসুন খানিকটা ভেবে দেখি—

ঘরের ভেতর রং ব্যবহারের আগে রঙের উত্তাপ সম্পর্কে জানা উচিত। ভাবতে পারেন—রঙের আবার উত্তাপ কী! রঙেরও ভাষা আছে। কোনো কোনো রং দেখে মনে হয় এ যেন তাপদাহ, কখনও তা ঠান্ডা শীতল স্পর্শ। আমাদের চারপাশে যে রং তার কোনটা গরম কোনটা শীতল। যেমন লাল, কমলা, হলুদ রং গরম অনুভূতি দেয় আর সবুজ ও নীল রং শীতল অনুভূতি দেয়। নীল ও সবুজ রং দেখলেই খোলা নীল আকাশ আর খোলা মাঠের সবুজকে মনে পড়ে। তাই একটা ছায়া শীতল অনুভূতি আমাদের স্পর্শ করে যায়। অন্যদিকে লাল, কমলা, হলুদ ইত্যাদি রং সূর্য কিংবা আগুনের স্পর্শ দেয়। ঘরের ভেতর যদি শান্তিময় স্পর্শ দিতে চান তবে এই রঙের বিন্যাস নিয়ে আপনাকে ভাবতে হবে খানিকটা। এক্ষেত্রে হলুদের সঙ্গে যদি সবুজের সমন্বয় করেন তবে সবুজ ধানের শীষের পাশে হলুদ সর্ষে ফুল ফুটে উঠতে পারে। আবার ড্রয়িং রুমে চিরবিদ্রোহের রূপ দিতে লালের পাশে হলুদ হয়ে উঠতে পারে চিত্রশিল্পী শাহাবুদ্দিনের কোনো চিত্রকর্ম। এর পাশাপাশি যদি ব্যবহার করেন ল্যামন ইয়েলো তবে আপনার ঘরে বিদ্রোহের পাশাপাশি শান্তির বসবাস নিশ্চিত হবে।

রঙের সঠিক ব্যবহার মাঝারি আকারের ঘরকে অনেক বড় করে তোলে। আবার ব্যক্তির বয়স, রুচি, ব্যক্তিত্বের ওপর নির্ভর করেও রং নির্বাচন করা যায়।

শোয়ার ঘরের রং
এমন রং নির্বাচন করা উচিত যাতে অবশ্যই একটা প্রশান্তির আমেজ বিরাজ করে। কেননা ক্লান্তি দূর করে বিশ্রামের জন্য আমরা এ ঘরকে বেছে নিই। হালকা, সতেজ, শান্তি ও স্নিগ্ধ আমেজ আনে এমন রং শোয়ার ঘরে দেওয়া উচিত। এক্ষেত্রে হোয়াইট, অফ হোয়াইট, লাইট ভায়োলেট, গ্রিন, লেমন ইয়েলো, ফ্রেঞ্চ গ্রে, ক্রিম ইত্যাদি শীতল রং দেওয়া যায়।

বসার ঘর
নান্দনিকতার ছাপ আনতে লাইট পিংক, ফ্রেঞ্চ গ্রে, ভায়োলেট, ক্রিম কালার ভালো। এ রুমের দরজা দিয়ে ঢুকতেই যে দেয়াল চোখে পড়ে, সেখানে বিভিন্ন লাইট পেইন্ট বা অপজিট কালার দিয়ে নতুনত্ব আনা যায়। আজকাল বাজারে বিভিন্ন ধরনের মিডিয়া হেরিটেইজ পাওয়া যায়। সেখানে এগুলো ব্যবহার করা যেতে পারে। বিভিন্ন পেপার ম্যাশা, হেরিটেজ, যেমন—স্টেন, মাইক্রোস্টোন বা বাইরামিক্স ব্যবহার করে দেয়ালকে আকর্ষণীয় করা যায়। গৃহকর্তার পরিচয় মেলে তার বসার ঘরের সৌন্দর্যের ওপর। এ ঘরের রং নির্বাচনে তাই সতর্ক থাকতে হয়। এ ঘরের রং এমন হবে, যাতে রঙের মধ্যে একটা ওয়েলকামিং মনোভাব ফুটে ওঠে।

শিশুর ঘর
শিশুরা সাধারণত চঞ্চল হয়। ফলে তাদের ঘরের রঙে যাতে একটা উত্ফুল্ল ভাব বজায় থাকে, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। বাড়ির একটি কক্ষে ইচ্ছেমতো গাঢ় কিংবা হালকা রং ব্যবহার করা যায়। এমনকি প্রতিটা দেয়ালে সামঞ্জস্যপূর্ণ আলাদা রং ব্যবহার করা যায়। তবে চার দেয়ালের জন্য দুটি রং নির্বাচন করা ভালো। গাঢ় রং দিতে হলে ভায়োলেট, ব্লু, র্যাডিশ, পিংক, গ্রিন দেওয়া যায়। খেয়াল রাখতে হবে তা যেন ঘরের আসবাবের সঙ্গে সামঞ্জস্য হয়। বাজারে কিছু স্টার স্টিকার, ছোট লাইট বা মরিচ বাতি পাওয়া যায়। সেগুলো এর মাঝে বসিয়ে দিলে রাতের অন্ধকারে মনে হবে আকাশে তারা জ্বলছে।

ফ্ল্যাট বা বাড়ি যাই হোক না কেন রং বাছাইয়ে তার মাপের ওপর খেয়াল রাখতে হবে। যেকোনো স্থান আয়তনে কিছুটা বড় দেখায় বারবার একই রঙের ব্যবহারে। আবার শীতল রং ব্যবহার করলে স্পেস কিছুটা হলেও চোখের কাছে আয়তনে বেড়ে যায়।

Please Share This Post in Your Social Media

© All rights reserved © 2023 EU BANGLA NEWS