কক্সবাজার সৈকতের অবৈধ স্থাপনা সরিয়ে নিতে নির্দেশ

কক্সবাজার সৈকতের অবৈধ স্থাপনা সরিয়ে নিতে নির্দেশ

কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের অবৈধ দোকানপাট ও অস্থায়ী স্থাপনা একদিনের মধ্যে স্বেচ্ছায় সরিয়ে নিতে নির্দেশ দিয়েছে জেলা প্রশাসন।  

শনিবার (৭ ডিসেম্বর) সৈকতের সুগন্ধা পয়েন্টে বসানো ঝিনুক মার্কেটে উচ্ছেদ অভিযান শুরু করতে গিয়ে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নিলুফা ইয়াসমিন চৌধুরী এ নিদের্শ দেন।

বিপুল সংখ্যক আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য নিয়ে এ উচ্ছেদ অভিযান শুরু করতে গিয়ে দোকানের মালিক ও হকারদের নিজ দায়িত্বে মালামাল সরিয়ে নিতে মাইকিং করে এ আহ্বান জানান ইউএনও।

অভিযানের বিষয়ে নিলুফা ইয়াসমিন চৌধুরী বলেন, হাইকোর্টের আদেশে সৈকতের বালিয়াড়ি থেকে সব ধরনের স্থাপনা সরিয়ে নিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এ আদেশ অনুযায়ী সৈকতের দখল ছেড়ে দিতে সবাইকে আহ্বান জানাচ্ছে জেলা প্রশাসন।

ব্যবসায়ীরা উচ্ছেদ অভিযানে সহায়তা করছেন জানিয়ে ইউএনও বলেন, তারা এরই মধ্যে অস্থায়ী স্থাপনা সরিয়ে নিতে কাজ করছে। সৈকতের লাবণী থেকে কলাতলী পর্যন্ত অন্তত ৫০০ অবৈধ স্থাপনা রয়েছে।

তবে কোনো ধরনের পুনর্বাসন ছাড়া এবং আগে থেকে নোটিশ না দিয়ে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ঝিনুক ব্যবসায়ীসহ সাগরপাড়ের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা।

তারা বলছেন, প্রশাসনের উচ্ছেদ অভিযান ঘিরে তারা বৈষম্যের শিকার। জোয়ার-ভাটায় সাগরের ঢেউয়ের যাতায়াত স্থান থেকে ৩শ মিটার দূরত্ব পর্যন্ত কোনো স্থাপনা না রাখার নির্দেশনা রয়েছে। কিন্তু ওই দূরত্বে বিভিন্ন সরকারি সংস্থা ও প্রতিষ্ঠানের স্থাপনা থাকলেও তা উচ্ছেদে প্রশাসনের কোনো তৎপরতা নেই।

স্থানীয়রা জানান, ৫ আগস্ট সরকার পরিবর্তনের পর কক্সবাজার শহরের সুগন্ধা পয়েন্টের বেলাভূমিতে গড়ে তোলা হয়েছে ২০টি দোকান। এই পয়েন্টের সড়ক, ফুটপাত ও বালিয়াড়িতে বসানো হয়েছে ২শ ভ্রাম্যমাণ হকার। দক্ষিণ পাশে কলাতলী পয়েন্টের ‘সি ক্রাউন হোটেলের’ সামনে তৈরি করা হয়েছে পাঁচটি দোকান। মেরিন ড্রাইভের ইনানী সৈকতের বেলাভূমিতে অন্তত ৩০টি রেস্তোরাঁসহ বিভিন্ন দোকানপাট নির্মাণ করা হয়েছে। এছাড়া দরিয়ানগর, হিমছড়ি, সালসা বিচ, পাটুয়ারটেকসহ বিভিন্ন এলাকায় সরকারি জমি দখল করে স্থাপনা নির্মাণ করা হচ্ছে।

সরকার কক্সবাজারের সৈকত এলাকাকে প্রতিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকা (ইসিএ) ঘোষণা করে ১৯৯৯ সালের ১৯ এপ্রিল গেজেট প্রকাশ করে। এই গেজেট অনুযায়ী সৈকতের বেলাভূমিতে স্থাপনা নিষিদ্ধ। কিন্তু আইন না মেনে দীর্ঘদিন ধরে স্থাপনা নির্মাণ অব্যাহত থাকায় ২০১৭ সালে বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) করা এক রিটের পরিপ্রেক্ষিতে সমুদ্র সৈকতে জোয়ার-ভাটার মধ্যবর্তী লাইন থেকে প্রথম ৩শ মিটার ‘নো ডেভেলপমেন্ট জোন’ উল্লেখ করে এ এলাকায় কোনো স্থাপনা নির্মাণ করা যাবে না বলে নির্দেশনা দেয় উচ্চ আদালত।

Please Share This Post in Your Social Media

© All rights reserved © 2023 EU BANGLA NEWS