বাড়িতে খরগোশ পোষার চল বহুদিনের। বাড়িতে খুদে সদস্য থাকলে, তার মন ভোলাতে খরগোশ-শাবক কিনে আনেন অনেক বাবা-মা।বাড়িময় লম্ফঝম্প করে বেড়ায় তারা। হাতে করে খাবার দিলে কোলে উঠে দিব্যি খায়। আবার, শখের পাশাপাশি ব্যবসায়িক কারণেও খরগোশ পালন করেন অনেকে। তবে খরগোশ পুষতে হলে কিছু বিষয় মাথায় রাখা প্রয়োজন। পোষা খরগোশের যত্ন নেওয়ার উপায় সম্মন্ধে অবগত থাকা জরুরি।
খরগোশের ঘর
বাড়ির ছাদে বা বারান্দায় খরগোশের জন্য ছোট্ট ঘেরা জায়গা তৈরি করে দিন। মেঝের উপর মোটা করে তুষ বা খড় বিছিয়ে দিলেই, তার মধ্যে খরগোশেরা ভাল থাকবে। পুরুষ ও স্ত্রী খরগোশ কিনে আনলে তাদের জন্য আলাদা-আলাদা জায়গা বাছুন। কারণ এরা খুব দ্রুত প্রজনন করে। তবে, যদি ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যে প্রতিপালনের ইচ্ছা থাকে তাহলে একসঙ্গে রাখা যেতে পারে।
খাঁচা রাখুন খোলামেলা জায়গায়
খরগোশ খুব ছটফটে প্রাণী। এদের খাঁচায় রাখলে বড়সড় খাঁচা কেনাই ভাল। খাঁচা এমন জায়গায় রাখতে হবে যেখানে প্রচুর আলো, বাতাস আছে। স্যাঁতসেঁতে ভেজা জায়গায় বা অন্ধকার জায়গায় খাঁচা রেখে দিলে খরগোশেরা তাড়াতাড়ি অসুস্থ হয়ে পড়বে। একই খাঁচায় গাদাগাদি করে অনেক খরগোশ রাখবেন না।
মাঝেমধ্যে খাঁচা থেকে বার করে ওদের খেলতে দিতে হবে। খরগোশেরা দৌড়ঝাঁপ করতেই বেশি পছন্দ করে। পশু চিকিৎসকেরা বলছেন, বাড়ির ছাদে বা বারান্দায় ওদের ছেড়ে দিন। বাড়িতে বাগান থাকলে খুব ভাল। সারা ক্ষণ বন্দি করে রাখলে ওরা তাড়াতাড়ি দুর্বল হয়ে পড়বে।
কী খাবে পোষ্য
কী প্রজাতির খরগোশ পুষছেন তার উপর নির্ভর করছে ডায়েট। পোষা খরগোশকে কী খাওয়াবেন সেটা পশু-চিকিৎসকের থেকে জেনে নেওয়াই ভাল। সাধারণত খরগোশকে এমন খাবার দিতে হবে যাতে প্রয়োজনীয় প্রোটিন, ফাইবার ও খনিজ তাদের শরীরে যায়। বিভিন্ন রকম শাকপাতা, গাজর, মুলো, সবুজ সব্জি খাওয়াতে পারেন খরগোশকে। আবার শস্যদানাও দেওয়া যেতে পারে।
খরগোশ অসুস্থ হচ্ছে কি না খেয়াল রাখুন
কয়েকটি লক্ষণ খেয়াল রাখলেই বুঝতে পারবেন আপনার পোষ্য অসুস্থ হয়ে পড়ছে কি না। নজর রাখুন, পোষা খরগোশ ঝিমিয়ে পড়ছে কি না। দুর্বল হয়ে পড়লে ওদের কান আর খাড়া থাকবে না। গায়ের লোমও রুক্ষ হয়ে যাবে। লোম ঝরতে শুরু করবে। খাওয়াদাওয়া বন্ধ করে দেবে, দৌড়ঝাঁপও করবে না। খরগোশের জ্বর হয়। কৃমি, নিউমোনিয়াতেও আক্রান্ত হয় খরগোশ। তাই তাদের আচরণে সামান্য অস্বাভাবিকতা দেখলেই অবিলম্বে পশু চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যান।