২০০২ সালে বাবা খ্যাতিমান নির্মাতা কাজী হায়াতের হাত ধরে চলচ্চিত্রে অভিষেক হয় কাজী মারুফের। প্রথম চলচ্চিত্র ‘ইতিহাস’ দিয়েই সাড়া ফেলে দিয়েছিলেন। পেয়েছেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার। এরপর বেশকিছু ছবিতে অভিনয় করেন তিনি। সাফল্য-ব্যর্থতার পাল্লা প্রায় সমান সমান!
ঢাকাই সিনেমায় কাজী মারুফ চিত্রনায়ক মান্নার অভাব পূরণ করবেন বলে মনে করেছিলেন অনেকেই, কিন্তু তাদের অনুমান ব্যর্থ করে সিনেমা ছেড়ে স্থায়ীভাবে এই নায়ক পাড়ি দিয়েছেন সুদূর আমেরিকায়। বেছে নিয়েছেন প্রবাস জীবন। স্ত্রী সন্তান নিয়ে সেখানেই বসবাস করছেন। যা নিয়ে এখনও নানা প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হয় কিংবদন্তী নির্মাতা কাজী হায়াতকে।
চ্যানেল আইয়ে শাহরিয়ার নাজিম জয়ের উপস্থাপনায় নিয়মিত অনুষ্ঠান ‘১৩টি প্রশ্ন’র শোতে এসে আরও একবার এমন প্রশ্নের মুখোমুখি কাজী হায়াৎ। জানালেন, ছেলে প্রবাস জীবন বেছে নিয়েছে, এটা ভাবতে খারাপ লাগলেও ছেলের কাজ নিয়ে ইতিবাচক বাবা। কাজী হায়াৎ বলেন, মারুফ বিদেশে গিয়েও বসে নেই। সেখানে সে একটি ছবি বানিয়েছে, নাম ‘গ্রিন কার্ড’। আমি মনে করি ছবিটি এই দেশের মাইলফলক হয়ে থাকবে। আমার দৃষ্টিকোণ থেকে ছবিটি দেখে মনে হয়েছে, সিনেমা হলে ‘গ্রিন কার্ড’ দেখে দর্শকের মধ্যে কান্নার রোল পড়ে যাবে।
‘দেশ ছেড়ে কেন যুক্তরাষ্ট্রে গিয়েছেন?’— শুধু কাজী হায়াৎ নয়, স্বয়ং কাজী মারুফকেই এমন প্রশ্ন শুনতে হয়। গেল বছরেও কাজী মারুফের একটি লাইভে একজন ভক্ত এমন প্রশ্ন করেন। উত্তরে তখন ‘ইতিহাস’ খ্যাত এই নায়ক বলেছিলেন, ‘আমেরিকা চলে এসেছি কিছু দুঃখ পেয়ে।’
সেই লাইভে মারুফ আরও বলেন, “বাংলাদেশের সিনেমা হচ্ছিল না। তেমন কাজ ছিল না। কিন্তু কিছু তো করে খেতে হবে। তা ছাড়া ২০১৯ সালে আমাদের একটি ছবি মুক্তির কথা ছিল। সেভাবেই টার্গেট করেছিলাম। কিন্তু সিনেমাটি মুক্তি দিতে দেয়নি একটি বড় প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান। পরিচালক ছিলেন আমার আব্বা (কাজী হায়াৎ)। তারা আমার আব্বাকে বলেছিলেন, আমরা রিলিজ করতে না দিলে কীভাবে রিলিজ করবেন। আমার আব্বার মতো মানুষকে এই কথা শুনতে হয়েছিল। সেদিন আব্বা বাসায় এসে বললেন, আমি এই বয়সে যুদ্ধ করব? আমি চাই না তুমিও যুদ্ধ করো এদের সঙ্গে। চলে যাও আমেরিকা। এসব কারণেই বাংলাদেশ ছেড়ে চলে এসেছি।”