আলু খাওয়া কি সত্যিই অস্বাস্থ্যকর?

আলু খাওয়া কি সত্যিই অস্বাস্থ্যকর?

বিরিয়ানি হোক বা কষা মাংস, পাতলা মাছের ঝোল তরকারি— রান্নায় আলু না পড়লে মন যেন ভরতে চায় না। ডায়াবেটিস, উচ্চরক্তচাপের সমস্যা নিয়ে যারা ভুগছেন, তারা আবার আলু এড়িয়ে চলেন।আলু খাওয়া শরীরের পক্ষে ভালো না মন্দ— তা নিয়ে একটা দ্বন্দ্ব রয়েছে। তবে পুষ্টিবিদেরা জানাচ্ছেন, আলু মানেই শরীরের পক্ষে খারাপ, এই ধারণা ভুল।  সবকিছুর মতো আলুরও কিছু ভালো এবং মন্দ দিক রয়েছে। ডায়াবেটিস থাকলে কিংবা ওবিসিটির সমস্যা থাকলে আলু কম খাওয়ার পর পরামর্শ দেন পুষ্টিবিদরা, তবে সেসব অসুবিধা না থাকলে ডায়েটে আলু রাখাই যায়। আলুর কিছু স্বাস্থ্যকর দিকও রয়েছে। শরীরের প্রতিরোধশক্তি বাড়াতেও আলু দারুণ উপকারী।

* ফাইবারের উৎস

ডায়েটে বেশি মাত্রায় ফাইবার থাকলে দীর্ঘক্ষণ পেট ভরা থাকে। উল্টোপাল্টা খাবার খাওয়ার ইচ্ছা কমে। আলুতে ভালো মাত্রায় ফাইবার থাকে। আলুর খোসাতেও ভরপুর মাত্রায় ফাইবার থাকে। তাই রান্নায় মাঝেমধ্যে খোসাসমেত আলু ব্যবহার করতে পারেন। এতে পেট পরিষ্কার হয়, কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যাও কমে।

* বদহজমের দাওয়াই

 গ্যাস-অম্বলের সমস্যা নিয়ে ভোগেন না, এমন বাঙালি খুঁজে পাওয়া মুশকিল। নিত্য গ্যাস, অম্বল, বুক জ্বালার সমস্যা লেগেই রয়েছে। অনেকেই ভরসা রাখেন ওষুধের ওপরে। তবে ঘরোয়া উপায়ে এই সমস্যা কমাতে চাইলে ভরসা রাখতে পারেন আলুর ওপর। কাঁচা আলুর রস নিয়ম করে খেলে এক্ষেত্রে উপকার পেতে পারেন।

* প্রদাহ কমাতে 

আলুর কিন্তু প্রদাহনাশক গুণ রয়েছে। গাঁটের ব্যথা কিংবা শরীরে যন্ত্রণা হলে আলুর রস নিয়ম করে খেতে পারেন। পেশিতে যন্ত্রণা হলেও আলু রাখতে পারেন ডায়েটে। আলুতে থাকা ভিটামিন সি সর্দি-কাশির সমস্যা কমায়। যেকোনো সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়তে সাহায্য করে। রোজ খালি পেটে আলুর রস খেলেই হলো।

* রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে

 আলুতে ভরপুর মাত্রায় পটাসিয়াম থাকে। স্নায়ু, কিডনি ও হার্ট ভালো রাখতে এই উপাদানটি বেশ জরুরি। ডায়েটে আলু রাখলে রক্ত সঞ্চালন ভালো হয়, রক্তচাপও নিয়ন্ত্রণে থাকে।

ক্ষতি কিসে?

ফাস্ট ফুড সেন্টারের তেলে ভাজা ফ্রেঞ্চ ফ্রাই নিয়মিত খেতে আরম্ভ করলে বা চিপ্‌স খেলে আলু ক্ষতি করতে শুরু করে। পুষ্টিগুণ বিন্দুমাত্র থাকে না। সরল কার্বোহাইড্রেট বলে এক টুকরো বিরিয়ানির আলুও খাওয়া যাবে না, এমন ভাবনা ভুল। এমনকি, আলুতে কোলেস্টেরলও থাকে না। প্যাকেটজাত আলুর স্ন্যাক্সে লবণ ও তেলের পরিমাণ বেশি থাকে বলে সেখান থেকে কোলেস্টেরল বাসা বাঁধতে পারে শরীরে। আলু বেক কিংবা রোস্ট করে খান অনেকে, এতে শরীরের ক্ষতি হয়। উচ্চ তাপমাত্রায় আলুর মধ্যে আক্রিলামাইড যৌগ তৈরি হওয়ার আশঙ্কা বাড়ে। যা শরীরের পক্ষে ক্ষতিকর। সাধারণ রান্নায় আলু ব্যবহার করুন। আলু সেদ্ধ করেও খেতে পারেন।

Please Share This Post in Your Social Media

© All rights reserved © 2023 EU BANGLA NEWS