‘আমরা ছাত্র-জনতা মিলে আন্দোলনের মাধ্যমে ফ্যাসিস্ট সরকারকে উৎখাত করেছি। তারপরও আমরা বৈষম্য থেকে বের হতে পারিনি।অনেক চিকিৎসক এখন আমাদের সঙ্গে বৈষম্য করছেন। ’
কথাগুলো জুলাই-আগস্ট অভ্যুত্থানে গুলিবিদ্ধ হয়ে চিকিৎসাধীন শাহাদাত হোসেন খান নামে এক যুবকের। তিনি জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানে (নিটোর) চিকিৎসা নিচ্ছেন। সেখানেই সোমবার (২৩ সেপ্টেম্বর) দুপুরে আলাপের সময় কথাগুলো বলেন তিনি।
শাহাদাত বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আমি একজন আহত সৈনিক। আমরা ছাত্র-জনতা মিলে আন্দোলনের মাধ্যমে ফ্যাসিস্ট সরকারকে উৎখাত করেছি। কিন্তু আমরা এখনও বৈষম্য থেকে বের হতে পারি নাই। অনেক ডাক্তার আমাদের সঙ্গে বৈষম্য করেন। চীন থেকে যে চিকিৎসকরা এসেছেন, তারা সবাইকে দেখবেন, সব রোগীর কাছে যাবেন। কিন্তু একজনের কাছে যাবেন, আরেকজনের কাছে যাবেন না, এটা আমাদের সঙ্গে কেমন আচরণ। এটার একটা সুষ্ঠু তদন্ত ও সমাধান আমরা চাই। এটাই আমার দাবি।
আন্দোলনের সময় কোথায়-কীভাবে আহত হয়েছেন বলেন শাহাদাত। তিনি জানান, বৈষ্যম্যবিরোধী আন্দোলন করার সময় তিনি কারওয়ান বাজারে গুলিবিদ্ধ হন। তার পায়ে দুটি গুলি লাগে। একটি বের করা হলেও আরেকটি পায়ে রয়ে গেছে।
চিকিৎসার অবহেলা প্রসঙ্গে তিনি বাংলানিউজকে বলেন, জিএম জাহাঙ্গীর নামে এক চিকিৎসকের অধীনে আমি নিটোরে ভর্তি। তিনি আমাকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে থাকতে বলেছেন। কিন্তু এখানকার ওয়ার্ড ডাক্তার আমাকে রিলিজ দিতে উঠে পড়ে রেগেছেন। এর কারণ কী? আমি এখানে থেকে চিকিৎসা নিতে চাই। আমার গ্রামের বাড়িতে একদিন বৃষ্টি হলে চারদিন কাদা থাকে। ডাক্তার আমাকে প্রতিদিন পাঁচ ঘণ্টা হাঁটতে বলছেন। আমি কীভাবে গ্রামের কাদায় হাঁটবো। আমি ঢাকায় কাজকর্ম করতাম, এখন তো আর পারবো না। ঢাকায়ও থাকতে পারবো না। গ্রামে চলে যেতে হবে।
চীন থেকে আসা চিকিৎসক দল সব রোগীর কাছে না যাওয়ায় শাহাদাতসহ বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আহত আরও অনেক রোগী ও তাদের স্বজনরা ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
এ ব্যাপারে জানতে জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানের (নিটোর) পরিচালক অধ্যাপক ডা. কাজী শামীম উজজামানের মোবাইলে কয়েকবার কল করা হয়। কিন্তু তিনি কল রিসিভ করেননি।