উপজেলাকে ‘জিয়ানগর’ নামে ফেরানোর দাবি ইন্দুরকানীর বাসিন্দাদের

উপজেলাকে ‘জিয়ানগর’ নামে ফেরানোর দাবি ইন্দুরকানীর বাসিন্দাদের

পিরোজপুর জেলার ইন্দুরকানী উপজেলার নাম পরিবর্তন করে পূর্বতন নাম ‘জিয়ানগর’ পুনর্বহাল করার দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।  

ওই উপজেলার সব ইউনিয়নের ৩ হাজার ৪ জন নাগরিক এ সংক্রান্ত একটি পত্রে সই করেন।

বুধবার (৫ সেপ্টেম্বর) স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়বিষয়ক উপদেষ্টা এ এফ হাসান আরিফকে লেখা চিঠিতে এ দাবির কথা বলা হয়।  

স্থানীয় বাসিন্দাদের পক্ষে চিঠিতে স্বাক্ষর করেন সাবেক জিয়ানগর উপজেলা চেয়ারম্যান মাসুদ সাঈদী।
 
চিঠিতে স্থানীয় সরকার উপদেষ্টাকে বলা হয়, নিবেদন এই যে, আমরা পিরোজপুর জেলার ইন্দুরকানী উপজেলার (পূর্বতন নাম – জিয়ানগর) স্থায়ী বাসিন্দা। উপজেলাটি পিরোজপুর জেলার সদর উপজেলার সঙ্গে একীভূত ছিল। বিগত ৪-দলীয় জোট সরকারের আমলে তৎকালীন সংসদ সদস্য আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় ২০০২ সালের ২৭ মার্চ প্রশাসনিক পুনর্গঠন ও সংস্কারের জন্য জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির (নিকার) ৮৭তম বৈঠকে পিরোজপুরের ইন্দুরকানী থানাকে ‘জিয়ানগর’ উপজেলা নামে নামকরণের প্রস্তাব আনা হয়। এরপর ২০০২ সালের ১৭ এপ্রিল তৎকালীন রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে পিরোজপুর সদর উপজেলার পত্তাশী, পারেরহাট, ও বালিপাড়া— এই ৩টি ইউনিয়নের ৯৪.৬০ বর্গ কি.মি. আয়তন এলাকা নিয়ে জিয়ানগর উপজেলা নামে একটি নতুন প্রশাসনিক উপজেলা গঠন করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।  

এই সিদ্ধান্তের বলে ২০০২ সালের ২১ এপ্রিল তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া স্থানীয় জনগণের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ইন্দুরকানী সফর করে ইন্দুরকানী কলেজ মাঠে এক জনসভায় ইন্দুরকানী থানাকে জিয়ানগর উপজেলা নামে উদ্বোধন করেন।

এতে আরও বলা হয়, পরে ২০১৭ সালের ৯ জানুয়ারি তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে প্রশাসনিক পুনর্বিন্যাস সংক্রান্ত জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির (নিকার) ১১৩তম সভায় পিরোজপুরের সপ্তম উপজেলা জিয়ানগরের নাম পরিবর্তন করে আগের ইন্দুরকানী থানার নামে নামকরণের প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয় এবং পরে ৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগের (উপজেলা-১ শাখা) জারিকৃত প্রজ্ঞাপনে নাম পরিবর্তনের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করা হয়।

চিঠিতে আরও উল্লেখ করা হয়, ওই নাম পরিবর্তনের পেছনে ‘জিয়ানগর’ নামের সঙ্গে স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের নামের সামঞ্জস্যতা থাকায় কেবলমাত্র রাজনৈতিক বিদ্বেষ এবং হীনমন্যতা ব্যতীত আর কোনো কারণ ছিল না। বিগত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বৈরাচারী শাসনব্যবস্থায় আমরা নিম্ন স্বাক্ষরকারীরা এই নাম পরিবর্তনের কোনো সুসংগঠিত প্রতিবাদ করতে পারিনি। যেহেতু বিগত ৫ আগস্ট, ২০২৪-এ ছাত্রজনতার রক্তাক্ত আত্মত্যাগের পথে উঠে আসা গণঅভ্যুত্থানের ফলে শেখ হাসিনা সরকারের পতন ঘটেছে এবং ছাত্রজনতার আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন হিসেবে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠিত হয়েছে। সুতরাং বিগত সরকারের রেখে যাওয়া বিভিন্ন অপকর্ম, ক্ষমতার অপব্যবহার এবং ত্রুটি সংশোধনের সুযোগ এই অন্তর্বর্তী সরকারের সামনে রয়েছে। যে লক্ষ্যে সরকার নিরলসভাবে কাজও করে চলেছে।  

চিঠিতে বলা হয়, এই প্রেক্ষাপটে, আমাদের জন্মস্থান এই উপজেলার শ্রুতিকটু নাম ‘ইন্দুরকানী’  পরিবর্তন করে এর পূর্বতন নাম ‘জিয়ানগর’ প্রতিস্থাপন করা অতীব জরুরি। উপজেলার এই নাম পরিবর্তনের বিষয়টি আমাদের স্থানীয় জনগণের দীর্ঘদিনের দারি এবং গণমানুষের আত্মত্যাগের ওপর প্রতিষ্ঠিত এই দেশপ্রেমিক সরকার আমাদের দাবিটি মেনে নেবে বলে আমরা স্থানীয় জনগণ দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি।  

এতে আরও বলা হয়, উপর্যুক্ত বিষয়বস্তুর আলোকে নিবেদন এই যে, পিরোজপুর জেলার ‘ইন্দুরকানী’ উপজেলার নাম পরিবর্তন করে পূর্বতন ‘জিয়ানগর’ নামটি পুনর্বহাল করার জন্য গণমানুষের এই আকুল দাবিকে বিবেচনায় নিয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে আপনার মর্জি হয়।

Please Share This Post in Your Social Media

© All rights reserved © 2023 EU BANGLA NEWS