পর্দা ওঠার আগেই বিতর্কের মুখে প্যারিস অলিম্পিক। কেননা এবারের আসরে এমন খেলোয়াড় আছেন যিনি কি না শিশু ধর্ষণের দায়ে সাজা খেটেছেন।নাম তার স্টিভেন ফন দে ভেলদে। অলিম্পিকে নেদারল্যান্ডসের হয়ে বিচ ভলিবলে খেলবেন তিনি।
বিতর্ক এড়াতে আপাতত ফন দে ভেলদেকে অলিম্পিক ভিলেজের বাইরেই রেখেছে ডাচ অলিম্পিক কমিটি। শুধু তা-ই নয়, গেমস চলাকালীন কোনো সাক্ষাৎকার দিতে পারবেন না তিনি।
এক বিবৃতিতে ডাচ অলিম্পিক কমিটি জানায়, ‘সেই মামলার ব্যাপারে ফন দে ভেলদে ধারাবাহিকভাবে স্বচ্ছতা দেখিয়েছেন, যেটাকে তিনি নিজের জীবনের সবচেয়ে বড় ভুল হিসেবে মনে করেন। নিজের কর্মের পরিণতির তিনি গভীরভাবে অনুতপ্ত। ‘
১০ বছর আগে ১২ বছর বয়সী এক ব্রিটিশ শিশুকে ধর্ষণ করেন ফন দে ভেলদে। তখন তার বয়স ছিল ১৯ বছর। ধর্ষণের শিকার হওয়া সেই মেয়ের সঙ্গে তার পরিচয় হয়েছিল ফেসবুকে। বেশ কয়েকমাস অনলাইনে কথা বলার পর সামনাসামনি দেখা করার জন্য আমস্টারডাম থেকে যুক্তরাজ্যে যান তিনি। এরপর হোটেলের সিঁড়ির নিচে একটি কাভার্ড বক্সে সেই মেয়েকে ধর্ষণ করেন এই খেলোয়াড়।
নেদারল্যান্ডসে ফেরার আগে ভুক্তভোগী সেই মেয়েকে গর্ভনিরোধক ওষুধ খেতে বলেন ফন দে ভেলদে। মেয়ের বয়স বিবেচনা করে পরিবার পরিকল্পনা ক্লিনিক তখন পরিবার ও পুলিশকে খবর।
গ্রেপ্তার হওয়ার পর নিজের দোষ স্বীকার করেন ফন দে ভেলদে। যে কারণে চার বছরের সাজা হয় তার। যুক্তরাজ্যে এক বছর জেল কাটার পর নেদারল্যান্ডসে পাঠানো হয় তাকে। সেখানে এক মাস জেল খাটার পর ২০১৭ সালে ছাড়া পান তিনি। এরপর ফের বিচ ভলিবলের ক্যারিয়ার পুনরায় শুরু করেন এই খেলোয়াড়। বিয়ে করেন এক জার্মান বিচ ভলিবল খেলোয়াড়কে। তাদের একটি দুই বছরের সন্তানও আছে।
ডাচ সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ফন দে ভেলদে বলেছিলেন, ‘আমি এটা বদলাতে পারব না, তাই এর ফল আমাকে ভোগ করতে হবে। আমার জীবনের সবচেয়ে বড় ভুল এটি। ‘
ফন দে ভেলদেকে অলিম্পিকে খেলার অনুমতি দেওয়ায় চটেছেন অস্ট্রেলিয়ার অলিম্পিক দলের প্রধান অ্যানা মিয়ারস। তিনি বলেন, ‘যদি কোনো অ্যাথলেট কিংবা স্টাফ দণ্ডপ্রাপ্ত হয়ে থাকে তাহলে তারা আমাদের দলের সদস্য হতে পারবেন না। দলের সুরক্ষায় আমাদের কঠোর নীতি রয়েছে। ‘
এদিকে, অলিম্পিকে ডাচদের শেফ দি মিশন পিতার ফন দেন হুগেনবেন্দ বলেন, ‘দলের একজন সদস্য হিসেবে পারফর্ম করতে তাকে আমাদের সহায়তা করতে হবে। আন্তর্জাতিক খেলাধুলা ও বিচ ভলিবলে সে বেশ লম্বা সময় ধরে সক্রিয়। সে বিশ্বকাপ ও ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপে অংশগ্রহণ করেছে। কিন্তু গেমসের পরিবেশ ভিন্ন। আমরা একটি ভালো পদক্ষেপ নিয়েছি। সব অ্যাথলেটই আমার খুব কাছে এবং আমি তাদের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করি। ‘
আগামী ২৮ জুলাই ইতালির আলেক্স রানিয়েরি ও আদ্রিয়ান কারাম্বুলার বিপক্ষে অলিম্পিকে নিজের প্রথম ম্যাচ খেলবেন ফন দে ভেলদে। যেখানে তার সঙ্গে জুটি বাঁধবেন ম্যাথু ইমার্স।