বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক ও ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সদস্য সচিব আমিনুল হক বলেছেন, আওয়ামী সরকার সারাদেশে বিএনপির লাখ লাখ নেতাকর্মীদের নামে মামলা দিয়েছে। ২০১৪ সাল থেকে শুরু করে ২০১৮ সাল সর্বশেষ ২০১৯ সালের ২৮ অক্টোবরের পরে লাখ লাখ মামলায় বিএনপির ২৫ থেকে ২৭ হাজার নেতাকর্মীকে নির্বাচনের আগে গ্রেপ্তার করেছে।এর উদ্দেশ্য হলো, তারা আমাদের বিএনপির নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার করে কারাগারে বন্দি রেখে তাদের সে তথাকথিত নাটকীয় ডামি নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতা ধরে রেখেছে। এরজন্য তারা দেশের রাষ্ট্রীয় যন্ত্রগুলো ব্যবহার করে বিদেশি প্রভুদের সহায়তা নিয়ে আজকে তারা রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় টিকে রয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশের জনগণের কাছে এ আওয়ামী সরকারের ন্যূনতম কোনো মূল্য নেই।
বৃহস্পতিবার (১৩ জুন) দুপুরে ঢাকার পল্লবী ২ নম্বর কমিউনিটি সেন্টারে সামনে ঢাকা মহানগর উত্তর তাঁতী দলের উদ্যোগে অসহায় ও দুস্থদের মাঝে ঈদ উপহার সামগ্রী পাঞ্জাবি বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, আওয়ামী সরকার চায়, তারা দেশের যে গণতন্ত্র হরণ করেছে, সেটা তারা পুনরুদ্ধার করতে দিতে চায় না। কারণ যদি গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা হয়, তাহলে তারা ক্ষমতায় থাকতে পারবে না। জনগণ তাদের ভোট দেবে না। সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ৩০০ আসনের ৫টি আসন পাবে কিনা সন্দেহ রয়েছে।
আমিনুল হক বলেন, আওয়ামী সরকার বাংলাদেশের মানবাধিকার ধ্বংস করে দিয়েছে, ভূলুণ্ঠিত করেছে। আজ সাংবাদিকরা কথা বলতে পারে না, মানুষের বাকস্বাধীনতা নেই, সমাজে কেউ সত্য কথা বলতে পারে না। সত্য কথা বললেই তার নামে মামলা হয়ে যায়, চলে অত্যাচার ও নির্যাতনের স্টিম রোলার।
আওয়ামী সরকারের দুঃশাসনে দেশের মানুষ আজ অতিষ্ঠ, মানুষ আওয়ামী সরকার থেকে পরিত্রাণ চায় উল্লেখ করে আমিনুল হক বলেন, বাংলাদেশের মানুষ ২০১৪ সালের সেই তথাকথিত নির্বাচন দেখেছে, ২০১৮ সালের রাতের অন্ধকারের ভোট দেখেছে, ২০২৪ সালের ৭ জানুয়ারি নাটকীয় ডামি নির্বাচন দেখেছে। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে, ২০২৪ সালের ৭ জানুয়ারির যে নির্বাচন সেই নির্বাচনে বাংলাদেশের মানুষ ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করেছে। তার প্রমাণ কেউ ভোট দিতে কেন্দ্রে যায়নি। কারণ এ নির্বাচনের মাধ্যমে এদেশের মানুষ বুঝিয়ে দিয়েছে, তারা আর আওয়ামী সরকারকে ক্ষমতায় দেখতে চায় না।
বিএনপির এ কেন্দ্রীয় নেতা বলেন, আওয়ামী সরকার দেশের বিচার বিভাগকে এমনভাবে দলীয় করণ করেছে যে, তাদের এ দলীয় করণের কারণে সাধারণ মানুষের যে প্রত্যাশা, একটা আশা, একটা রাষ্ট্রের কাছে সঠিক বিচারের যে দাবি, সেটা থেকে জনগণ বঞ্চিত হচ্ছে। কারণ বিচার বিভাগকে তারা এমনভাবে দলীয়করণ করেছে যে, আওয়ামী লীগ যেভাবে চায়, দেশের বিচার বিভাগ সেভাবেই চলে।
ঢাকা মহানগর উত্তর তাঁতীদলের সভাপতি শামসুন্নাহার বেগমের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক এমএ হান্নান খানের সঞ্চালনায় প্রধান বক্তার বক্তব্যে তাঁতী দল কেন্দ্রীয় কমিটির আহ্বায়ক আবুল কালাম আজাদ বলেন, আজকে দেশে গণতন্ত্র নেই, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা নেই, সাংবাদিকদের লিখার স্বাধীনতা নেই, মানুষের বাকস্বাধীনতা নেই। মানুষের মৌলিক চাহিদাগুলো আজ ভূলুণ্ঠিত।
আবুল কালাম আজাদ বলেন, দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে হবে। মুক্ত করতে রাজপথে নামতে হবে, ঢাকার রাজপথে রক্ত গোলাপের পাপড়ি ছড়াতে হবে। তবেই এ দেশে আন্দোলন সফল হবে। খালেদা জিয়া মুক্ত হবে, তবেই দেশে গণতন্ত্র ফিরে আসবে।
এ সময় অনুষ্ঠানে চাঁদপুর জেলা তাঁতী দলের যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফ ইকবাল লিটু তালুকদার, ঢাকা মহানগর উত্তর মহিলা দলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক লাইলী বেগম,পল্লবী থানা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক কামাল হোসাইন খান, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আশরাফ আলী গাজী, রুপনগর থানা ৭ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি শফিকুর রহমান মামুন,পল্লবী ২ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. মামুনসহ বিএনপি ও তাঁতীদল ঢাকা মহানগর উত্তরের বিভিন্ন থানার দায়িত্বশীল নেতারা উপস্থিত ছিলেন।