মৌলভীবাজারে কোরবানিতে প্রস্তুত ৮৪ হাজার পশু

মৌলভীবাজারে কোরবানিতে প্রস্তুত ৮৪ হাজার পশু

চলতি মাসের ১৭ জুন দেশব্যাপী ঈদুল আজহা উদযাপিত হবে। এবারের ঈদুল আজহায় কোরবানির জন্য পর্যটননগরী মৌলভীবাজার জেলায় প্রস্তুত রয়েছে মোট ৮৪ হাজার ৮শ ১২টি গবাদিপশু।যার বেশিরভাগই জোগান দেবেন জেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলের স্থায়ী ও মৌসুমি খামারিরা।

শনিবার (৮ জুন) মৌলভীবাজার জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. আশরাফুল আলম খান বাংলানিউজকে এ তথ্য জানান।

তিনি বলেন, গবাদিপশুর খামার রয়েছে মোট ৫ হাজার ৩শ ৬৯টি। কোরবানির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৯৮ হাজার ৫শ’ ৪২টি গবাদিপশু।

বর্তমানে ঈদকে সামনে রেখে খামারিরা নিজেদের সেরা ও স্বাস্থ্যবান গবাদিপশুটি হাটে বিক্রির জন্য প্রস্তুত করছেন। এমনিতেই এই সময়ে গবাদি পশুর খাবারের দাম অনেক চড়া। খাবারের দাম বাড়ার অজুহাতে বেপারিরাও বাড়িয়েছেন গরুর দাম। এমন পরিস্থিতিতে খামারিরাও ভালো দামের প্রত্যাশায় প্রাকৃতিক উপায়ে গরু মোটাতাজাকরণে ব্যস্ত। দেশীয় পদ্ধতিতে খড়, তাজা ঘাসসহ পুষ্টিকর খাবার খাইয়ে পশু মোটাতাজা করেছেন খামারিরা।

গরু মোটাতাজাকরণে কোনো খামারিই ক্ষতিকর অ্যান্টিবায়েটিক খাওয়াচ্ছেন না বলে নিশ্চিত করে সংশ্লিষ্ট বিভাগ।

জেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, জেলা সদরের মোস্তফাপুর, কামালপুরসহ বেশ কয়েকটি এলাকার খামার সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, ঈদুল আজহাকে ঘিরে খামারিদের ব্যস্ততা বেড়েছে আগের থেকে। খামারিদের বড় শঙ্কা হচ্ছে ঈদকে সামনে রেখে সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে চোরাইপথে গরু প্রবেশ নিয়ে। এটি বন্ধ না হলে ভালো দাম পাওয়া নিয়ে প্রভাব পড়বে বাজারে। এ বিষয়ে খামারিরা চান প্রশাসনের শক্ত অবস্থান আর সীমান্তে কঠোর নজরদারি।

সদর উপজেলার মোস্তফাপুরে শতাধিক দেশি-বিদেশি গবাদিপশু নিয়ে গড়ে তোলা আরিয়ান ডেইরি ফার্মের মালিক ব্যবসায়ী সৈয়দ ফয়সল বলেন, গরুর খাবারের দাম এক বছরের ব্যবধানে দ্বিগুণ হয়েছে,তবুও ভালো দাম পাওয়ার প্রত্যাশা আমাদের।  

তিনি বলেন, অবৈধভাবে সীমান্ত দিয়ে গরু চোরাচালান বন্ধে সরকার চেষ্টা করছে। তারপরও যদি ভারতীয় গরু বাজারে আসে তাহলে খামারিরা নিরুৎসাহিত হবে, আমার মতো অনেকে খামার বন্ধ করে দেবে।

তরুণ এই ব্যবসায়ীর ফার্মে সর্বোচ্চ আড়াই লাখ টাকা দামের গরু রয়েছে। ইতোমধ্যে অনেকগুলো বড় বড় ষাঁড় বিক্রি হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।

জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. আশরাফুল আলম খান বলেন, গবাদিপশুর লক্ষ্যমাত্রা ৯৮ হাজার ৫৪২টির মাঝে ৮৪ হাজার ৮১২টি গবাদিপশুর জোগান রয়েছে। অবশিষ্ট যেগুলো রয়েছে সেগুলোকে ঘাটতি বলা যাবে না। কারণ কোরবানির জন্য যে ঘাটতি রয়েছে তা ব্যক্তিগতভাবে লালন করা গবাদিপশু দ্বারা পূরণ করা হবে।

তিনি আরও বলেন, ঈদকে সামনে রেখে সীমান্ত দিয়ে যাতে অবৈধভাবে গরু প্রবেশ করতে না পারে তার জন্য ইতোমধ্যে সর্বোচ্চ পর্যায়ে বৈঠক করা হয়েছে। ওই বৈঠকে সীমান্ত দিয়ে যাতে ভারতীয় গরু প্রবেশ করতে না পারে তা নিশ্চিতে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে।

এদিকে মৌলভীবাজার জেলাজুড়ে মোট ২১টি স্থায়ী গবাদিপশুর হাট থাকলেও ঈদকে সামনে রেখে অস্থায়ী পশুর হাটের সর্বশেষ পরিসংখ্যানের তথ্য জেলা প্রশাসনের একাধিক কর্মকর্তাদের সাথে যোগাযোগ করেও জানা সম্ভব হয়নি।

Please Share This Post in Your Social Media

© All rights reserved © 2023 EU BANGLA NEWS