আসছে ঈদে মুক্তির অপেক্ষায় আছে শাকিব খানের ‘তুফান’ ছবিটি। গত বছরের ১১ ডিসেম্বর আনুষ্ঠানিকভাবে পাঁচতারা হোটেলে ঘোষণা দেওয়া হয় তিন প্রযোজকের ব্যানারে নির্মিত হচ্ছে ‘তুফান’ সিনেমাটি।
তিন প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান হলো আলফা আই স্টুডিওস লিমিটেড, ওটিটি প্ল্যাটফর্ম চরকি এবং ভারতের পশ্চিমবঙ্গের প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান এসভিএফ। ছবিটি নির্মাণ করবেন রায়হান রাফি। ঘোষণা অনুযায়ী সবকিছু ঠিকমতোই হয়েছে।
এই সময়ে ছবিটি ঘিরে যত রকমের প্রেস রিলিজ ও সংবাদ ছাপা হয়েছে, সবখানেই আছে তিন প্রযোজকের নাম। সবকিছুই ঠিকঠাক ছিল। কিন্তু সম্প্রতি পাওয়া সেন্সর ছাড়পত্রে দেখা যাচ্ছে প্রযোজক হিসেবে আছে শুধু আলফা আই স্টুডিওস লিমিটেডের স্বত্বাধিকারী শাহরিয়ার করিম ভূঁইয়ার (শাহরিয়ার শাকিল) নাম।
বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ইতোমধ্যে সমালোচনা শুরু হয়েছে। সমালোচনাকারীদের মতে, ঈদ উৎসবে যৌথ প্রযোজনার ছবি মুক্তির বিধিনিষেধ এড়াতেই শেষ পর্যন্ত তুফানকে দেশি ছবি হিসেবে দেখানো হয়েছে।
শাহরিয়ার করিম ভূঁইয়া জানান, তুফান ছবিটির প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান আলফা আই স্টুডিওস লিমিটেড। সে কারণে সেন্সর ছাড়পত্রে তার নাম লেখা। কারণ, এটা একটা বাংলাদেশি সিনেমা। এ ছাড়া চরকি হলো ডিজিটাল পার্টনার ও এসভিএফ ইন্টারন্যাশনাল ডিস্ট্রিবিউটর।
এদিকে ছবিটি নির্মাণের নামে টাকা পাচারের অভিযোগও উঠেছে। মঙ্গলবার (৪ জুন) ১৯ সংগঠনের উদ্যোগে স্টার সিনেপ্লেক্সের বিরুদ্ধে বিভিন্ন দুর্নীতি নিয়ে এক আলোচনা সভায় ভার্সেটাইল মিডিয়ার কর্ণধার আরশাদ আদনান এই অভিযোগ তোলেন।
তিনি বলেন, সোশ্যাল মিডিয়ায় দেখেছি এই সিনেমার বাজেট ৮ থেকে ১০ কোটি টাকা। এতো টাকা আপনি ভারতে নিয়েছেন কীভাবে? আপনি কি এনবিআরের ছাড়পত্র নিয়েছেন? আর নিলেও কতো টাকার ছাড়পত্র নিয়েছেন? আমি একজন সাধারণ প্রযোজক হিসেবে জানতে চাই, এভাবেও কী বিদেশে টাকা নেওয়া সম্ভব?
আরশাদ আদনান বলেন, ৬০ থেকে ৮০ লাখ টাকা এনবিআরকে দেখিয়ে ৮ থেকে ১০ কোটি টাকার সিনেমা বানালো। এই শুভঙ্করের চালটা কী, আলাদিনের চেরাগ কি করে পেল আমি তো বুঝি না।
তিনি আরও বলেন, বিদেশে কাজ করার নিয়মনীতি তো আছে। আমিও আমেরিকাতে শুটিং করেছি। বৈধ টাকা নিয়ে সবকিছু ক্লিয়ার করে কাজ করেছি। আসলে কী সৎ থাকার ইচ্ছে থাকতে হয়। সর্বোপরি দেশকে না ঠকানোর ইচ্ছে থাকতে হয়। দেশকে কেন ঠকাবো? দেশের যেটা প্রাপ্য, সেটা দিই না কেন দেশকে?
এই প্রযোজক বলেন, শাকিব খান ও চঞ্চল চৌধুরীর পারিশ্রমিক দেশে দেওয়া হয়েছে। আড়াই পার্সেন্ট হারে টাকা দিয়ে তিন শিফটে কাজ করে ৬০ লাখ টাকা বাংলাদেশ থেকে নিয়ে গিয়ে সেখানে শুটিং করা কীভাবে সম্ভব, তা আমার জানা নেই। আমিও তো ৪-৫টি বাংলা চলচ্চিত্র বানিয়েছি। সেটা কীভাবে সম্ভব?
আরশাদ আদনান বলেন, এখন আমাদের প্রশ্ন করার সময় এসেছে। নিজেরা আলাপ না করে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে প্রশ্ন করতে হবে। এভাবেই চলবে?
প্রসঙ্গত, অ্যাকশন ধাঁচের এই সিনেমায় শাকিবের বিপরীতে অভিনয় করেছেন ঢাকার মাসুমা রহমান নাবিলা ও কলকাতার মিমি চক্রবর্তী। গ্যাংস্টারের কাহিনি নিয়েই এগিয়ে যাবে তুফানের গল্প। নব্বই দশকের একজন গ্যাংস্টারের ভূমিকায় দেখা যাবে শাকিব খানকে। এতে আরও অভিনয় করেছেন চঞ্চল চৌধুরী, মিশা সওদাগরসহ অনেকে। ভিলেন চরিত্রে রয়েছেন অভিনেতা যিশু সেনগুপ্ত। যদিও তার বিষয়টি এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে নিশ্চিত করেননি পরিচালক কিংবা প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান।