নরসিংদীতে এক প্রতিবন্ধী ও মানসিক ভারসাম্যহীন যুবককে লোহার পাইপ দিয়ে পিটিয়ে আহত করার ঘটনায় ছাত্রলীগ নেতা মোস্তাফিজুর রহমান বাবুর বিরুদ্ধে থানায় হয়েছে।
রোববার (২ জুন) রাতে মাধবদী থানায় মামলাটি করেন আহত যুবকের মা রেজি বেগম।আর তাকে একইদিন দল থেকে অব্যাহতি দিয়েছে মাধবদী থানা ছাত্রলীগ।
অভিযুক্ত মোস্তাফিজুর রহমান বাবু সদর উপজেলার পাঁচদোনা ইউনিয়ন ছাত্রলীগের আহ্বায়ক এবং সাবেক সাধারণ সম্পাদক।
আহত বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী সোহেল মিয়া (৪০) সদর উপজেলার চর-মাধবদী এলাকার মৃত সাইদ মিয়ার ছেলে। গত শুক্রবার (৩১ মে) সকাল ৯টার দিকে চরমাধবদী এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
রোববার বিকেলে মাধবদী থানা ছাত্রলীগের সভাপতি এসএম হাফিজুর রহমান সৈকত ও সাধারণ সম্পাদক মাহবুব হোসেন মনির স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে মোস্তাফিজুর রহমান বাবুকে দল থেকে অব্যহতি দেওয়া হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, সংগঠনের গঠনতন্ত্র পরিপন্থি ও অমানবিক কাজে জড়িত থাকার অভিযোগে পাঁচদোনা ইউনিয়ন ছাত্রলীগের আহ্বায়ক পদ থেকে বাবুকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। সেই সঙ্গে পাঁচদোনা ইউনিয়ন ছাত্রলীগের কমিটি বিলুপ্তি ঘোষণা করা হয়।
আহত সোহেল মিয়ার মা রেজি বেগম বলেন, আমি আমার পরিবার নিয়ে আতঙ্কের মধ্যে দিন কাটাচ্ছি। থানায় মামলা করেছি। কখন জানি আবার বাবু হামলা চালায় । সে এলাকার মধ্যে প্রভাবশালী কয়েকজন নেতার আশ্রয় প্রশ্রয়ে বিভিন্ন অপকর্ম করে যাচ্ছে। সাংবাদিকরা পাশে থাকলে আমি একটু বিচার পাব। আমার ছেলেকে চিকিৎসা করার পর্যন্ত টাকা আমার কাছে নেই। আমি বাবুর গ্রেপ্তার চাই এবং সর্বোচ্চ বিচার দাবি করছি। তাকে যারা আশ্রয় প্রশ্রয় দিচ্ছে তাদেরও বিচার চাই।
স্থানীয়রা জানান, গত বৃহস্পতিবার স্থানীয় জাকির হোসেনের মুদি দোকানে যায় সোহেল। এ সময় ইউনিয়ন ছাত্রলীগ নেতা বাবুর বাবা প্রতিবেশী মোখলেছুর রহমানের সঙ্গে বিস্কুট খাওয়া নিয়ে কথা কাটাকাটি হয় সোহেলের। পরবর্তীতে স্থানীয় এলাকাবাসীর সমন্বয়ে বিষয়টি নিরসন করা হয়। এরপর সোহেলের মামা বাবুল মোল্লাকেও মারধর করে বাবু। শুক্রবার সোহেল একা বাজারে গেলে সাধারণ মানুষের সামনে লোহার পাইপ দিয়ে পিটিয়ে আহত করে কলা বাগানে তাকে ফেলে চলে যায় ছাত্রলীগ নেতা বাবু।
বাবুকে অব্যাহতির বিষয়ে জানতে চাইলে মাধবদী থানা ছাত্রলীগের সভাপতি এসএম হাফিজুর রহমান সৈকত বলেন, কোনো অপরাধীর দায় ছাত্রলীগ নেবে না। ছাত্রলীগের পদ নিয়ে কেউ অপরাজনীতি করবে সেটা আর সম্ভব না। বাবু অমানবিক কাজ করেছে তাই সংগঠন তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে। ভবিষ্যতের জন্য এটা একটি শিক্ষা।
মাধবদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কামরুজ্জামান বলেন, মানসিক ভারসাম্যহীন যুবকে পিটিয়ে আহত করার ঘটনাটি দুঃখজনক। সোহেলের মা আমাদের কাছে অভিযোগ করেছেন। সঙ্গে সঙ্গে আমরা মামলা নিয়েছি। আসামিকে ধরতে বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালিয়েছি। সে এখন পলাতক রয়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে তাকে গ্রেপ্তার করা হবে।