কয়েক দিন ধরেই আলোচনায় চিত্রনায়িকা জান্নাতুল ফেরদৌস মিষ্টি ওরফে মিষ্টি জান্নাত। উপস্থাপক ও অভিনেতা শাহরিয়ার নাজিম জয়কে নিয়ে মন্তব্য করে খবরের শিরোনামে তিনি।এ নিয়ে সংবাদমাধ্যম থেকে শুরু করে নেট দুনিয়ায় বেশ চর্চা হচ্ছে।
এদিকে, দশ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ চেয়ে অভিনেত্রী মিষ্টি জান্নাতকে আইনি নোটিশ পাঠিয়েছেন মির্জা ফারজানা ইয়াসমিন তমা ওরফে তমা মির্জা। মানহানিকর মন্তব্যের অভিযোগ এনে এ নোটিশ পাঠানো হয়েছে। সেইসঙ্গে জনসম্মুখে ক্ষমা চাইতে বলা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৩ মে) রেজিস্ট্রি ডাক যোগে তমা মির্জার পক্ষে এ নোটিশ পাঠান তার আইনজীবী ব্যারিস্টার সজীব মাহমুদ আলম।
মূলত উপস্থাপক জয়কে কেন্দ্র করে ঘটনার সূত্রপাত হয়। মিষ্টি জান্নাতের একটি সাক্ষাৎকার মোটেও ভালোভাবে নেননি ঢাকাই সিনেমার আরেক চিত্রনায়িকা তমা মির্জা। কারও নাম না নিলেও সম্প্রতি তিনি নিজের ফেসবুকে এক স্ট্যাটাস দিয়েছিলেন। তমা কারো নাম উল্লেখ না করলেও স্পষ্ট তিনি মিষ্টিকে নিয়ে স্ট্যাটাসটি দিয়েছেন।
একটি স্ট্যাটাস কেন্দ্র করে এই দুই নায়িকার মধ্যে বিভেদ তৈরি হয়েছে। যেটা শেষ পর্যন্ত গড়াল মামলায়। এ নিয়ে মিষ্টি জান্নাতের ভাষ্য, ‘উনি (তমা মির্জা) যদি মিথ্যা অভিযোগ আনেন তাহলে অসুবিধা নাই। আমার আইনজীবী আছে। তিনি-ই বিষয়টি নিয়ে কথা বলবেন। আমার বক্তব্যের কোথাও ওনার নাম বলিনি। আমার কাছে সব ডকুমেন্ট আছে। এখন বিভিন্ন ইউটিউবার যদি কেটে কেটে তুলে দেয় সেক্ষেত্রে আমার কী করার আছে। তাকে নিয়ে আমি কিছু বলিনি। তবুও যদি তিনি অভিযোগ আনেন সেক্ষেত্রে আমিও পদক্ষেপ নেব। ’
মিষ্টি জান্নাত মনে করছেন কারও ইন্ধনে তমা মির্জা তাকে আইনি নোটিশ পাঠিয়েছেন। নায়িকার কথায়, ‘তিনি হয়ত কারও ইন্ধন পেয়ে এটা করছেন। আমি নাকি বলেছি চেটে চেটে নায়িকা হয়। এখানে তো আমি তার নাম বলিনি। তাহলে তার সমস্যা হয় কেন। ’
এ সময় মিষ্টি বলেন, ‘আমাকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, ‘আমি কেন সিনেমা করি না?’ জবাবে বলেছি, ‘পড়াশোনা নিয়ে ব্যস্ত থাকি সে কারণে আমাকে সিনেমায় পাওয়া যায় না। ’ এরপর প্রশ্ন করা হয়, ‘ইন্ডাস্ট্রিতে বড় বড় ডিরেক্টর আছে। আপনাকে নিয়ে তারা কেন ছবি করেন না?’ তখন বলেছি, আমি তো তাদের গার্লফ্রেন্ড কিংবা স্ত্রী না। বিভিন্ন নায়িকারা সিনিয়র জুনিয়রের সঙ্গে থেকে থেকে নায়িকা হয়। সে ক্ষেত্রে আমি কি করব? আমি তো এটা করতে পারব না। এখানে আমার অভিমত ব্যক্ত করেছি। কিন্তু তিনি যদি বিষয়টি নিজের গায়ে নিয়ে নেন তাহলে মনে করব তিনি নিজেও এরকম। ’
কারও ইন্ধনে তমা আইনি নোটিশ পাঠিয়েছেন বলে মনে করছেন জানতে চাইলে মিষ্টি জান্নাত বলেন, ‘তিনি জয় ভাইয়ার ইন্ধনে হয়ত কাজটা করছেন। সমস্যা নেই। ইন্ধন পেয়ে তো লাভ নেই। প্রমাণ দেখাতে হবে সবকিছুর। আপনি একজনকে হেনস্তা করবেন এটা তো হতে পারে না। আমি তো কোথাও তার নাম উল্লেখ করিনি। আমার সিনেমা কেন কম তার উত্তর দিয়েছি। সেটা কি আমি বলব না? মানুষ ভাবছে আমাকে সিনেমায় নেয় না। বিষয়টি সে রকম না। আমার কাছে সিনেমার প্রস্তাব আসে কিন্তু আমি রাজি হই না। সে ব্যাখ্যা কি আমি দিতে পারব না?’
সবশেষে মিষ্টি জান্নাত জানান তিনিও মানহানি মামলা করবেন তমার বিরুদ্ধে। তার কথায়, ‘অবশ্যই আমি মানহানি মামলা করব। তিনি মিথ্যা অভিযোগ এনেছেন। বিষয়টি নিয়ে নিউজ হচ্ছে। আমার মানহানি হচ্ছে। ’
এরই মধ্যে আইনজীবীর সঙ্গে কথা বলেছেন বলেও জানান তিনি। তবে বিষয়টি নিয়ে তমা মির্জার মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
মিষ্টি জান্নাতকে পাঠানো তমার ওই নোটিশে সামাজিক মাধ্যমে থাকা দুটি ভিডিও বক্তব্যের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। ‘আপনার বয়ফ্রেন্ডকে বিয়ে করব না, তমা মির্জাকে খোঁচা দিয়ে মিষ্টি জান্নাত’ এবং ‘চেটে চেটে নায়িকা হয়েছে তমা মির্জা: জান্নাত’ শীর্ষক শিরোনামে সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে মানহানিকর বক্তব্য রয়েছে বলে দাবি করেছেন আইনজীবী।
নোটিশে বলা হয়, এসব বক্তব্যে সাংবাদিক ও দেশের জনগণের কাছে তার (তমা মির্জার) সুনাম নষ্ট হয়েছে। এ ধরনের বক্তব্য তমার চরিত্র ও ব্যক্তিত্বে আঘাত হেনেছে। এটি শাস্তিযোগ্য অপরাধ। উদ্দেশ্যে প্রণোদিতভাবে ডিজিটাল মিডিয়ায় এসব মানহানিকর বক্তব্য হয়রানির উদ্দেশ্যে করা হয়েছে। এতে ১০ কোটি টাকার মানহানি হয়েছে।
নোটিশ অনুযায়ী সাত দিনের মধ্যে জনসম্মুখে ক্ষমা চেয়ে দশ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে বলা হয়েছে। এছাড়া পরবর্তী সময়ে এ ধরনের মন্তব্য থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে। অন্যথায় প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলা হয়েছে।