ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) সদস্যদের পরিবারের মেধাবী সন্তানদের অনুপ্রেরণা দিতে কৃতি শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা ও শিক্ষাবৃত্তি দেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার (২১ মে) রাজারবাগে বাংলাদেশ পুলিশ অডিটোরিয়ামে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে মেধাবীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়।বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে বাংলাদেশ পুলিশ মেধাবৃত্তি-২০২২ এর আওতায় ৩১৭ জন ও ডিএমপি শিক্ষাবৃত্তি-২০২৩ এর আওতায় ৮১৪ জন কৃতি শিক্ষার্থীকে সংবর্ধনা ও শিক্ষাবৃত্তি দেওয়া হয়।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে বৃত্তি পাওয়া শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের অভিনন্দন জানিয়ে শিক্ষাবিদ অধ্যাপক ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল বলেন, আমার বাবাও একজন পুলিশ অফিসার ছিলেন। বাংলাদেশে যখন মুক্তিযুদ্ধ শুরু হয়, তখন প্রথম বুলেট কিন্তু ছোড়েন এ পুলিশ অফিসাররা, এ রাজারবাগ পুলিশ লাইন থেকেই।
তিনি বলেন, রাজারবাগে এলে মনে হয় তীর্থভূমিতে এসেছি। এটি এমন এক জায়গা, যেখান থেকে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ তথা সত্যিকারের মুক্তিযুদ্ধ শুরু হয়েছিল। আর সেই মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে আমরা আমাদের দেশটা পেয়েছি। তোমাদের অবশ্যই মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস পড়তে হবে।
তিনি আরও বলেন, আমাদের শিক্ষাব্যবস্থা হলো পরীক্ষানির্ভর। সবাই পরীক্ষায় ভালো ফল করার চিন্তায় থাকে। অথচ পরীক্ষা ভালো হওয়ার সঙ্গে প্রকৃত ভালোর কোনো সম্পর্ক নেই। সিস্টেমে পরিবর্তন আসছে। আশা করি, আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে সব ঠিক হয়ে যাবে।
সভাপতির বক্তব্যে ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান বলেন, আমরা আজ যে জায়গায় বসে আছি, সেটি পবিত্র জায়গা, পবিত্র ভূমি। ঐতিহাসিক এ রাজারবাগ থেকেই বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ শুরু হয়েছিল। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আহ্বানে গভীর রাতে যারা প্রথম সাড়া দিয়েছিলেন, তারা এ রাজারবাগের পুলিশ সদস্য।
তিনি বলেন, পুলিশের প্রধান দায়িত্ব ও কর্তব্য হলো আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা করা, জনগণের জানমাল, সরকারি সম্পদ হেফাজত করা। অন্য যেকোনো সংস্থার কর্মঘণ্টা আছে। কিন্তু পুলিশের কোনো কর্মঘণ্টা নেই। দিনরাত ২৪ ঘণ্টা জনগণের সেবায় নিয়োজিত থাকতে হয়। পরিবারকে সময় দেওয়া এবং পরিবারের খোঁজখবর নেওয়ার সময়টুকুও হাতে থাকে না। তারপরও তোমরা (শিক্ষার্থী) থেমে নেই, তোমাদের এ কৃতিত্বই তারই প্রমাণ। আমার নিজের এবং ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের পক্ষ থেকে, পুলিশ মহাপরিদর্শকের পক্ষ থেকে আমি তোমাদের আন্তরিক অভিনন্দন জানাচ্ছি।
কৃতি শিক্ষার্থীদের বৃত্তি প্রদান অনুষ্ঠানে অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (লজিস্টিকস, ফিন্যান্স অ্যান্ড প্রকিউরমেন্ট) মহা. আশরাফুজ্জামান, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) মো. মুনিবুর রহমান, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (সিটিটিসি) মো. আসাদুজ্জামান, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ, ডিএমপির যুগ্ম কমিশনারসহ বিভিন্ন পর্যায়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও বৃত্তিপ্রাপ্ত ছাত্র-ছাত্রী এবং তাদের অভিভাবকরা উপস্থিত ছিলেন।