দরজায় কড়া নাড়ছে ঈদ। নিম্ন আয়ের মানুষের শেষ মুহূর্তের কেনাকাটায় ব্যস্ততা বেড়েছে।তুলনামূলক অল্প দামে পছন্দের পোশাক, গয়না, জুতা, স্যান্ডেল, অন্য প্রসাধনীসহ পছন্দের পণ্য কিনতে তারা এখন ভিড় করছেন ফুটপাত ও খোলা জায়গায় বসানো অস্থায়ী দোকানগুলোতে।
সোমবার (২৫ মার্চ) দুপুরের পর রাজধানীর গুলিস্তান এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, মূলত নিম্ন আয়ের লোকজনকে কেন্দ্র করে এ এলাকায় রাস্তার পাশে ফুটপাতে প্রচুর দোকান খোলা হয়েছে। যানবাহন কম থাকায় রাস্তা ফাঁকা হওয়ার কারণে কিছু কিছু দোকান বসানো হয়েছে রাস্তার ওপরই।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, নিম্ন আয়ের মানুষের পাশাপাশি অনেক নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্ত লোকজনও তাদের দোকানে কেনাকাটার জন্য আসছেন। কম বাজেটের মধ্যে ক্রেতাদের পছন্দ হয় এমন বাহারি নকশা ও রঙের সব পোশাকের সংগ্রহ রয়েছে ফুটপাতের দোকানেও। তাই ক্রেতাদের কোনো না কোনো জিনিস পছন্দ হচ্ছে আর কিনেও নিচ্ছেন।
মেয়েদের পোশাক, শিশুদের পোশাক, প্রসাধনী, পুরুষদের পোশাক যেমন- জিনস ও গ্যাবার্ডিন প্যান্ট, শার্ট, টি-শার্ট, পাঞ্জাবি, ট্রাউজার, জুতা, বেল্ট, ক্যাপ, লুঙ্গি, মানিব্যাগসহ বিভিন্ন সামগ্রী প্রদর্শন করে ক্রেতাদের আকৃষ্ট করার চেষ্টা করছেন বিক্রেতারা।
সেখানকার বেশিরভাগ গ্রাহকরা বলেছেন, তারা ফুটপাতের স্টলে কেনাকাটা করছেন। কারণ শপিংমলে জিনিসপত্রের দাম অনেক বেশি।
মুরাদ হোসেন নামে এক ক্রেতা জানান, তিনি ফুটপাতের দোকান থেকে কিছু প্রসাধনী ও জুতা কিনবেন। তিনি বলেন, ঈদ উপলক্ষে প্রতিটা জিনিসের দাম একটু বেশি। তারপরও মার্কেটের তুলনায় এখানে জিনিসের দাম অনেক কম।
রাজধানীর বেশ কয়েকটি এলাকা ঘুরে দেখা যায়, অস্থায়ী দোকানগুলোতে কেউ চৌকি পেতে, কেউ কাঠের টেবিল বা ভ্যানের ওপর, কেউ হ্যাঙ্গারে ঝুলিয়ে, আবার কেউ চাদর বিছিয়ে বিভিন্ন ডিজাইনের পোশাকের সঙ্গে প্রসাধনী সামগ্রী সাজিয়ে রেখেছেন।
ফুটপাতে দোকান সাজিয়ে বসা সেলিম মিয়া বলেন, কিছুদিন আগে বেচা-বিক্রি কম থাকলেও এখন বেশ বেড়েছে। ঈদের জন্য কালেকশন বাড়িয়েছে।
নারীদের পোশাক নিয়ে বসা রইছ উদ্দিন বলেন, আমাদের তো এ সময়টাতেই একটু আয় বেশি হয়। কিন্তু পুলিশ বললে আবার উঠতে হয়। বেচাকেনা অবশ্য খারাপ না।
ঈদের আগের দিন পর্যন্ত বেচাকেনা চলে জানিয়ে তিনি বলেন, রাজধানীর ইসলামপুর, বঙ্গবাজার, সদরঘাটের বিভিন্ন পাইকারি বাজার থেকে পণ্য এনে ফুটপাতে বিক্রি করছেন।
কোন পোশাকের দাম কত
বিভিন্ন ফুটপাত ঘুরে দেখা যায়, দোকানগুলোতে শিশুদের জন্য ডেনিম (জিন্স) প্যান্ট ১০০ থেকে ২৫০ টাকা, অন্য প্যান্ট ৩০ থেকে ৬০, প্যান্ট ও গেঞ্জির সেট ১৫০ থেকে ২৫০ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে। শিশুদের ফ্রক ও টপস ২৫০ থেকে ৪৫০ টাকা, ওয়ান পিস ১৫০ থেকে ২২০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা যায়।
মেয়েদের থ্রি-পিস ৩৫০ থেকে ৬৫০ টাকা, টপস ও ওয়ান পিস ২৫০ থেকে ৩৫০, পার্টি ড্রেস ৭০০ থেকে ১ হাজার ২০০, স্যান্ডেল ও জুতা ১৫০ থেকে ৪৫০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা যায়।