রাজশাহী-৪ (বাগমারা) আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) আবুল কালাম আজাদকে কারণ দর্শানোর জন্য নোটিশ পাঠিয়েছে আওয়ামী লীগ। শিষ্টাচার বহির্ভূত বক্তব্য দেওয়ার জন্য তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ পাঠানো হয়েছে।গত ১৯ মার্চ আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া এমপি কালামকে কারণ দর্শানোর এ নোটিশ পাঠান।
এতে বলা হয়েছে, সম্প্রতি সামাজিক মাধ্যমে প্রচারিত আবুল কালাম আজাদের বক্তব্যে দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়েছে। শিষ্টাচার বহির্ভূতভাবে এমন বক্তব্য দেওয়া সংগঠনের শৃঙ্খলাবিরোধী এবং আওয়ামী লীগের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
তাই তার বিরুদ্ধে কেন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না তার ব্যাখাসহ লিখিত জবাব আগামী ১৫ দিনের মধ্যে দলীয় প্রধান শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যালয়ে পাঠানোর জন্য তার প্রতি নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
কারণ দর্শানোর এ নোটিশের অনুলিপি জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অনিল কুমার সরকারকেও দেওয়া হয়েছে। তবে শুক্রবার (২২ মার্চ) দুপুর পর্যন্ত এমপি কালাম কিংবা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অনিল কুমার সরকার নোটিশ পাননি বলে জানিয়েছেন।
আওয়ামী লীগের উপ-দপ্তর সম্পাদক সায়েম খান শুক্রবার (২২ মার্চ) দুপুরে জানিয়েছেন, কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়ার বিষয়টি সঠিক। কুরিয়ারের মাধ্যমে এ চিঠি পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। কারণ দর্শানোর নোটিশের জবাব আসার পর দলের কেন্দ্রীয় কমিটি এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে।
এদিকে রাজশাহী-৪ (বাগমারা) আসনের সংসদ সদস্য আবুল কালাম আজাদ বাগমারা উপজেলার তাহেরপুর পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা কমিটির সদস্য। ঠিক কোন বক্তব্যের জন্য এমপি কালামকে কারণ দর্শাতে বলা হয়েছে তা চিঠিতে উল্লেখ নেই। তবে সংসদ সদস্য আবুল কালাম বরাবরই লাগামহীন কথাবার্তা বলে থাকেন। গত ৯ মার্চ রাজশাহীতে পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী আবদুল ওয়াদুদ দারাকে দেওয়া সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের বক্তব্য রাখতে গিয়ে এমপি আবুল কালাম আজাদ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও বাগমারা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অনিল কুমার সরকারকে প্রকাশ্যেই অশ্লীল ভাষায় গালি দেন। পরে সেই ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে।
রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অনিল কুমার সরকার বলেন, সংবর্ধনার মঞ্চ থেকে সংসদ সদস্য আবুল কালাম আজাদ প্রকাশ্যে আমাকে গালি দিয়েছেন। কোনো ভদ্র-শিক্ষিত মানুষ এটা করতে পারেন না। তিনি বরাবরই উগ্র। তিনি যখন যা খুশি তখন তাই বলেন। আমরা তো তার সঙ্গে মারামারি করতে পারব না। শুনেছি, এসব বিষয় নিয়ে তাকে হাইকমান্ড থেকে এবার শোকজ করা হয়েছে। তবে চিঠির অনুলিপি এখনো পাইনি।
তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে সংসদ সদস্য আবুল কালাম আজাদ বলেন, নির্বাচনী প্রতিপক্ষ একটি গোষ্ঠী পরিকল্পিতভাবে আমার পেছনে লেগেছে। তারাই শোকজের চিঠি ছড়াচ্ছে। তবে এটা সত্য কী না জানি না। কারণ, এখন পর্যন্ত সেই চিঠি আমিও পাইনি। পেলে তখন জবাব দেব। আর এতে আমার বিরোধী পক্ষের লোকজনের এত খুশি হওয়ার কোনো কারণ নেই। কারণ, এ শোকজের জন্য তো আমার এমপি পদ চলে যাবে না।