জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের এক শিক্ষার্থীর আত্মহত্যার ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন বলছে- কোনো ধরনের শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে চলতে পারে না।
শনিবার (১৬ মার্চ) এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে মানবাধিকার কমিশন।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, শুক্রবার (১৫ মার্চ) জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের এক শিক্ষার্থীর আত্মহত্যার সংবাদটি জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের নজরে এসেছে। গণমাধ্যম থেকে পাওয়া তথ্য মতে, তিনি আত্মহত্যার আগে ফেসবুক পোস্টে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক সহপাঠীর বিরুদ্ধে যৌন হয়রানিসহ নানা ধরনের নিপীড়নের অভিযোগ করেন। পাশাপাশি একজন দায়িত্বশীল শিক্ষকের বিরুদ্ধে তিনি অভিযোগ করেছেন, যিনি সহকারী প্রক্টরের দায়িত্বে রয়েছেন।
গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদকে উদ্ধৃতি দিয়ে কমিশন আরও জানায়, ওই শিক্ষক তার দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন না করে বরং আত্মহত্যাকারী শিক্ষার্থীর সঙ্গে এমন আচরণ করেছেন, যা আত্মহত্যায় প্ররোচনার শামিল মর্মে সুস্পষ্ট। এ ঘটনায় জাতীয় মানবাধিকার কমিশন ক্ষোভ প্রকাশ করেছে। পাশাপাশি সম্প্রতি শিক্ষাঙ্গনে নারী শিক্ষার্থীদের হয়রানিসহ নৈতিক স্খলনের যেসব ঘটনা দৃষ্টিগোচর হচ্ছে তা কমিশনকে গভীরভাবে উদ্বিগ্ন করেছে।
জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, আত্মহত্যার ঘটনাটির সুষ্ঠু তদন্তপূর্বক প্ররোচনাকারীদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা প্রয়োজন। নারী শিক্ষার্থীরা প্রায়ই হয়রানির শিকার হচ্ছেন, সে বিষয়ে শক্ত পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে শিক্ষার্থীদের প্রতি বিশেষ যত্নশীল হতে হবে এবং শিক্ষার্থীবান্ধব সুষ্ঠু শিক্ষার পরিবেশ তৈরির জন্য মনোযোগী হতে হবে। কোনো ধরনের শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে চলতে পারে না।
তিনি আরও বলেন, এ ধরনের ঘটনা প্রমাণ করে শিক্ষাঙ্গনে আমাদের নৈতিকতা ও শুদ্ধাচারের দিকে বিশেষ জোর দেওয়া প্রয়োজন। উন্নত মানসিকতা ও মূল্যবোধ বিকাশ ছাড়া শিক্ষাঙ্গণ অপূর্ণ থেকে যাবে। তাই শিক্ষাঙ্গনে সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখার ক্ষেত্রে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা আবশ্যক। এ পরিপ্রেক্ষিতে কমিশনের প্রস্তুত করা ও সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে পাঠানো যৌন হয়রানি নিরোধ আইনের খসড়া যথাযথ প্রক্রিয়ায় সম্পন্ন করে দ্রুত কার্যকর করার জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন।