গত বছরের মতো এবারও পবিত্র রমজান মাস উপলক্ষে সাশ্রয়ী দামে ট্রাক সেলের মাধ্যমে ৩১টি ভোগ্যপণ্য বিক্রি শুরু করেছে দেশের শীর্ষস্থানীয় শিল্পগোষ্ঠী বসুন্ধরা গ্রুপ।
‘বসুন্ধরার পণ্য, ভোক্তার জন্য’ স্লোগানকে সামনে রেখে মঙ্গলবার (১২ মার্চ) বিকেলে রাজধানীর কারওয়ান বাজারের টিসিবি ভবনের সামনে বসুন্ধরা ফুড অ্যান্ড বেভারেজের উদ্যোগে এ পণ্য বিক্রির উদ্বোধন করেন জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) এ. এইচ. এম. সফিকুজ্জামান।
এ সময় এ. এইচ. এম. সফিকুজ্জামান বলেন, প্রথম রোজা থেকেই বসুন্ধরা গ্রুপসহ আরও কয়েকটি গ্রুপ-সুপারশপ রমজান ও বিশ্ব ভোক্তা দিবস উপলক্ষে বেশ কয়েকটি পণ্যে মূল্য ছাড় দিয়ে বিক্রি করছে। এজন্য আমরা তাদের সরকারের পক্ষ থেকে সাধুবাদ জানাচ্ছি। মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে রমজান উপলক্ষে পণ্যের দামে অনেক ছাড় দেওয়া হয়, তারা মানুষের পাশে এসে দাঁড়ায়। এবার রমজানে দেখা যাচ্ছে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি রয়েছে, এটার জন্য আমরা বেশ কিছুদিন থেকেই কাজ করছি।
তিনি বলেন, শুল্ক প্রত্যাহারের ফলে প্রতি লিটার সয়াবিন তেলের দাম ১৭৩ থেকে ১৬৩ টাকা করা হয়েছে। এই তেল গত বছর ২০৫ টাকা ছিল। বসুন্ধরা গ্রুপ সেই তেল বিক্রি করছে ১৫৫ টাকায়। এর অর্থ বসুন্ধরা মানুষের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে।
ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের ডিজি আরও বলেন, এ উদ্যোগের ফলে অনেক নিম্ন আয়ের, মধ্যবিত্তসহ একটি নির্দিষ্ট আয়ের মানুষ অনেক সাশ্রয়ী মূল্যে বাজার থেকেও কম মূল্যে পণ্য কিনতে পারছে। আমি ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে বসুন্ধরা গ্রুপকে স্বাগত জানাচ্ছি। আমি আহ্বান জানাবো, বসুন্ধরা গ্রুপের মতো অন্যরাও এগিয়ে আসুক।
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন বসুন্ধরা ফুড অ্যান্ড বেভারেজের এজিএম কাজী মনিরুজ্জামান মনি, ডিএসএম মো. আল আমিন, টেরিটরি সেলস ম্যানেজার কামরুজ্জামান খান রবিন প্রমুখ।
কাজী মনিরুজ্জামান মনি বলেন, রমজান উপলক্ষে আমরা প্রতিবছর সাশ্রয়ী মূল্যে পণ্য বিক্রি করে থাকি। এ বছরও আমরা ঢাকা শহরের ৬টি স্পটসহ সারাদেশের ২০টি স্থানে পণ্য বিক্রি শুরু করেছি।
যেসব স্থানে বসুন্ধরার এ কার্যক্রম
এ বছর রাজধানীর ছয়টি স্থানে ও রাজধানীর বাইরে ১৪টি জেলায় ট্রাক সেলের মাধ্যমে সাশ্রয়ীমূল্যে পণ্য বিক্রি করছে বসুন্ধরা ফুড অ্যান্ড বেভারেজ। রাজধানীর ছয় স্থান হলো- সচিবালয়ের সামনে, কারওয়ান বাজারের টিসিবি ভবনের সামনে, বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার এভারকেয়ার হাসপাতাল সংলগ্ন ফটক, মোহাম্মদপুরের লিমিটেড এলাকা, মিরপুর ও উত্তরা বিজিবি মার্কেটের সামনে।
ঢাকার বাইরে গাজীপুরের জয়দেবপুর, নারায়ণগঞ্জের সদর, ময়মনসিংহের বিদ্যাময়ী স্কুল গেইট, নরসিংদীর বেলানগর, টাঙ্গাইলের নিরালা মোড়, কুমিল্লার কান্দিরপাড়, চট্টগ্রামের সিএনবি কলোনি মোড়, সিলেটের বন্দরে, বগুড়ার সাতমাথা জিলা স্কুল গেইট, রাজশাহীর আলুপট্টি মোড়, রংপুরের পাবলিক লাইব্রেরি গেইট, খুলনার ডাকবাংলা মোড়, ফরিদপুরের চকবাজার হেলিপ্যাড ও বরিশালের চৌমাথা হাতেম আলী কলেজের সামনে এই কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে।
যেসব পণ্য পাচ্ছেন ভোক্তারা
এ বছর ট্রাক সেলের মাধ্যমে এক লিটার সয়াবিন তেল ১৬৩ টাকার পরিবর্তে ১৫৫ টাকা, দুই লিটার সয়াবিন তেল ৩২৬ টাকার পরিবর্তে ৩১০ টাকা, তিন লিটার সয়াবিন তেল ৪৮৮ টাকার পরিবর্তে ৪৬৫ টাকা, পাঁচ লিটার সয়াবিন তেল ৮০০ টাকার পরিবর্তে ৭৬৫ টাকা, আট লিটার সয়াবিন তেল ১২৮০ টাকার পরিবর্তে ১২২৫ টাকা, এক লিটার সরিষার তেল ৩৬০ টাকার পরিবর্তে ২৬৫ টাকা, এক কেজি আটা ৬৫ টাকার পরিবর্তে ৪৮ টাকা, এক কেজি ময়দা ৭৫ টাকার পরিবর্তে ৬০ টাকা, ২৫০ গ্রাম সুজি ২৫ টাকার পরিবর্তে ২০ টাকা, এক কেজি মসুর ডাল ১৫০ টাকার পরিবর্তে ১৪০ টাকা, এক কেজি চিনিগুঁড়া চাল ১৮০ টাকার পরিবর্তে ১৪১ টাকা, ২০০ গ্রাম সেমাই ৩০ টাকার পরিবর্তে ২৫ টাকা, ২০০ গ্রাম লাচ্ছা সেমাই ৫০ টাকার পরিবর্তে ৩৫ টাকা, ইনস্ট্যান্ট মাসালা নুডলস (৮ প্যাক) ১৪০ টাকার পরিবর্তে ১১০ টাকা, ১৫০ গ্রাম স্টিক এগ অ্যান্ড চিকেন নুডলস ২৫ টাকার পরিবর্তে ২২ টাকা, ৩০০ গ্রাম পান্ডা অথেনন্টিক চাইনিজ নুডলস ৬০ টাকার পরিবর্তে ৪৮ টাকা, ২০০ গ্রাম সি-শেল পাস্তা ৫০ টাকার পরিবর্তে ৩৭ টাকা, ২০০ গ্রাম ম্যাকারনব অ্যাসরটেড ৪৫ টাকার পরিবর্তে ৩৫ টাকা, ৫০০ গ্রাম হলুদের গুঁড়ার প্যাকেট ২৪০ টাকার পরিবর্তে ১৭৫ টাকা, ৫০০ গ্রাম মরিচের গুঁড়ার প্যাকেট ৪১০ টাকার পরিবর্তে ৩১৫ টাকা, ৫০০ গ্রাম ধনিয়ার গুঁড়ার প্যাকেট ২৪০ টাকার পরিবর্তে ১৭৫ টাকা, ৫০০ গ্রাম জিরার গুঁড়ার প্যাকেট ৯০০ টাকার পরিবর্তে ৭৭৫ টাকা, ২০০ গ্রাম হালিম মিক্স ৫৫ টাকার পরিবর্তে ৫০ টাকা, ১০০ গ্রাম মুরগির মসলা ৭৮ টাকার পরিবর্তে ৬২ টাকা, ৪০ গ্রাম বিরিয়ানির মসলা ৬০ টাকার পরিবর্তে ৫০ টাকা, ১০০ গ্রাম গরুর মাংসের মসলা ৮৪ টাকার পরিবর্তে ৭০ টাকা, ৫০ গ্রাম কাবাব মসলা ৯০ টাকার পরিবর্তে ৭০ টাকা, ৫০ গ্রাম বোরহানি মসলা ৪০ টাকার পরিবর্তে ৩০ টাকা, ৫০ গ্রাম চটপটি মসলা ৪০ টাকার পরিবর্তে ৩২ টাকা, ২০০ গ্রাম বসুন্ধরা চা (প্রিমিয়াম) ১১০ টাকার পরিবর্তে ৮০ টাকা, ১০০ গ্রাম বসুন্ধরা প্রিমিয়াম টি ব্যাগ ৯০ টাকার পরিবর্তে ৬৫ টাকায় বিক্রি করছে প্রতিষ্ঠানটি।