প্রযুক্তির উৎকর্ষের সঙ্গে নতুন নতুন অপরাধ দেখা দিচ্ছে উল্লেখ করে যথাযথভাবে অপরাধ দমনে পুলিশকে প্রস্তুত থাকার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বৃহস্পতিবার (২৯ ফেব্রুয়ারি) প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে দেওয়া ভাষণে তিনি এ কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, প্রযুক্তির উৎকর্ষতা যত বাড়ছে, আবার অপরাধও কিন্তু ভিন্ন ভিন্নভাবে হচ্ছে। নতুন নতুন মাত্রায় অপরাধ দেখা দিচ্ছে। সেগুলো যথাযথভাবে মোকাবিলা করার জন্য আমাদের পুলিশ বাহিনী যেন প্রস্তুত থাকে। এ বিষয়ে আমরা যথেষ্ট যত্নবান এবং নজর দিচ্ছি। কারণ অপরাধের সঙ্গে সঙ্গে সেটাকে মোকাবিলা করার পদ্ধতিটা যদি না চলে তাহলে কিন্তু যথাযথভাবে সেটা (মোকাবিলা) করা যায় না।
তিনি বলেন, যেকোনো কর্মস্থলে নারী পুরুষ শিশু যারাই থাকুক তাদের আপনজন বিবেচনা করে তাদের প্রতি দায়িত্ব পালন করবেন, তাদের সেবা করবেন এটাই সবাই চায়।
পুলিশকে জনগণের বন্ধু মন্তব্য করে সরকার প্রধান বলেন, আমাদের পুলিশ বাহিনী এখন মানুষের বন্ধু হিসেবে কাজ করছে। আজকাল মানুষ আর আগের মতো ভয় পায় না, এখন তারা আস্থা ফিরে পেয়েছে, পুলিশকে নিজের বন্ধু এবং আস্থার জায়গা হিসেবে সাধারণ মানুষ বিবেচনা করে। মানুষের এই বিশ্বাস এবং আস্থাটা অর্জন করতে হবে।
শেখ হাসিনা বলেন, এই যে আগুন দেওয়া, পুলিশকে মারা, পুলিশকে আগুনের মধ্যে ফেলে দেওয়া, এই যে ঘটনাগুলো ঘটেছে, এ মামলাগুলো কিন্তু দীর্ঘসূত্রিতা, মামলাগুলো যথাযথভাবে চলে না। আমি মনে করি, যারা এ ধরনের অপরাধ করে তাদের মামলা এবং সাজাটা যদি দ্রুত হয়ে যায় তাহলে ভবিষ্যতে আর সাহস পাবে না।
তিনি বলেন, আগামীতে যেন কেউ আর এভাবে পুলিশের ওপর আক্রমণ করতে না পারে, সেটা ওই রাজনীতির নামে হোক, সন্ত্রাসের নামেই হোক। কেউ আইন নিজের হাতে তুলে নেবে না আর আইনশৃঙ্খলা অবনতি ঘটাতে পারবে না। মানুষের জানমালের ক্ষতি করতে পারবে না, জাতীয় সম্পদের ক্ষতি করতে পারবে না। এ বিষয়ে পুলিশকে অবিচল থাকতে হবে। যখনই যেটা দরকার যথাযথ ভূমিকা পালন করতে হবে।
দেশের অগ্রগতির কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, একটানা ১৫ বছর ক্ষমতায় থেকে আজকে আন্তর্জাতিকভাবে বাংলাদেশকে কেউ আর ওই তুচ্ছ তাচ্ছিল্যের চোখে দেখে না। বাংলাদেশ এখন বিশ্বে নিজের একটা স্থান করে নিতে পেরেছে। এখন সবাই বাংলাদেশকে উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে দেখে।
তিনি বলেন, এটাকে ধরে রেখে আমাদের সামনে আগাতে হবে। সেজন্য আমাদের যেকোনো কাজ বা প্রকল্প বাস্তবায়ন থেকে শুরু করে, মানুষের জানমালের নিরাপত্তা থেকে শুরু করে যেকোনো অপরাধ মোকাবিলা এবং সাজা নিশ্চিতে যথাযথ দায়িত্ব পালন করা সবার কর্তব্য। কাজেই সেভাবে আপনারা সবাই কাজ করে যাবেন।
টানা চারবারের প্রধানমন্ত্রী বলেন, একমাত্র আওয়ামী লীগ সরকার আসার পর আমরা জনগণের ক্ষমতা জনগণের হাতে ফিরিয়ে দিয়েছি। কাজেই জনগণের শান্তি-শৃঙ্খলা, জনগণের আর্থ সামাজিক উন্নয়ন জনগণের ভাগ্য পরিবর্তন এটাই আমাদের লক্ষ্য। সেই লক্ষ্য নিয়েই আমরা কাজ করে যাই। সেই লক্ষ্য নিয়েই আমরা নির্বাচনে ইশতেহার ঘোষণা দেই এবং প্রতি মেয়াদে নির্বাচনে ইশতেহার বাস্তবায়নে আমরা যথাযথ ব্যবস্থা নেই।
তিনি বলেন, যেহেতু ২০০৯ সালে সরকার গঠনের পর থেকে আমরা এ পর্যন্ত সরকারে আছি। একটা স্থিতিশীল পরিবেশ গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত আছে বলেই আজকের বাংলাদেশ বদলে যাওয়া বাংলাদেশ। আজকের বাংলাদেশ আমরা এখন স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছি।
ফিলিস্তিনের ওপর ইসরাইলি হামলার নিন্দা জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ফিলিস্তিনের ওপর যে হামলা এবং গণহত্যা চলছে বাংলাদেশের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে। আমি প্রতিটি জায়গায় এর প্রতিবাদ করেছি। এভাবে ফিলিস্তিনি শিশু নারীদের ওপর অকথ্য অত্যাচার এবং গণহত্যা, শুধু তাই না, তাদের খাদ্য, চিকিৎসা, হাসপাতাল সবকিছুর ওপর আক্রমণ করে। এমনকি যেখানে ত্রাণ বিতরণ করা হয় সেখানেও আক্রমণ করা হচ্ছে। এর থেকে জঘন্য ও মানবতাবিরোধী কাজ আর হতে পারে না। এর প্রভাবটা সারা বিশ্বের অর্থনীতিতে পড়ছে। আমাদের ওপরেও সেই ধাক্কাটা আসছে। যদিও আমাদের চেষ্টা হচ্ছে কিভাবে আমরা এটা মোকাবিলা করব।