বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত, হাইকমিশনার ও চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স এবং আন্তর্জাতিক সংস্থার মিশন প্রধানরা কক্সবাজারের রামুতে অবস্থিত ঐতিহাসিক রাংকুট বনাশ্রম বৌদ্ধ তীর্থস্থান পরিদর্শন করেছেন। এ সময় দুই হাজার ৩০০ বছরের পুরোনো মহামতি বুদ্ধের স্মৃতি বিজড়িত স্থান দেখে তারা মুগ্ধ হন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে দুই দিনব্যাপী অ্যাম্বাসেডরস আউটরিচ প্রোগ্রামের শেষ দিন বুধবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) রাষ্ট্রদূতেরা কক্সবাজারের বিভিন্ন স্থান পরিদর্শন করেন। এর আগে মঙ্গলবার তারা চট্টগ্রামের নেভাল একাডেমি এবং কর্ণফুলী টানেল পরিদর্শন শেষে বিশেষ ট্রেনে চড়ে কক্সবাজার পৌঁছান।
বুধবার সকালে রাংকুট বনাশ্রম বৌদ্ধ তীর্থস্থান গেলে অতিথিদের স্বাগত জানান বিহারাধ্যক্ষ কে শ্রী জ্যোতিসেন মহাথেরো। তিনি কূটনীতিকদের সামনে বিহারের ঐতিহাসিক বিবরণ উপস্থাপন করেন। বিহারাধ্যক্ষ এ অঞ্চলের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বহুকালের ঐতিহ্য বিদেশের মিশন প্রধানদের জানান।
পরিদর্শনকালে মিশন প্রধানরা বুদ্ধাস্থি সম্বলিত ঋদ্ধিময় বুদ্ধবিম্ব পরিদর্শন এবং সেখানে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। তারা বিহারের বিভিন্ন স্থানে সংরক্ষিত বৌদ্ধ পুরাকীর্তিগুলো ঘুরে দেখেন। পরে অতিথি কূটনীতিকদের সম্মানে স্থানীয় শিশু-কিশোররা গান ও নৃত্য পরিবেশন করে। স্থানীয় পিঠা-পুলি আর ফলমূল দিয়ে কূটনীতিকদের আপ্যায়ন করা হয়।
কক্সবাজার সফরের অনুভূতি প্রকাশকালে বিভিন্ন মিশনের প্রধানরা বাংলাদেশের পর্যটন খাতের অপার সম্ভাবনার কথা জানান। অ্যাম্বাসেডরস আউটরিচ প্রোগ্রাম বাংলাদেশের পর্যটনের সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে তারা মত দেন। বাংলাদেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি সারা বিশ্বের জন্য একটি অসাধারণ নজির বলে তারা উল্লেখ করেন।
বিহারাধ্যক্ষ জ্যোতিসেন প্রোগ্রামটি আয়োজনের জন্য পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে ধন্যবাদ জানান। এ ধরনের কর্মসূচি বিদেশিদের কাছে বাংলাদেশ সম্পর্কে ধারণা আরও উঁচু করবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
পরে কূটনীতিকরা কক্সবাজারের লাবণী ট্যুরিস্ট মার্কেট পরিদর্শন করেন। তারা সেখানে বিভিন্ন হস্তশিল্পজাত পণ্যের দোকান ঘুরে দেখেন এবং স্যুভেনির কেনেন।
বিকেলে বাংলাদেশ বিমানের ফ্লাইটে কূটনীতিকরা ঢাকায় ফিরেন। অতিরিক্ত পররাষ্ট্র সচিব ড. নজরুল ইসলামসহ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
ইউরোপীয় ইউনিয়ন, রাশিয়া, চীন, কোরিয়া, ইতালি, ডেনমার্কসহ বিভিন্ন দেশ ও আন্তর্জাতিক সংস্থার ২৪ জন মিশন প্রধানসহ ৩৪ জন কূটনৈতিক সদস্য এ আউটরিচ কর্মসূচিতে অংশ নেন।